কাশ্মীর থেকে সরানো হচ্ছে ১০ হাজার সেনা

কাশ্মীর উপত্যকা থেকে ১০ হাজার আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ানকে সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। 

গতকাল বুধবার (১৯ আগস্ট) দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। 

তবে ঠিক কী করাণে সেনা সরানো হচ্ছে, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে বিতর্ক শুরু হয়েছে।

গত বছর আগস্ট মাসে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ অধিকার আইন বাতিল করে কেন্দ্রীয় সরকার। ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ও ৩৫এ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কিছু বিশেষ অধিকার পেত কাশ্মীর উপত্যকা। স্বাধীনতার সময় থেকে সেই আইন চলে আসছিল। কিন্তু বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকার গত বছর তা বাতিল করার পরে বিপুল পরিমাণ সেনা ও আধা সেনা মোতায়েন করে কাশ্মীর উপত্যকায়। 

তখন কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছিল, অশান্তি এড়াতেই ওই পরিমাণ সেনা মোতায়েন করা হয়েছে কাশ্মীরে।

শুধু তাই নয়, কাশ্মীরের আরো বেশ কিছু নাগরিক অধিকার সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়। একদিকে ঘোষণা করা হয় লকডাউন, অন্যদিকে বন্ধ করে দেয়া হয় ইন্টারনেট পরিষেবা। গণমাধ্যমের উপরেও বেশ কিছু বিধিনিষেধ জারি করা হয়। যা নিয়ে গত এক বছর ধরে নানা স্তরে বিতর্ক চলছে।

কয়েক মাস হলো বন্ধ করে দেয়া বিভিন্ন পরিষেবা ধীরে ধীরে চালু করা হচ্ছে। আপাতত দুইটি জেলায় ফোর জি ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করা হয়েছে। 

সরকারের দাবি, কাশ্মীর উপত্যকা এখন আগের চেয়ে স্বাভাবিক। বস্তুত সে কারণেই ১০ হাজার আধা সেনা সরানোর সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই সেনাদের কাশ্মীরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাদের এখন পুরনো জায়গায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। যত দ্রুত সম্ভব তাদের সরিয়ে নেয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

গত কয়েক মাসে কাশ্মীরে একের পর এক সেনা-জঙ্গি সংঘর্ষ হয়েছে। বেশ কিছু পুলিশ ও সেনা জওয়ান নিহত হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে এত পরিমাণ সেনা কেন সরকার সরিয়ে নিচ্ছে তা নিয়ে কোনো কোনো মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু বিশেষজ্ঞের ধারণা, সরকার আরো বড় কোনো পরিকল্পনা করছে। সে কারণেই আপাতত আধা সেনাদের একটা বড় অংশ সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।

গত মে মাস থেকে লাদাখে ভারত-চীন সংঘাত শুরু হয়েছে। পাকিস্তানের সাথেও সম্পর্ক আরো তিক্ত হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, শীতে এই সংঘাত আরো তীব্র হবে। সেনা সূত্র জানিয়েছে, কাশ্মীর ও লাদাখ সীমান্তে চূড়ান্ত সতর্কতা জারি রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে উপত্যকা থেকে ১০ হাজার সৈন্য সরিয়ে নেয়ার কারণ নিয়ে যথেষ্ট ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।

তবে কাশ্মীরের মানুষের কাছে সরকারের এই সিদ্ধান্ত যথেষ্ট আনন্দের। দীর্ঘদিন ধরে কাশ্মীরের একাংশের মানুষের অভিযোগ, তাদের রাজ্যটিকে কার্যত পুলিশ স্টেটে পরিণত করা হয়েছে। রাস্তায় রাস্তায় সেনা টহল সাধারণ জনজীবনকে ব্যাহত করেছে। ১০ হাজার সেনা সরে গেলে জনজীবন কিছুটা হলেও স্বাভাবিক হবে বলে অনেকেই মনে করছেন। -ডয়চে ভেলে

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //