নিজেকে কংগ্রেসের ‘স্থায়ী’ সভাপতি ঘোষণা করলেন সোনিয়া গান্ধী

দলের সাংগঠনিক নির্বাচন হয়নি বহুদিন। ২০১৯ সালে সভাপতির পদ থেকে রাহুল গান্ধী সরে দাঁড়ানোর পর ‘অস্থায়ী’ সভাপতির দায়িত্ব নিয়েছিলেন মা সোনিয়া গান্ধী। শনিবার (১৬ অক্টোবর) সেই ‘অস্থায়ী’ পদকে কার্যত স্থায়ী বলেই ঘোষণা করলেন তিনি।

কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির (সিডব্লিউসি) সভায় বিক্ষুব্ধ নেতাদের প্রশ্নের জবাবে সোনিয়া গান্ধী ঘোষণা করেন, ‘আমি কংগ্রেসের পূর্ণ সময়ের সভাপতি।’

তবে এই ঘোষণা দিতে গিয়ে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে নিজের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ফিরিস্তিও তুলে ধরেন সোনিয়া।

ভারতের সাম্প্রতিক ইস্যুগুলো উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি দেশের জ্বলন্ত সমস্যাগুলো প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেছি। যেমনটা করেছেন মনমোহন সিং এবং রাহুল গান্ধী। অন্য দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছি। জাতীয় ইস্যুতে সম্মিলিতভাবে বিবৃতি প্রকাশ করেছি এবং সংসদে বিরোধী দলগুলোর কৌশলে সমন্বয় স্থাপন করা হয়েছে।’

দলের নেতাদের সোনিয়া বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, তার নেতৃত্বে কংগ্রেস কখনও গতিহীন হয়ে পড়েনি।

তিনি বলেন, ‘৩০ জুনের মধ্যে সভাপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে করোনা মহামারির কারণে ওই প্রক্রিয়া স্থগিত করতে হয়েছিল। এখন নতুন সূচি তৈরি করা হবে।

এদিন কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয়, আগামী এক বছরের মধ্যে দলের সাংগঠনিক নির্বাচন হবে। অর্থাৎ, দলীয় নির্বাচন ছাড়াই আরও এক বছর কংগ্রেস সভাপতি থাকবেন সোনিয়া গান্ধী।

তিনি বলেন, ‘দলের পুনরুজ্জীবন হওয়া উচিত। তবে এর জন্য শৃঙ্খলা এবং আত্মনিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন।’

বেশ কিছু দিন ধরেই দলের বিরুদ্ধেই সরব হতে দেখা গেছে কংগ্রেসের বেশ কয়েকজন নেতাকে। জি-২৩ বা ওই ২৩ জন নেতাকেও এদিন পরোক্ষভাবে কড়া বার্তা দেন সোনিয়া।

২৩ নেতার মধ্যে রয়েছেন কপিল সিব্বল, গুলাম নবী আজাদের মতো বর্ষীয়ান নেতারা। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ইস্যুতে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন তারা। দলের ভেতরে ওই কাঁদা ছোঁড়াছুড়ি নিয়ে এদিন সরব হন সোনিয়া।

তিনি বলেন, ‘আমি সবসময়ই দলের ভেতরে খোলাখুলিভাবে কথা বলায় বিশ্বাসী। তাই মিডিয়ার মাধ্যমে কথা বলার কোনো প্রয়োজন নেই।’

কংগ্রেস হাইকমান্ড কী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সেটি সংবাদমাধ্যমের কাছে যেন প্রকাশ না করা হয়, সে বিষয়েও নেতাদের সতর্ক করেছেন সোনিয়া।

কিছুদিন আগেই দলের স্থায়ী সভাপতি নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিক্ষুব্ধ জি-২৩ নেতাদের নির্দেশেই তিনি এই দাবি প্রকাশ্যে তুলেছেন। এরপরই আজাদ চিঠি লেখেন সোনিয়াকে। এদিনের বৈঠকে দলের সাংগঠনিক নির্বাচন নিয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয় কি না, সেদিকেও নজর থাকবে।

চলতি বছরের মে-জুনের মধ্যেই কংগ্রেসের সাংগঠনিক নির্বাচন সেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। তবে করোনা পরিস্থিতিতে সেটি স্থগিত হয়ে যায়।

আগামী নির্বাচন নিয়ে সোনিয়া গান্ধী বলেন, ‘আমাদের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ আসবে। আমরা যদি একজোট থাকি, অনুশাসন মেনে চলি এবং শুধুমাত্র দলের ভালোর জন্য কাজ করি তাহলে সাফল্য পাবোই। আমাদের এখনই উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড, গোয়া এবং মণিপুরের নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হতে হবে।’


সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //