কোন নামাযের পর কোন সূরা পড়তে হয়

মহান রাব্বুল আলামিন মানুষকে সৃষ্টি করেছেন তার ইবাদতের জন্য। ইবাদত করলে আল্লাহর সন্তুষ্টি আদায় করা যায়। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা ফরজ। এই ফরজ থেকে নিস্তার পাওয়ার কোনও পথ নেই। মহান আল্লাহ বিচার দিবসে সবার কাছ থেকে এই নামাজের হিসাব নেবেন। প্রতিদিন ফরজ ইবাদত ছাড়াও অনেক সুন্নত, নফল ও মুস্তাহাব ইবাদত আছে যা মানুষের আমলনামাকে সমৃ্দ্ধ করে এবং মানুষকে তার রবের নিকটবর্তী করে তোলে। 

প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর নির্দিষ্ট কিছু সুরা তেলাওয়াত করা এমন ইবাদতের অন্তর্ভূক্ত। এসব তেলাওয়াতের বিশেষ ফজিলত হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, এখানে নামাজের পরের বিশেষ সুরাগুলোর বর্ণনা তুলে ধরা হলো- 

ফজরের নামাজের পর সুরা ইয়াসিন

আতা বিন আবি রাবাহ (রা.) বর্ণনা করেন, আমি শুনেছি যে- রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি দিনের বেলায় সুরা ইয়াসিন তেলাওয়াত করবে, তার সব হাজত (প্রয়োজন) পূর্ণ করা হবে।’ (ফাজায়েলে আমাল: ০১/৫২)

জোহরের নামাজের পর সুরা ফাতাহ

বহু মুসলিম মনীষী জোহরের পর সুরা ফাতহ তেলাওয়াত করতেন। সুরা ফাতহের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) হজরত ওমর (রা.)-কে বলেন, ‘আজ রাতে আমার ওপর এমন একটি সুরা নাজিল হয়েছে, যা আমার কাছে সূর্যালোকিত সব স্থান থেকে উত্তম। এরপর তিনি সুরা ফাতহের প্রথম আয়াত তেলাওয়াত করেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৪১৭৭)

আছরের নামাজের পর নাবা

আছরের নামাজের পরও নির্দিষ্ট কোনো সুরা তেলাওয়াতের কথা হাদিসে নেই। তবে সুরা নাবার ফজিলত সম্পর্কে একটি দুর্বল হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি সুরা নাবা তেলাওয়াত করবে আল্লাহতায়ালা তাকে কেয়ামতের দিন ঠাণ্ডা পানীয় দ্বারা তৃপ্ত করবেন।’ -তাফসিরে কাশশাফ: ৬/৩০৩

মাগরিবের নামাজের পর ওয়াকিয়া

মাগরিবের নামাজের পর বা রাতে সুরা ওয়াকিয়া তেলাওয়াত সম্পর্কে বিভিন্ন তাফসিরের কিতাবে অন্তিম রোগশয্যায় হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)-এর কথোপকথন এসেছে। হজরত উসমান (রা.) বলেন, আমি হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি প্রতি রাতে সুরা ওয়াকিয়া তেলাওয়াত করবে, সে কখনও উপবাস থাকবে না।’ -তাফসিরে মাআরেফুল কোরআন: ৮/১০৬

এশার নামাজের পর মুলক

এশার নামাজের পর সুরা মুলক তেলাওয়াত সম্পর্কে হাদিস শরিফে এসেছে, হজরত জাবের (রা.) বলেন, ‘হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) সুরা সাজদাহ ও সুরা মুলক তেলাওয়াত করা ছাড়া ঘুমাতেন না।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ২৮৯২)

হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) আরও বলেন, ‘কোরআনে কারিমে এমন একটি সুরা আছে, যার মধ্যে ৩০ আয়াত আছে। আয়াতগুলো পাঠকারীর জন্য সুপারিশ করবে এবং তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে। আর সেটা হলো- ‘তাবারাকাল্লাজি বিয়াদিহিল মুলকু’ (সুরা মুলক)।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ২৮৯১)

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //