যে নিয়ম মানলে গোপন পাপ থেকে মুক্তি মেলে

মহান আল্লাহ তায়ালা তার উত্তম নিয়ামতগুলো মানুষকে দান করেছে। অন্যান্য জীবের তুলনায় মানুষকে দিয়েছেন অধিক সুযোগ সুবিধা। মানুষের ভালো কাজে আল্লাহ তায়ালা রহমত দান করেন। পাপ কাজে শাস্তির বিধান দিয়েছেন। নিজের অজান্তেই মানুষ লিপ্ত হয় নানা গোপন পাপে। পাপ দুনিয়ার জীবনকে বরবাদ করে। পরকালেও পেতে হবে কঠিন শাস্তি। 

এ ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আমি আমার উম্মতের কতক দল সম্পর্কে অবশ্যই জানি, যারা কেয়ামতের দিন তিহামার শুভ্র পর্বতমালা সমতুল্য নেক আমল নিয়ে উপস্থিত হবে। কিন্তু মহামহিম আল্লাহ সেগুলোকে বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পরিণত করবেন।’ সাওবান (রা.) বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, তাদের পরিচয় পরিষ্কারভাবে আমাদের কাছে বর্ণনা করুন, যাতে অজ্ঞাতসারে আমরা তাদের অন্তর্ভুক্ত না হয়ে যাই।’ তিনি বললেন, ‘তারা তোমাদেরই ভ্রাতৃগোষ্ঠী এবং তোমাদের সম্প্র্দায়ভুক্ত। তারা রাতের বেলা তোমাদের মতোই ইবাদত করবে। কিন্তু তারা এমন লোক, যারা একান্ত গোপনে আল্লাহর হারামকৃত কর্মে লিপ্ত হবে’ (ইবনে মাজা: ২/১৪১৮)। সুতরাং এ থেকে মুক্ত থাকা জরুরি। কিছু নিয়ম মেনে চললে রক্ষা পাওয়া সম্ভব পুণ্য-বিনাশী পাপ থেকে।

এক. সর্বদা এ কথা অন্তরে জাগ্রত রাখা যে, আল্লাহ আমাকে পর্যবেক্ষণ করছেন। তিনি আমাকে সর্বদাই দেখছেন। আমি যা করি, আমার প্রতিটি মুহূর্ত আল্লাহর সামনে। এ ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করা। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের ওপর পর্যবেক্ষক।’ (সুরা নিসা: ১)

দুই. অন্তরের সঙ্গে মুজাহাদা করা, তার কুমন্ত্রণা দূর করা এবং আল্লাহর আনুগত্যের মাধ্যমে অন্তরকে পরিশুদ্ধ করার চেষ্টা করা। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘শপথ প্রাণের এবং যিনি তা সুবিন্যস্ত করেছেন, তাঁর। অতঃপর তাকে অসৎকর্ম ও সৎকর্মের জ্ঞান দান করেছেন। যে নিজেকে পরিশুদ্ধ করে, সে-ই সফলকাম হয়। আর যে নিজেকে কলুষিত করে, সে ব্যর্থ মনোরথ হয়।’ (সুরা শামস: ৭-১০)

তিন. যে রাস্তাগুলো গুনাহের দিকে ধাবিত করে, সে রাস্তাগুলো বন্ধ করে দেওয়া। তা এভাবে যে, একাকী না থাকা; বরং সবসময় অন্যদের মাঝে থাকা। পরিবার-পরিজন, স্ত্রী ও সন্তানদের মাঝে থাকা। যদি স্ত্রী থেকে দূরে থাকে তাহলে স্ত্রীকে সঙ্গে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা। আপনার স্ত্রীর মাধ্যমে নিজেকে পবিত্র রাখুন এবং আপনার মাধ্যমে আপনার স্ত্রীকেও পবিত্র রাখুন। আর যদি আপনি আপনার পরিবারের কাছেই থাকেন এবং তাদের সঙ্গে বসবাস করেন তাহলে আপনি তাদের থেকে দূরে যাবেন না।

আপনি আপনার স্ত্রীকে ভালোবাসুন। তার মাধ্যমে আপনার প্রয়োজন পূরণ করুন। যখনই আপনার অন্তরে দেখার খায়েশ জাগবে কিংবা কোনো কিছু আপনার নজরে পড়ে যাবে, তখনই শয়তানকে হারামের দিকে আপনাকে নিয়ে যেতে দেবেন না। বরং আপনি দেরি না করে হালালকে গ্রহণ করুন।

চার. সদাসর্বদা দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণকর কোনো কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখা। কারণ অবসর সময় মানুষের নষ্টের কারণ। এমন নষ্ট, যার কোনো সীমা নেই।

পাঁচ. বেশি বেশি আল্লাহর কাছে দোয়া করা, কান্নাকাটি করা। যেন আল্লাহ নাফরমানি ও সব গুনাহ থেকে হেফাজত করেন। শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে হেফাজত করেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আর আমার বান্দারা যখন তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে আমার ব্যাপারে, বস্তুত আমি তো রয়েছি সন্নিকটেই। যারা প্রার্থনা করে, তাদের প্রার্থনা কবুল করি, যখন তারা আমার কাছে প্রার্থনা করে। কাজেই আমার হুকুম মান্য করা এবং আমার প্রতি নিঃসংশয়ে বিশ্বাস করা তাদের একান্ত কর্তব্য, যাতে তারা সৎপথে আসতে পারে।’ (সুরা বাকারা: ১৮৬)। আল্লাহ সবাইকে বোঝার ও মানার তওফিক দিন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //