‘বিষাক্ত’ বন্ধু থেকে দূরে থাকুন

বিশ্বের সুন্দরতম শব্দগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘বন্ধুত্ব’। বন্ধুত্ব মানে বাঁধভাঙা আনন্দ, উচ্ছ্বাস আর ভালো লাগা। বন্ধুত্ব মানে সমর্থন, কাঁধের ওপর আশ্বাসের হাত। তাই জীবনে চলার পথে বন্ধুর প্রয়োজন সবসময়। তবে সব বন্ধুই সত্যিকারের বন্ধু নয়; কিছু আছে ‘বিষাক্ত’ বন্ধু। জীবনে এসব বন্ধু থাকলে শান্তিটাই নষ্ট। অস্ট্রেলিয়ার ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট গিলিয়ান নিডেলম্যানের মতে, তিক্ত সম্পর্কের বন্ধুত্বে ব্যক্তির মধ্যে সৃষ্টি হয় হীনম্মন্যতা। নিজের সামর্থ্য নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়ে ব্যক্তি। এমনকি ব্যক্তি সীমাহীন হতাশায় নিমজ্জিত হতে পারে। তাই ‘বিষাক্ত’ বন্ধুর সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা জরুরি। যেভাবে চিনবেন ‘বিষাক্ত’ বন্ধু...

কথা দিয়ে কথা না রাখা: কেউ কোনো প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা রক্ষা না করলে এবং তা নিয়ে তার বিন্দুমাত্র অপরাধবোধ কাজ না করলে ধরে নিতে হবে সে আপনাকে অসম্মান করছে। শুধু অসম্মানই করছে না, বরং এটা প্রতিষ্ঠিত করতে চাচ্ছে যে আপনার কোনো মূল্যই তার কাছে নেই! সুতরাং নিজের ভালো চাইলে এসব বন্ধুকে ছাড়ুন।

নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত থাকে: বন্ধুদের মধ্যেই এমন একাধিক ব্যক্তিকে খুঁজে পাওয়া যাবে, যারা নিজের পছন্দ অন্যের ওপর চাপিয়ে দিতে ওস্তাদ। সেটা ভ্রমণের জায়গা বাছাইয়ের ক্ষেত্রেই হোক কিংবা রেস্টুরেন্টে খাবার নির্বাচন। এসব বন্ধু এমনই আত্মমগ্ন থাকে যে অন্যের সুবিধা-অসুবিধাকে বিবেচনায় রাখতে চায় না। এসব বন্ধু থেকে সাবধান।

যারা বন্ধুত্বের মাঝে প্রতিযোগিতা খোঁজে: জীবনে এমন কিছু বন্ধুকে পাওয়া যায়, যারা সব ক্ষেত্রেই বন্ধুর সঙ্গে অসুস্থ প্রতিযোগিতা করতে চাইবে। এই বন্ধুদের শুরুতেই চিনতে না পারলে তারা শিক্ষাজীবন, কর্মজীবন ছাপিয়ে পারিবারিক জীবনেও পিছু নেবে। মনে রাখবেন, সত্যিকার বন্ধু কখনোই বন্ধুর সাফল্যে ঈর্ষান্বিত হবে না।

অপমান করে কথা বলে: বন্ধুদের মধ্যে এমন কিছু ব্যক্তি আছে যারা সবসময় অন্যদের অপমান করতে ভালোবাসে। অন্যদের অপমান করে তাদের অদ্ভুত একটা আনন্দ হয়। শুধু তাই নয়, সকলের সামনে বন্ধুকে ছোট করাটাও তাদের উদ্দেশ্য হয়ে থাকে। তাই নিজের ভালো চাইলে এসব বন্ধুকে পরিত্যাগ করতে হবে।

স্বার্থ উদ্ধারই যার মূল উদ্দেশ্য: সবাই যে বন্ধুত্ব করার জন্যই বন্ধু হয়, এমন কিন্তু নয়। এমন অনেককে পাওয়া যাবে যারা শুধু স্বার্থ উদ্ধারের জন্যই বন্ধু হতে আসে। তারা বিভিন্ন অজুহাতে সব রকম খরচের বোঝা বন্ধুর ওপরই চাপাতে চেষ্টা করে। এমন অনেক স্বার্থ উদ্ধারই তাদের মূল উদ্দেশ্য হয়ে থাকে। এদের থেকে দূরে রাখতে হবে।

সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে চায়: বন্ধুরূপী কেউ কেউ বুদ্ধি ও জ্ঞানের দিক থেকে নিজেকে অনেক বড় মনে করে। এরা সব সময় বন্ধুর চিন্তাধারা, সিদ্ধান্ত এমনকি কাজকর্মও নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। এ ধরনের বন্ধুকে এড়িয়ে চলুন।

সবসময় হতাশায় ভোগে: বন্ধুদের মাঝে যদি এমন কেউ থাকে যে নিজের ভাগ্য বদলানোর কোনো চেষ্টা না করে সবসময় হতাশায় ভোগেন তবে তাকে এড়িয়ে চলুন। কারণ এ ধরনের বন্ধুদের মধ্যে থাকলে নিজের ভেতরেও নেতিবাচকতা চলে আসতে পারে।

পরনিন্দা-পরচর্চাকারী: বন্ধুদের মধ্যে কেউ কেউ সারাক্ষণ পরনিন্দা-পরচর্চা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। এরা বন্ধুর পেছনেও কুৎসা রটাতে দ্বিধা করবে না। তাই এদের থেকে দূরে থাকতে হবে।

গায়ে পড়ে বন্ধুত্ব করে যারা: কেউ কেউ বন্ধু না হলেও কথাবার্তা, আচরণে নিজে যেচে পড়ে বন্ধু হিসেবে উপস্থাপন করছে। দেখা যাবে, সে কোনো না কোনো স্বার্থ উদ্ধারের জন্যই এমনটা করছে। তাই এ ধরনের ব্যক্তিকে সে সুযোগ দেওয়া উচিত হবে না।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //