শেষ পর্যন্ত রাজনীতিই ছেড়ে দিলেন বাবুল !

ভারতে ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাবুল সুপ্রিয়র হয়ে প্রচারে পশ্চিমবঙ্গে এসে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আসানসোলের ভোটারদের কাছে বলেছিলেন, ‘হামে বাবুল চাহিয়ে।’ এর পরে বাবুলের জয় এবং মন্ত্রিত্ব। মোদির কথা শুনেছিল আসানসোল। ৭০ হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধানে তৃণমূলের শ্রমিকনেত্রী দোলা সেনকে হারান বাবুল। পাঁচ বছর পরে আরো ভালো ফল হয় আসানসোল কেন্দ্রে। ২০১৯ সালে বাবুল তৃণমূলের মুনমুন সেনকে হারান প্রায় দু’লাখ ভোটে।

দু’বার জয়ের পরেই তিনি মন্ত্রী হন। প্রতিমন্ত্রী হলেও গুরুত্বপূর্ণ দফতরও পেয়েছিলেন বিজেপিতে মোদির প্রিয় হিসেবে পরিচিত বাবুল। প্রথমবার হয়েছিলেন কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী। এর পরে ২০১৬ সালে দফতর বদলে হয় ভারী শিল্প এবং রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প। ২০১৯ সালে সংসদ সদস্য হওয়ার পরে বাবুল তুলনায় কম গুরুত্বপূর্ণ দফতরের (পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন) মন্ত্রী হন। কিন্তু গত ৭ জুলাই মন্ত্রিসভার রদবদলে বাদ যান বাবুল। এর পর থেকেই বাবুলের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়।

বাবুলের দাবি, মন্ত্রিত্ব চলে যাওয়ার কারণে তিনি রাজনীতি ছাড়ছেন না। শনিবার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘প্রশ্ন উঠবেই কেনইবা রাজনীতি ছাড়তে গেলাম? মন্ত্রিত্ব চলে যাওয়ার সাথে তার কি কোনো সম্পর্ক আছে? হ্যাঁ আছে। কিছুটা তো নিশ্চয় আছে! তঞ্চকতা করতে চাই না। তাই সে প্রশ্নের উত্তর দিয়ে গেলেই তা সঠিক হবে। আমাকেও তা শান্তি দেবে।’

বাবুলের বক্তব্য- ২০১৪ ও ২০১৯ সালের মধ্যে অনেক ফারাক। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সমর্থনে সুন্দরসিংহ অহলুয়ালিয়া দার্জিলিঙে জিতলেও তিনিই বিজেপির টিকিটে একমাত্র সাংসদ ছিলেন দাবি করে বাবুল লিখেছেন, ‘আজ বাংলায় বিজেপিই প্রধান বিরোধী দল। আজ পার্টিতে অনেক নতুন উজ্জ্বল তরুণ তুর্কি নেতা যেমন আছেন তেমনই অনেক প্রবীণ বিদগ্ধ নেতাও আছেন। তাদের নেতৃত্বে দল এখান থেকে অনেক দূর যাবে এটা বলাই বাহুল্য। তবে বলতে দ্বিধা নেই যে, আজ পার্টিতে কোনো একজন ব্যক্তিবিশেষের থাকা না থাকাটা যে কোনো বড় ব্যাপার নয় তাও স্পষ্ট হয়েছে এবং এটা মেনে নেয়াটাই যে সঠিক সিদ্ধান্ত হবে এটাই আমার দৃঢ়, সুদৃঢ় বিশ্বাস।’

একইসাথে তিনি লিখেছেন, ‘ভোটের আগে থেকেই কিছু কিছু ব্যাপারে রাজ্য নেতৃত্বের সাথে মতান্তর হচ্ছিল। তা হতেই পারে। কিন্তু তার মধ্যে কিছু বিষয় জনসমক্ষে চলে আসছিল। তার জন্য কোথাও আমি দায়ী (একটি ফেসবুক পোস্ট করেছিলাম যা পার্টির শৃঙ্খলাভঙ্গের পর্যায়েই পড়ে) আবার কোথাও অন্য নেতারাও ভীষণভাবে দায়ী, যদিও কে কতটা দায়ী সে প্রসঙ্গে আমি আজ আর যেতে চাই না। কিন্তু সিনিয়র নেতাদের মতানৈক্য ও কলহে পার্টির ক্ষতি তো হচ্ছিলই, ‘গ্রাউন্ড জিরো’-তেও পার্টির কর্মীদের মনোবলকে যে তা কোনোভাবেই সাহায্য করছিল না তা বুঝতে ‘রকেট বিজ্ঞানের’ জ্ঞানের দরকার হয় না। এই মুহূর্তে তো তা একেবারেই অনভিপ্রেত তাই আসানসোলের মানুষকে অসীম কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা জানিয়ে আমিই সরে যাচ্ছি।’

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //