আসামে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আগুন ও গুলিতে নিহত ৫

ভারতের আসামে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা গুলি করে ও আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে পাঁচজনকে হত্যা করেছে। হত্যার শিকার ব্যক্তিরা সবাই ট্রাক ড্রাইভার। তারা মালামাল নিয়ে যাওয়ার সময় ট্রাকগুলো আটকে ড্রাইভারদের গুলি করার পর ট্রাকগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।

বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) রাতে ডিমা হাসাও জেলায় এ ঘটনা ঘটে। ডিমাশা ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (ডিএনএলএ) এই হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, কয়লা ও অন্যান্য সামগ্রী বোঝাই ছয়টি ট্রাকে আক্রমণ করে সন্ত্রাসীরা। এর মধ্যে পাঁচটি ট্রাকের চালক নিহত হয়েছেন।

ডিমা হাসাও জেলার পুলিশ সুপার জয়ন্ত সিং বলেছেন, ‘পাঁচটি দগ্ধ লাশ উদ্ধার হয়েছে। তারা সকলেই ট্রাকের চালক বলে জানা গেছে।’ গোয়েন্দা রিপোর্ট অনুসারে, ডিএনএলএ এই হামলার নেপথ্যে রয়েছে।

পুলিশ প্রশাসনের দাবি, কয়লা ও ছাই বোঝাই ট্রাকগুলো উমরাংসো থেকে লঙ্কার দিকে যাচ্ছিল। সেই সময়ই সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীরা প্রথমে বেশ কয়েকটি ট্রাককে দাঁড় করায়। তারপর সেগুলিতে হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। তিনটি ট্রাক পালিয়ে যায়। ফলে ওই ট্রাকগুলোর চালক ও সহযোগীরা প্রাণে বাঁচতে পারে। সন্ত্রাসীদের খুঁজতে পাহাড়ি এলাকায় চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।

২০০৮ সালে এমন আরেকটি হামলা চালিয়েছিল আসামের আরেকটি বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপ ডিএইচডি(জে)। তখনও ট্রাকে আগুন লাগিয়ে ১০ জনকে হত্যা করা হয়েছিল।

স্বাধীন ও সার্বভৌম ডিমাসা রাষ্ট্রের দাবিতে ২০১৯ সাল থেকে আন্দোলন চালাচ্ছে ডিএনএলএ। ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় আদিম জনজাতি বলেই পরিচিত এই ডিমাসারা। বর্তমানে এদের ঠাঁই হয়েছে ডিলমা হাসাও, কারবি, তাছাড়, নওগাঁও ও নাগাল্যান্ডের কয়েকটি অংশে।

ভারতীয় সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিল অনুসারে ডিলমা হাসায়ের প্রশাসন পরিচালনার ভার রয়েছে উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বায়ত্তশাসিত কাউন্সিলের। উত্তর-পূর্বের যে রাজ্যগুলোতে নয়ের দশকজুড়ে যে বিচ্ছিন্নতাকামী হামলা চলেছিল তার মধ্যে আসাম অন্যতম। তবে ২০০০ সালের পর থেকে অপেক্ষাকৃত শান্ত এইসব রাজ্যের পরিস্থিতি।

১৯৯১ সালে ডিমারাজি পৃথক রাজ্যের দাবিতে ডিলমাসা ন্যাশনাল সিকিউরিটি ফোর্স গঠিত হয়। ২০০০ সালের পর দাবি পূরণের লক্ষ্যে ডিমাসা অধ্যুষিত এলাকায় এরা সক্রিয় হয়ে ওঠে। ২০১৯ সালের এপ্রিলের কেন্দ্রের সাথে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর করে আন্দোলনকারীরা। যদিও ডিমাসা জাতির সার্বভৌম, স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবি থেকে সরে আসেনি এই বিচ্ছিন্নতাকামী শক্তি।

চলতি বছর মে মাসে ডিমাসা ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির ছয় শীর্ষ ক্যাডার অসম পুলিশ এবং আসাম রাইফেলসের উগ্রবাদবিরোধী অভিযানে নিহত হয়েছিল। তারই বদলা বৃহস্পতিবার রাতের হামলা বলে গোয়েন্দাদের অনুমান।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //