রুশোর হাত ধরে ফিরে এসেছেন আইনস্টাইন!

মানুষ ভবিষ্যৎ দেখতে পায় না। তবে কল্পলোকের চোখে সেই পথকে বিনির্মাণ করে। যদিও কল্পনা আর বিজ্ঞান এক নয়। তবে পরীক্ষার কষ্টিপাথরে তত্ত্ব যাচাই বিজ্ঞানের শিরোধার্য নিয়ম। পৃথিবীর মানুষ যাদের গুণমুগ্ধ, সেই নিউটন কিংবা আইনস্টাইনের মতো জগদ্বিখ্যাতদেরও দিতে হয়েছে এ পরীক্ষা। আলবার্ট আইনস্টাইন হয়তো এ জন্যই বলেছিলেন- ‘সাফল্য হলো অগ্রগতিতে ব্যর্থতা’।

বিশ্ব, সময় ও স্থান সম্পর্কে মানুষের হাজার বছরের ধারণা যিনি পাল্টে দিয়েছেন; সেই বিজ্ঞানীরও ছিল ব্যর্থতা। বেশ কয়েকটি বিষয়ে ডাব্বাও মেরেছিলেন কিশোর বয়সের এক পরীক্ষায়। তবে বরাবরই ছিলেন গণিতের জাহাজ। সমাধান করেছেন অসংখ্য জটিল গাণিতিক সমস্যা। আবিষ্কার করেছেন আপেক্ষিকতার তত্ত্ব এবং ভর-শক্তি সমতুল্যতার সূত্র। সূর্য্যরে আলো যেভাবে পৃথিবীতে আসে, নিউটনের দেওয়া সেই বক্রপথের মানকেও করেছেন ভুল প্রমাণ। তবে গণিতের এই জাদুকর সমাধান করে যেতে পারেননি ‘কোলাটস অনুমান’কে (collatz conjecture)। হার মেনেছেন বাঘা বাঘা সব গণিতবিদেরাও। লোথার কোলাটসের প্রস্তাবিত এই অনুমানটি সম্পর্কে হাঙ্গেরীয় গণিতবিদ পল এর্ডশ তো বলেই দিয়েছেন- ‘এ ধরনের সমস্যার জন্য গণিত এখনো প্রস্তুত হয়নি!’ সেই চ্যালেঞ্জ দিয়ে তিনি পুরস্কারও পর্যন্ত ঘোষণা করেছেন; কিন্তু কেউ কি কখনো ভেবেছেন, গণিতের এই জটিল সমস্যা এসে নতি স্বীকার করবে কোনো এক বাঙালি কিশোরের কাছে! দীর্ঘ ৮৬ বছর ধরে অমীমাংসিত সেই গাণিতিক সমস্যার সমধানটি করেছেন আমাদের মাহের আলী রুশো। বছর চৌদ্দের ওই কিশোরকে তাই ক্ষুদে আইনস্টাইন বলে সম্বোধন করছেন অনেক বিজ্ঞানপ্রেমী। 

পড়াশোনা, গবেষণা আর ভিডিও গেম তৈরি নিয়েই রুশোর পৃথিবী। নিজের পড়াশোনার ঘরটাকেই আস্ত একটা গবেষণাগার বানিয়ে নিয়েছে ক্ষুদে এই বিজ্ঞানী। ১০ বছর বয়সে, যখন সে গ্রেড ফাইভের ছাত্র- ইউটিউবে ‘নাক্ষত্রিক স্থান এবং জ্যোতি-পদার্থবিদ্যা’ শিরোনামে একটি ভিডিও তাকে দারুণভাবে অনুপ্রাণিত করে, আগ্রহ জাগায় বিজ্ঞান নিয়ে। তখন থেকেই জ্যোতির্বিজ্ঞানী হয়ে ওঠার স্বপ্ন দেখা শুরু করে। মাত্র ১১ বছর বয়সেই রপ্ত করে ফেলে ক্যালকুলাস এবং জ্যামিতিক বিভিন্ন সমাধান। বছর না ঘুরতেই হাত বাড়ায় কলেজপর্যায়ের গণিত ও পদার্থবিজ্ঞানে। বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের অঙ্ক কিংবা বিজ্ঞানের জটিল সমস্যার সমাধান তার কাছে এখন যেন ডাল-ভাত। দিনে দিনে বাড়ছে রুশোর গবেষণার সংখ্যা। জয় করেছে বহু অ্যাওয়ার্ড। বিভিন্ন ইভেন্টে অংশ নিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছে মণিপুর হাই স্কুলের নবম গ্রেডের এই ছাত্র। 

নওগাঁর ছেলে রুশোর জ্ঞানচর্চার নতুন দ্বার উন্মুক্ত হয় করোনাকালীন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পুরো সময়টাকে জ্ঞান অন্বেষণেই কাজে লাগায় এই ক্ষুদে জিনিয়াস। ঘরে বসেই অনলাইনে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত, ক্যালকুলাস, ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি; এমনকি তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ে অসংখ্য কোর্সে অংশ নেয়। এরই মধ্যে ‘সেন্ট জোসেফ ন্যাশনাল পাই অলিম্পিয়াড’-এর খোঁজ পায় সে। সেই প্রতিযোগিতায় নাম লিখিয়ে সবাইকে অবাক করে চ্যাম্পিয়ন হয়ে যায়। তাতে আরো কয়েকগুণ বেড়ে যায় তার মনোবল, সাথে জ্ঞানপিপাসা। অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি, হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব এডিনবার্গসহ বিশ্বের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের ৫০টিরও বেশি কোর্স সম্পন্ন করে। 

রুশোর বিজ্ঞানচর্চায় চিকিৎসক বাবা-মায়েরও উৎসাহের কমতি নেই। তবে তার অনলাইন আসক্তি দেখে শঙ্কায় পড়ে যান মা ডা. রুমা আক্তার। প্রসঙ্গ টেনে বাবা অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমি মাঝে-মধ্যেই দেখতাম রুশো চুপিচুপি মোবাইলে ভিডিও দেখছে। ওর মা খুব রাগ করতো- ও কেন এগুলো ধরছে, পরে খেয়াল করে দেখলাম, ও তো খারাপ কিছুই দেখছে না, যা দেখছে সবই সায়েন্স রিলেটেড- ম্যাথ, ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, বায়োলোজি এসব। তবে ফিজিক্সের প্রতি ওর আগ্রহটা সবচেয়ে বেশি। আমি দেখতাম যে সে খুব আপার লেভেলের ভিডিও দেখতো, যেগুলো কলেজ বা ভার্সিটি লেভেলের লেকচার। একদিন তাকে প্রশ্ন করলাম- আচ্ছা তুমি যে এসব দেখছো, তা কি বোঝো? তোমার তো এখনো ফিজিক্স শুরুই হয়নি। ছোট্ট রুশোর সহজ স্বীকারোক্তি- না বাবা আমি এগুলো বুঝি। একজন সায়েন্সের স্টুডেন্ট হিসেবে আমিও পরখ করে দেখলাম, আসলেই তাই, আমর ছেলে ফিজিক্সকে ভালোভাবেই আয়ত্ত করে নিয়েছে। আমি তখন ওর মাকে বোঝালাম- আমাদের ওকে সাপোর্ট দেওয়া উচিত। এভাবেই শুরু। তারপর দুই ঘণ্টা করে ভিডিও দেখতো। আর বাকি সময় স্কুলের পড়াসহ অন্যান্য কাজ করত। এর মধ্যে আমাদের না জানিয়েই সেন্ট জোসেফ ন্যাশনাল পাই অলিম্পিয়াডে অংশ নেয় এবং ফার্স্ট হয়। আমরা তো অবাক, নটর ডেমসহ সেরা কলেজগুলোর শিক্ষার্থীদের পেছনে ফেলে একশ পার্সেন্ট স্কোর করে। অথচ রুশো তখন কেবল গ্রেড সেভেনের ছাত্র।’

পরবর্তীতে ‘বাংলাদেশ ম্যাথমেটিক্স অলিম্পিয়াড’, ‘বাংলাদেশ ফিজিক্স অলিম্পিয়াড’ ও ‘জামাল নাল কেমিস্ট্রি অলিম্পিয়াড’ চ্যাম্পিয়ন; ‘জামাল নাক্রল জ্যোতির্বিদ্যা উৎসব’-এর বিজয়ী এবং ‘ন্যাশনাল সাইবার অলিম্পিয়াড’, ‘বাংলাদেশ জ্যোতির্বিদ্যা অলিম্পিয়াড’সহ অসংখ্য প্রতিযোগিতায় আঞ্চলিকভাবে বিজয়ী হয়। এছাড়া ‘বাংলাদেশ আইকিউ অলিম্পিয়াড’-এ সে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে এবং ভারতের ‘সিপিএস অলিম্পিয়াড’-এ বাংলাদেশের হয়ে নেতৃত্ব দেয়। বাংলাদেশ বিজ্ঞান সংগঠন থেকে ‘গুগল-আইটি অলিম্পিয়াড’-এ চ্যাম্পিয়ন পদক পায় এবং ‘হিগসিনো বায়োলোজি অলিম্পিয়াড’-এরও বিজয়ী। তাছাড়া সেন্ট জোসেফ থেকে সুডোকু উৎসব, বাংলাদেশ সায়েন্স কংগ্রেসে সারাদেশের মধ্যে পদার্থবিদ্যায়, ‘নেট্রোফিল সাইন্স অলিম্পিয়াড অ্যাস্ট্রোনোমি’, বাংলাদশ রোবট নক-আউট রাউন্ডসহ অসংখ্য প্রতিযোগিতায় বিজয়ী এবং পরিচিতি লাভ করে। রুশোর সবচেয়ে কাছের বন্ধু তার মা ডা. রুমা আক্তার বলেন, ‘ওপেন কনটেস্ট অলিম্পিয়াডের বেশিরভাগেই রুশোকে প্রতিযোগিতা করতে হয়েছে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের স্কলারদের সাথে। আশ্চর্যজনকভাবে তাদের হারিয়ে সে প্রায় সব অলিম্পিয়াডেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।’

এখানেই ক্ষুদে বিজ্ঞানী রুশোর গল্পের শেষ নয়। দেশের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ‘অনলাইন ফিজিক্স অলিম্পিয়াড-২০২১’-এ তার দল বিজয়ী হয় এবং তার নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের একটি দল আন্তর্জাতিক ‘পারপল ম্যাথ কমেট মেট’ প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান দখল করে। ভারতে জ্যোতির্বিদ্যার সর্বোচ্চ আসর ‘আইওএসএ-২০২১’-এ একক প্রতিযোগিতায় এবং আন্তর্জাতিক আসরে ‘স্কুল কানেকশন ম্যাথ, সাইন্স অ্যান্ড আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স কনটেস্ট’-এ স্বর্ণ পদক পায়। ‘স্টেমকো ইন্টারন্যাশনাল ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, বায়োলোজি’ বিষয়ে ‘বেস্টি অ্যাওয়ার্ড’ পায় এবং সেরা মেধাতালিকায় থাকার গৌরব অর্জন করে। রুশো দেশভিত্তিক আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা ‘আউলপিয়া সাইন্স অ্যান্ড টেক কনটেস্ট’-এ একবার স্বর্ণ, পরপর দুবার রৌপ্য ও দু’বার ব্রোঞ্জ পদক পায় এবং ২০২২ সালের জুনে হতে যাওয়া গ্লোবাল চ্যালেঞ্জের জন্য যুক্তরাজ্য সফরের আমন্ত্রণপত্র পেয়েছে। সে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলিম্পিয়াড ‘জিনিয়াস সেরেব্রাম অলিম্পিয়াড’ থেকে একাধারে আর্ট, জেনারেল নলেজ ও সাইবারে জিনিয়াস পদক জয়ী।

সম্প্রতি হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির স্নাতকোত্তর স্টুডেন্টদের ‘ইন্টারন্যাশনাল লিডারশিপ এথিকস অ্যান্ড লাইফ স্কিল অলিম্পিয়াড’-এ শ্রেষ্ঠ পঞ্চাশের তালিকায় থাকার গৌরব অর্জন করেছে। শুধু তাই নয়, আইএমসির (ইন্টারন্যাশন্যাল ম্যাথ চ্যালেঞ্জ) এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, রুশোর গণিতের নম্বর একজন যুক্তরাজ্যের উচ্চশিক্ষার যে কোনো ছাত্রের চেয়ে অস্বাভাবিক রকম ভালো। নোবেলজয়ীদের প্রতিযোগিতা আইএমওসিতে (ইন্টারন্যাশন্যাল ম্যাথ অলিম্পিয়াড চ্যালেঞ্জ) ফাইনাল রাউন্ডে উঠেছে, এখন পর্যন্ত সে-ই টপস্কোরার। ইন্টারন্যাশন্যাল অলিম্পিয়াড ফাউন্ডেশন (ওএফ) আয়োজিত ‘ইন্টারন্যাশন্যাল জিকে অলিম্পিয়াড’-এ বাংলাদেশের হয়ে সর্বপ্রথম স্বর্ণ পদক এবং গণিত অলিম্পিয়াডে অর্জন করে ব্রোঞ্জ পদক। রুশো পরিবেশ বিজ্ঞান নিয়েও অধিক সচেতন, ‘বাংলাদেশ ক্লাইম্যাট সাইন্স অলিম্পিয়াড’-এর আঞ্চলিক এবং ‘ওয়াইজডম একাডেমি ক্লাইমেট ফেয়ার-২০২১’-এ ন্যাশনাল বিজয়ী। তার ঝুলিতে রয়েছে এমন অসংখ্য পুরস্কার।

‘ওয়ার্ল্ড গ্লোবাল চাইল্ড প্রডিজি অ্যাওয়ার্ড কমিটি’ মাহির আলি রুশোর সম্মানসূচক অর্জনগুলো উল্লেখ করে তার ভুয়সী প্রশংসা করেছে। তারা ‘ক্ষুদে আইনস্টাইনে’র এই সাফল্য নিয়ে একটি ব্লগ লেখারও প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা, ইসরো, এএনইউ থেকে পেয়েছে অনেক প্রশংসাপত্র। প্রাতিষ্ঠানিক পড়ালেখার পাশাপাশি রুশো ইন্টারন্যাশনাল ইয়ুথ ফিজিক্স চ্যালেঞ্জের সিইও, আলবার্ট আইনস্টাইন স্কলারশিপ টেস্ট সোসাইটির একজন সাধারণ সদস্য, আন্তর্জাতিক অনলাইন বায়োলজি ব্রাউল অলিম্পিয়াডের সদস্য। সেই সাথে ইউটিউব চ্যানেল ‘কোয়ান্টাম লার্নিং’ এবং ‘রুশো এডুকেশন প্ল্যানেট’-এর মাধ্যমে তার শিক্ষা ও গবেষণার কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। 

নিজেকে বিকাশে মাহের আলী রুশোর পথ অবশ্য এতো মসৃণ ছিল না- ‘বিজ্ঞানচর্চা করতে গিয়ে আমি অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলাম। কারণ আমাকে স্কুলের পড়াও চালিয়ে যেতে হতো। আর সেগুলো আমার কাছে খুব বিরক্তিকর মনে হতো, যা কেবল সময়ই নষ্ট করে। অনেক বন্ধু, এমনকি অনেক শিক্ষকও গণিত ও ফিজিক্স নিয়ে আমার আবেগকে উপেক্ষা করেছেন। পাগলামী মনে করে আজেবাজে কথাও বলতেন। এটা আমার জন্য একটা বাজে ও হতাশার সময় ছিল। তবে প্রতিটি সফল গল্পে এটি খুব সাধারণ ঘটনা। আমার মা-বাবা অবশ্য সব সময়েই পাশে ছিলেন, তারা আমার আদর্শ। তারপরে এলো ২০২০, ওই বছরের মার্চে কোভিড-১৯ বাংলাদেশে আক্রমণ করে। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। নিজেকে যেন তখন চাপহীন মনে হতে লাগল। উচ্চপর্যায়ের গণিত, ক্যালকুলাস, পদার্থবিদ্যা ও রসায়নসহ বিজ্ঞানের সব শাখাতেই শুরু হয় আমার বিচরণ। গণিত কিংবা ফিজিক্সের কোনো সমস্যা দেখলেই তা সমাধানের জন্য আমি চিন্তা করতে থাকি। আর সে ভাবনা থেকেই কোলাটস অনুমান সমাধানের লক্ষ্যে পৌঁছাই।’ 

মাহের আলী রুশোর ইচ্ছে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার বিজ্ঞানী হিসেবে নিজেকে তৈরি করা এবং দেশের বিজ্ঞান গবেষণায় অগ্রণী ভূমিকা রাখা। রুশো বলে, ‘ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার নয়, আমার বিজ্ঞানী হওয়ার ইচ্ছে। রিসার্চ ওয়ার্ক করতে চাই। আইনস্টাইন আমার প্রথম অনুপ্রেরণা। বিজ্ঞান নিয়ে কাজ করাই এখন আমার নেশা।’ তার মতে, প্রতিটি শিশুর মাঝেই রয়েছে অপার সম্ভাবনা। সঠিক পরিচর্যা পেলেই সম্ভব এই সুপ্ত প্রতিভার সম্পূর্ণ বিকাশ। আর এর জন্য প্রয়োজন পারিবারিক, সামাজিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক উৎসাহ। রুশো বিশ্বাস করে, মানুষের কর্মফল ৯৯ শতাংশ তার চেষ্টা এবং বাকি ১ শতাংশ তার মেধার উপর নির্ভর করে।

বর্তমানে রুশো যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেট্স ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, ক্যামব্রিজের আওতায় ম্যানুফ্যাকচার ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে মাইক্রোমাস্টার্স প্রোগ্রামে অধ্যয়নরত। একই সাথে বিশ্বখ্যাত হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে কেমিস্ট্রি অ্যান্ড কেমিক্যাল বায়োলোজি বিষয়ে মাইক্রোব্যাচেলর ডিগ্রিতেও সুযোগ করে নিয়েছে। জিতে নিয়েছে আই-সিস্টেম অলিম্পিয়াড ডিসকাউন্ট, কোডিং নিনজাস স্কলারশিপ, আইওএসএ স্কলারশিপ, স্কুল কানেকশন স্কলারশিপসহ সম্মানসূচক বিদ্যাবত্তা। মাত্র ১৪ বছর বয়সে বেশকিছু গবেষণাপত্রও লিখেছে রুশো, যা আইজেএসআর, আইওএসআর, কোয়েস্টের মতো মর্যাদাপূর্ণ জার্নালগুলোতে প্রকাশিত হয়েছে।

ছেলের এই সাফল্য নিয়ে অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘বছরখানেক আগে রুশো রোবটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের উপর একটি গবেষণাপত্র লিখে, যা রিসার্চ গেট নামে একটি ওয়েবসাইট প্রকাশ করে। বিশ্ববিদ্যালয় লেভেলের শিক্ষার্থীদের রিসার্চগুলোকে পেছনে ফেলে সেটি প্রথম হয়ে যায়। পরে সেটি ভারতের ইন্টারন্যাশনাল সাইন্স অব জার্নালসহ বিশ্বের ১০টা জার্নালও প্রকাশ করে। এরপর সর্বশেষ তিন মাসে ছয়টা আন্তর্জাতিক গবেষণাপত্র লিখে, যা প্রত্যেকটিই পাঁচ থেকে দশটি জার্নালে প্রকাশ হয়েছে। এগুলো মূলত ম্যাথ, ফিজিক্স, রোবটিক, কোয়ান্টাম ড্রিম ও টাইম ট্রাভেলের ওপর লেখা।’

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //