পুরো কাশ্মীর যুক্ত করে পাকিস্তানের নতুন মানচিত্র

পাকিস্তানের নতুন মানচিত্র প্রকাশ করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এতে জম্মু ও কাশ্মীর, লাদাখ ও পশ্চিম গুজরাটের কিছু অংশ পাক এলাকা হিসাবে দেখানো হয়েছে। ভারত এই মানচিত্র প্রত্যাখ্যান করেছে।

নেপালের পর এবার পাকিস্তানও তাদের নতুন মানচিত্র প্রকাশ করল। কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপের বর্ষপূর্তির ঠিক আগে ইমরান খান এই মানচিত্র প্রকাশ করেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, তার উদ্দেশ্য পরিষ্কার, ভারতকে চাপে রাখা। তবে যেভাবে নেপালের পর পাকিস্তানও নতুন ম্যাপ প্রকাশ করে ভারতের এলাকা নিজেদের বলে দাবি করল, তাতে এর পিছনে চীনের কৌশল দেখতে পাচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।

গতকাল মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় ইমরান খান এই ম্যাপ প্রকাশ করার পরই ভারতের সরকারি প্রতিক্রিয়া হলো, আমরা পাকিস্তানের তথাকথিত একটি রাজনৈতিক মানচিত্র দেখেছি। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এই মানচিত্র প্রকাশ করেছেন। এটা চূড়ান্ত রাজনৈতিক অবাস্তবতা। তারা ভারতের রাজ্য গুজরাট, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ তাদের এলাকা বলে দাবি করেছে। এটা চরম হাস্যকর দাবি। এর কোনো আইনি বৈধতা নেই। আন্তর্জাতিক বিশ্বাসযোগ্যতাও নেই। এর থেকে একটি কথাই স্পষ্ট, বাস্তবে পাকিস্তান সীমান্ত-সন্ত্রাসের পাশাপাশি এলাকা বিস্তার করা নিয়ে মশগুল থাকতে চাইছে।

পাক প্রধানমন্ত্রী এই মানচিত্র প্রকাশ করার পর বলেছেন, ভারত গত বছরের আগস্টে বেআইনি কাজ করেছে। 

গত বছর ৫ আগস্ট ভারতের প্রধারমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকার জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপ করে এবং জম্মু ও কাশ্মীর ও লাদাখকে আলাদা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার সিদ্ধান্ত নেয়। ভারতীয় পার্লামেন্ট এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করে।

এদিকে ইমরানের দাবি, তার মন্ত্রিসভা নতুন মানচিত্র অনুমোদন করেছে। এটিই এখন থেকে স্কুলে পড়ানো হবে। আর ভারতের সাথে দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিরোধের কূটনৈতিক সমাধানের চেষ্টাও চালানো হবে। গত এক বছরে পাকিস্তান বারবার জম্মু ও কাশ্মীর প্রসঙ্গ ও ৩৭০ ধারা বিলোপের ঘটনা আন্তর্জাতিক মঞ্চে তোলার চেষ্টা করেছে। কিন্তু সমর্থন পায়নি দেশটি।

চীনের উদ্যোগে জাতিসংঘে ৩৭০ ধারা বিলোপ নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়েছে। কিন্তু জাতিসংঘ ভারতের নিন্দা করতে রাজি হয়নি। তারাও মনে করেছে, এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ভারত-পাক বিরোধের ক্ষেত্রে চীনকে বাদ দিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের বাকি চার স্থায়ী সদস্য যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স সবসময় দিল্লির পাশেই থেকেছে। 

ভারতের দাবি, পাকিস্তানের সাথে কোনো সমস্যা হলে তা দ্বিপাক্ষিক স্তরে মিটিয়ে নেয়া হবে। তৃতীয় কোনো পক্ষের মধ্যস্থতার দরকার নেই। 

সম্প্রতি চীনের সাথে লাদাখে ভারতের দীর্ঘ ও রক্তাক্ত সীমান্ত বিরোধ চলছে। সেনা প্রত্যাহার নিয়ে দুই দেশ মতৈক্যে পৌঁছলেও সব জায়গা থেকে সেনা সরেনি। চীন আবার লিপুলেখ পাসে সেনার সংখ্যা বাড়িয়েছে। ভারতও চীন সীমান্তে সেনা ও সমরাস্ত্রের পরিমাণ বাড়িয়েছে। নেপালও সম্প্রতি নতুন মানচিত্র প্রকাশ করে ভারত সীমান্তের তিনটি এলাকা নিজেদের বলে দাবি করেছে। এবার পাকিস্তানও একই কাজ করল। বিশেষজ্ঞদের একাংশের ধারণা, চীন চারদিক থেকে ভারতকে ঘিরে ধরার চেষ্টা করছে। -ডয়চে ভেলে

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //