কাশ্মীরে কারফিউ উঠলে রক্তবন্যা বয়ে যাবে: ইমরান খান

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, তিনি যুদ্ধের বিরুদ্ধে। তবে শেষ পর্যন্ত দুই পরমাণু শক্তিধর দেশ পাকিস্তান ও ভারত পরস্পরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হলে পুরো বিশ্বকেই এর ফল ভোগ করতে হবে। 

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৪তম অধিবেশনে গতকাল শুক্রবার দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। 

ইমরান বলেন, যদি দুটি দেশের মধ্যে প্রচলিত যুদ্ধ শুরু হয় তাহলে সাত গুণ ছোট একটি দেশের সামনে দুইটি বিকল্প থাকে। হয় আত্মসমর্পণ নয়তো শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাওয়া। যখন কোনো পারমাণবিক শক্তিধর দেশ শেষ অবধি লড়াই চালিয়ে যায় তখন এর পরিণাম মানচিত্রের সীমানা ছাড়িয়ে যায়। দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের লড়াইয়ের প্রভাব তখন পুরো দুনিয়ার ওপর পড়ে। সমগ্র বিশ্বকে এর ফল ভোগ করতে হয়।

তিনি বলেন, ‘আমি কোনো হুমকি দিচ্ছি না, কিন্তু আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীকেও ভাবতে হবে, তারা ১৩০ কোটি মানুষের ভারতীয় বাজারকে তোষণ করবে, না নিরপরাধ নির্যাতিত মানুষের ন্যায়ের জন্য লড়বে? তা না-হলে ভাল আশা আপনারা করতেই পারেন, কিন্তু খারাপের জন্যও তৈরি থাকুন।’ 

কাশ্মীরের প্রসঙ্গ তুলে ইমরান বলেন, ‘কারফিউ উঠে গেলেই রক্তস্নান হবে। আরো একটা পুলওয়ামা হবে। ভারত তখন পাকিস্তানকে দোষ দিয়ে ফের বোমা ফেলতে আসবে। ৮০ লাখ কাশ্মীরিকে পাহারা দিয়ে রেখেছে ৯ লাখ ভারতীয় সেনার বাহিনী। কারফিউ উঠে গেলে কি হবে? কাশ্মীরিরা কি চুপচাপ তাদের মর্যাদার এই পরিবর্তন মেনে নেবে? কারফিউ উঠে গেলে যা হবে তা হচ্ছে, রক্তবন্যা বয়ে যাবে। মানুষ রাস্তায় নেমে আসবে। আর সেনারা কি করবে? তারা তাদের দিকে গুলি ছুড়বে.. আরো মৌলবাদের দিকে ঝুঁকবে কাশ্মীরিরা।’

ভারত সরকার গত ৫ অগাস্ট জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নিয়ে ওই অঞ্চলকে কড়া নিরাপত্তার ঘেরাটোপে মুড়ে রেখেছে। কাশ্মীর অঞ্চলে গণহারে ধরপাকড়, যোগাযোগ বন্ধ করে রাখা এবং কারফিউ জারি করে ভারত বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা নেওয়ায় উত্তেজনা বেড়েছে।

পরবর্তীতে সেখানে কিছু কড়াকড়ি শিথিল হলেও আটক বিশিষ্ট কাশ্মীরি নেতারা এখনো ছাড়া পাননি এবং মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবাও চালু হয়নি।

কাশ্মীরের এ পরিস্থিতি বিশ্বের সামনে তুলে ধরা এবং এ ইস্যুতে কিছু করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তাগাদা দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েই এবারের জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দেন ইমরান।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি জাতিসংঘের জন্য একটি পরীক্ষা। এই সংস্থা কাশ্মীরি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের গ্যারান্টি দিয়েছিল। এখন আত্মতুষ্টিতে না ভুগে বরং যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার সময় এসেছে। এজন্য সবার আগে ভারতকে দখলকৃত কাশ্মিরে আরোপ করা কারফিউ তুলে নিতে হবে। সব বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই কাশ্মিরিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার দিতে হবে।

১৫ মিনিটের বেশি সময় ধরে ভাষণ দেন ইমরান খান। তার বক্তব্যের বেশিরভাগ সময়জুড়ে ছিল অধিকৃত কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসন বাতিলসহ অঞ্চলটিতে ভারতের নীতির কঠোর সমালোচনা। -এনডিটিভি, আনন্দবাজার পত্রিকা

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //