মিয়ানমারে আত্মগোপনে থাকা নেতাদের ‘নতুন সরকার’ গঠন

মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থানের পর আত্মগোপনে থাকা নেতারা সামরিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তাদের সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

আত্মগোপনে থাকা নেতাদের নিয়ে গঠিত একটি কমিটির প্রধান মাহন উইন খিয়াং থান বলেছেন, এটা জাতির জন্য সবচেয়ে অন্ধকারাচ্ছন্ন মুহূর্ত। তবে খুব তাড়াতাড়ি আলোর দেখা পাওয়া যাবে।

গতকাল শনিবার (১৩ মার্চ) গোপন স্থান থেকে ফেসবুকের মাধ্যমে জনগণের উদ্দেশে বক্তব্যে তিনি বিপ্লবের মাধ্যমে মিয়ানমারের বর্তমান সেনা সরকারকে উৎখাতের আহ্বান জানান।

সেনা অভ্যুত্থানের পর অং সান সুচির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) কিছু নেতা গ্রেফতার এড়াতে পেরেছেন। তারা আত্মগোপনে আছেন এবং তারা কমিটি ফর রিপ্রেজেন্টিং পাইডুংসু হলত্তু (সিআরপিএইচ) নামে একটি নতুন গ্রুপ গঠন করেছেন। এই কমিটি মাহন উইন খিয়াং থানকে ভারপ্রাপ্ত ভাইস প্রেসিডেন্ট নিযুক্ত করেছে। মিয়ানমারের বৈধ সরকার হিসাবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দাবি করছে সিআরপিএইচ।

এদিকে দেশটিতে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে প্রতিদিনই বাড়ছে হতাহত হওয়া মানুষের সংখ্যা। গতকাল নিহত হয়েছেন অন্তত ১৩ জন। এ নিয়ে দেশটিতে ৮০ জনের বেশি বিক্ষোভকারী নিহত হলেন। গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় অবস্থান নিয়েছে। 

ফেসবুক বার্তায় খিয়াং থান বলেছেন, এটা এমন একটা সময় যখন অন্ধকারে বিরুদ্ধে আমাদের নাগরিকদের লড়াই করার ক্ষমতার পরীক্ষা হচ্ছে। অতীতে আমাদের মধ্যে বিভেদ থাকলেও এখন অবশ্যই আমাদের হাতে হাত ধরে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।

সিআরপিএইচকে একটি অবৈধ গ্রুপ বলে মনে করে সামরিক বাহিনী। তারা সতর্ক করে দিয়েছে, এই কমিটিকে যারা সহায়তা করবে, তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হবে।

মিয়ানমারে গত নভেম্বরের নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে বলে সামরিক বাহিনী দাবি করলেও তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের দ্বিমত রয়েছে। পর্যবেক্ষকদের মতে, ওই নির্বাচনে কোনো কারচুপি হয়নি।

গত সপ্তাহেই সুচির বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ছয় লাখ ডলার আর ১১ কেজি স্বর্ণ গ্রহণের অভিযোগ এনেছে সামরিক বাহিনী। যদিও এর সপক্ষে এখনো কোনো প্রমাণ হাজির করা হয়নি। এই অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে এনএলডি আইনপ্রণেতারা। গত পাঁচ সপ্তাহ ধরে তাকে অজ্ঞাত স্থানে আটকে রেখেছে সামরিক বাহিনী। তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ আনা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে- ভয়ভীতি তৈরি করা, অবৈধভাবে রেডিও সরঞ্জাম রাখা ও কভিড-১৯ নিয়মনীতি ভঙ্গ করা।

সিআরপিএইচের নেতা খাইং থান বলেছেন, সেনা কর্তৃপক্ষের দমনপীড়ন থেকে মিয়ানমারের জনগণ যাতে নিজেদের রক্ষার আইনগত অধিকার পায়, সেই চেষ্টা করছেন তারা। এজন্য প্রয়োজনীয় আইন করার চেষ্টা করবে সিআরপিএইচ।

জনপ্রশাসন চালাতে একটি অন্তর্বর্তী দল গঠন করা হবে বলেও জানান মাহন উইন। -বিবিসি

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //