তারাবির নামাজের দোয়া

আরবি ‘তারাবিহ’ শব্দটির মূল ধাতু ‘রাহাতুন’ অর্থ আরাম বা বিশ্রাম করা। এশার নামাজের চার রাকাত ফরজ ও দুই রাকাত সুন্নতের পর এবং বিতর নামাজের আগে দুই রাকাত করে ১০ সালামে যে ২০ রাকাত নামাজ আদায় করা হয়, একে ‘সালাতুত তারাবিহ’ বা তারাবি নামাজ বলা হয়।

রমজান মাসের জন্য নির্দিষ্ট তারাবির নামাজ জামাতে পড়া ও সম্পূর্ণ কোরআন শরিফ একবার খতম করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা। রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজে তারাবির নামাজ পড়েছেন এবং সাহাবায়ে কিরামকে পড়ার জন্য আদেশ দিয়েছেন। তারাবি নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করা ও কোরআন শরিফ খতম করা অধিক সওয়াবের কাজ।

রাসুলুল্লাহ (সা.) তারাবিহ নামাজের জন্য রাতের কোনো বিশেষ সময়কে নির্দিষ্ট করে দেননি। তবে তারাবির নামাজ অবশ্যই এশার নামাজের পর থেকে সুবহে সাদিকের পূর্ববর্তী সময়ের মধ্যে আদায় করতে হবে।

তারাবির নামাজের ফজিলত

রাসূল (সাঃ) বলেন, (হে আমার উম্মতগন), তোমরা জেনে রেখ আল্লাহ তোমাদের উপর রমজানের রোজা ফরজ করেছেন এবং উহার রাত্রে তারাবির নামাজ সুন্নাত করেছেন। অতএব, যে ব্যক্তি খালেস নিয়তে ঈমানের সাথে কেবল সোয়াবের আশায় এ মাসে দিনের বেলায় রীতিমত রোজা রাখবে এবং রাত্রিতে রীতিমত তারাবির নামাজ পড়বে তার বিগত সব সগীরা গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে।

অতএব, এ পবিত্র মাসে অধিক নেকী অর্জন করে লওয়া উচিৎ। এ মাসের একটি ফরজ অন্য মাসের ৭০টি ফরজের সমান নেকী পাওয়া যায়।

তারাবির নামাজের চার রাকাত পরপর দোয়া:

উচ্চারণ: সুব্হানাযিল মুলকি ওয়াল মালাকুতি সুবহানাযিল ইযযাতি ওয়াল আযমাতি ওয়াল হাইবাতি ওয়াল কুদরাতি ওয়াল কিবরিয়ায়ি ওয়াল জাবারূত। সুব্হানাল মালিকিল হায়্যিল্লাযি লা-ইয়ানামু ওয়ালা ইয়ামুতু আবাদান আবাদা। সুব্বুহুন কুদ্দুছুন রাব্বুনা ওয়া রাব্বুল মালাইকাতি ওয়ার রূহ।

তারাবির নামাজের মোনাজাত

তারাবির নামাজে চার রাকাআ’ত পর পর মোনাজাত করা যায়, আবার একেবারে নামাজ শেষ করেও একবারেই মোনাজাত করা যায়। তারাবির নামাজের জন্য নির্দিষ্ট কোনো দোয়া নেই। আমরা সব সময় নামাজের ক্ষেত্রে যেসব দোয়া পড়ে থাকি এগুলো পড়লেই হয়। তারপরও বহু পূর্বে কোনো বুজর্গ বর্তমানে তারাবি হতে পঠিত দোয়ার প্রচলন করেছেন; যার অর্থ ভাল এবং উত্তম বিধায় আমরা তারাবির নামাজে এই দোয়াটি পড়ে থাকি। দোয়াটি এই-

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকা জান্নাতা ওয়া নাউ’জুবিকা মিনান্নারী, ইয়া খালিকাল জান্নাতা ওয়ান্নারী, বিরাহমাতিকা ইয়া আজিজু, ইয়া গাফ্ফারু, ইয়া কারীমু, ইয়া সাত্তারু, ইয়া রাহীমু, ইয়া জাব্বারু, ইয়া খালিকু, ইয়া বার্রু। আল্লাহুম্মা আর্যিনা মিনান্নার; ইয়া মুযিরু, ইয়া মুযিরু, ইয়া মুযির। বিরাহমাতিকা ইয়া আর হামার রাহিমিন।

তারাবির নামাজে দ্রুত ক্বিরাত পড়া প্রসঙ্গে

তারাবির নামাজে ক্বিরাআত দ্রুত পড়তে হবে- এমন কোন বিধান নেই। অন্যান্য নামাজের ন্যায় তারাবির নামাজেও মাদ, গুন্নাহ, মাখরাজ ঠিক রেখে তারতীলের সাথে ক্বিরআত পড়তে হবে। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়- আমাদের দেশে অধিকাংশ মসজিদে এই নিয়ম মেনে চলা হয়না। হাফেজে কোরআনগণ এমনভাবে তেলাওয়াত করেন যে, কোরআনের আয়াতসমুহ স্পষ্ট বোঝা যায় না।

এমনকি যে যত দ্রুত পড়তে পারে, তাকে তত কৃতিত্ব বা বাহবা দেওয়া হয়। এটি এক ধরনের কোরআন অবমাননা বৈ কিছু নয়। আমাদের আলেম সমাজের একটি বড় অংশকে এ বিষয়ে উদাসীন মনে হয়।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //