যাকাত সম্পর্কে হাদীসে যা বলা হয়েছে

যাকাত বলতে ধন-সম্পদের একটি নির্দিষ্ট অংশ দান করাকে বোঝায়। পারিভাষিক অর্থে যাকাত হলো, নিসাবধারীর ধন-মাল, জমির ফসল ও খনিজ সম্পদের ওপর ইসলামি শরিয়ত নির্ধারিত অংশ নির্দিষ্ট খাতে ব্যয় করা।

প্রত্যেক সমর্থবান মুসলমানদের ওপর যাকাত ফরজ। ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের অন্যতম স্তম্ভ যাকাত দেওয়া। যাকাত দিলে ধন সম্পদ পরিশুদ্ধ হয়, অসহায়দের মাঝে স্বচ্ছলতা ফেরানো যায়, অন্যের পাশে দাঁড়ানো যায়।

আল্লাহ তায়ালা যাকাত সঠিকভাবে আদায়ে বিশেষ পুরস্কার ঘোষণা করেছেন। এ সর্ম্পকে বর্ণিত হয়েছে, ‘এবং তোমরা আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির জন্য জাকাত আদায় করো। অত:পর তিনি তা দ্বীগুণ করে দেবেন। (সুরা: আর-রুম,আয়াত: ৩৯)

অন্যত্র বর্ণিত হয়েছে, ‘মুত্তাকিরা জান্নাতে ফোয়ারার নিকটে থাকবে। তারা গ্রহণ করবে, যা তাদের পালনকর্তা তাদেরকে দেবেন। নিশ্চয় ইতিপূর্বে তারা ছিল সত্কর্মপরায়ণ, তারা রাত্রির সামান্য অংশেই নিদ্রা যেত, রাতের শেষ প্রহরে তারা ক্ষমা প্রার্থনা করত এবং তাদের ধনসম্পদে ছিল প্রার্থী ও বঞ্চিতের হক বা ন্যায্য অধিকার।’ (সুরা-৫১ জারিয়াত, আয়াত: ১৫-১৯)

যাকাত আদায়ে গরিমসি করলে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে। বর্ণিত হয়েছে, ‘আর যারা সোনা ও রূপা পুঞ্জীভূত করে রাখে, আর তা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে না, তুমি তাদের বেদনাদায়ক আজাবের সুসংবাদ দাও। যেদিন জাহান্নামের আগুনে তা গরম করা হবে, অতঃপর তা দ্বারা তাদের কপালে, পার্শ্বে এবং পিঠে সেঁক দেওয়া হবে। (আর বলা হবে) ‘এটা তা-ই যা তোমরা নিজদের জন্য জমা করে রেখেছিলে। সুতরাং তোমরা যা জমা করেছিলে তার স্বাদ উপভোগ কর।’ -(সূরা তাওবাহ, আয়াত: ৩৫, ৩৬)

আল্লাহ তায়ালা যাকাত ব্যয়ের খাতগুলো সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন। গরিব-দুঃখীর স্বার্থের প্রতি খেয়াল রেখেই যাকাতের খাতগুলো নির্ধারণ করা হয়েছে।

যাকাতের সম্পদ ব্যয়ের খাত মোট আটটি। সেগুলো হল-

১. গরিব-ফকির— যাদের নেসাব পরিমাণ সম্পদ নেই। ২. মিসকিন— যাদের কোনো সম্পদ নেই। ৩. ইসলামি রাষ্ট্রের সরকারকর্তৃক যাকাত, সদকা, ওশর ইত্যাদি উসুল করার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি। ৪. ইসলামের দিকে ধাবিত করার জন্য যাকাত দেওয়া। তবে এ খাতটি বর্তমানে আর প্রযোজ্য নয়। ৫. নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদের বিনিময়ে স্বাধীন হওয়ার চুক্তিতে আবদ্ধ দাস-দাসী। ৬. পর্যাপ্ত পরিমাণ মাল না থাকার দরুণ ঋণ পরিশোধে অক্ষম ঋণী ব্যক্তি। ৭. যোদ্ধা, যারা যুদ্ধের অস্ত্র যোগাতে অক্ষম অথবা টাকার কারণে হজের কাজ পূর্ণ করতে অক্ষম বা ইলম হাসিল ও দ্বীনি দাওয়াতের কাজে নিয়োজিত গরিব মানুষ। ৮. সফর অবস্থায় অভাবগ্রস্ত মানুষ।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //