নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ৩০ মার্চ ২০২৫, ০৪:৩০ পিএম | আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৫, ০৪:৩৫ পিএম
টিএনজেড গ্রুপের তিনটি কারখানার প্রায় আড়াই হাজার শ্রমিক তাদের বকেয়া বেতন ১৭ কোটি টাকার মধ্যে ঈদের আগে ২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা পেয়ে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে।
তবে বাকি টাকা পরিশোধের দাবিতে ঈদের ছুটি শেষে আগামী ৭ এপ্রিল গাজীপুরে কারখানার সামনে সমাবেশের ঘোষণাও দিয়েছেন শ্রমিকরা।
রবিবার গ্রুপের অ্যাপারেল প্লাস কারখানার শ্রমিক নেতা শাহিন ইসলাম দেশকাল নিউজ ডটকমকে বলেন, “আমরা গত এক সপ্তাহ ধরে শ্রম ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। কিন্তু ঈদুল ফিতরের বিষয় মাথায় রেখে ও শ্রম সচিবের অনুরোধে গতকাল আমরা আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেই।”
আগের দিন শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান কারখানার যন্ত্রপাতি বিক্রি ও অন্যান্য খাত থেকে মিলিয়ে প্রায় তিন কোটি টাকা বকেয়া শোধের আশ্বাস দিয়েছিলেন। সেদিন শ্রমিকরা এই প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছিলেন।
শাহিন জানান, শ্রমিকদের মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবে ৯ হাজার ৪৭৫ টাকা করে আসতে শুরু করেছে।
“তাই আমরা ৮ এপ্রিল পর্যন্ত শ্রম ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি বিরত থাকছি। তবে সম্পূর্ণ বকেয়া বেতন-ভাতা ও বোনাসের দাবিতে আমরা আবার ৭ এপ্রিল গাজীপুর টিএনজেড কারখানার সামনে আমরা সকল শ্রমিকরা মিলে সমাবেশ করব।”
শ্রম সচিবের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আবার ৮ এপ্রিল বৈঠক এবং সেদিন থেকে ফের শ্রম ভবনের সামনে অবস্থানের ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি।
গত ২৪ মার্চ টিএনজেড গ্রুপের শ্রমিকরা বকেয়া বেতন ও বোনাসের দাবি নিয়ে গাজীপুর থেকে ঢাকায় এসে বিক্ষোভ দেখায়। তারা সেদিন সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নেয় কয়েক ঘণ্টা।
তারা জানান, জানান গত ২০ মার্চ তাদের বেতন বোনাস পরিশোধ করার কথা ছিল। কিন্তু এরপর থেকে কর্মকর্তারা অফিসেই আর যান না।
সেদিন সচিবালয়ের সামনে থেকে শ্রমিকরা অবস্থান নেন বিজয়নগরে শ্রম ভবনের সামনে।
বৃহস্পতিবার শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেন, কারখানার গাড়ি বিক্রি করে এই গ্রুপের শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ করা হয়েছে।
কারখানা মালিক অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে আছেন জানিয়ে দেখভালের জন্য কর্মকর্তাদেরকে নির্দেশ দেওয়ার কথাও জানান উপদেষ্টা।
তবে সেদিনই টিএনজেড গ্রুপের শ্রমিক সাদিকুর রহমান এই তথ্য নাকচ করেন।
পরে জানা যায়, গ্রুপের তিনটি কারখানার মধ্যে একটি কারখানার শ্রমিকদের জানুয়ারি মাসের আংশিক বকেয়া পরিশোধ করা হয়েছে।
মোট বকেয়া ১৭ কোটি টাকা হলেও অল্পই পরিশোধ করা হয়।
শুক্রবার শ্রমিকরা ‘ভুখা মিছিলে’ প্রতিবাদ জানায়। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় অভিমুখে মিছিলের ঘোষণাও দেওয়া হয়। এরপর শনিবার তাদের অবস্থান ঘিরে পুলিশের পাশাপাশি সেনা সদস্যদেরও মোতায়েন করা হয়।