ভারতে করোনার তৃতীয় ঢেউ শুরু

ভারতে করোনাভাইরাস সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ  সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দিয়েছে। এবার সংক্রমণের শিকার বেশির ভাগ মানুষের নমুনায় ওমিক্রন ধরা পড়ছে বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ।

ভারতের ভ্যাকসিন টাস্কফোর্সের প্রধান ডা. এন কে অরোরা দেশটিতে করোনার তৃতীয় ঢেউ শুরুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন। কলকাতা, দিল্লি, মুম্বাইয়ের মতো মেট্রো শহরে করোনা আক্রান্তদের ৭৫ শতাংশের দেহে ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে বলেও তিনি জানান।

স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে সারা দেশে চিহ্নিত ভ্যারিয়েন্টের ১২ শতাংশ ছিল ওমিক্রন। পরে তা বেড়ে ২৮ শতাংশ হয়েছে। 

মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) ভারতে ৩৭ হাজার ৩৭৯ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১১ হাজার ৭ জন। এক দিনে মারা গেছেন ১২৪ জন।

করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় দিল্লি ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (ডিডিএমএ) সপ্তাহান্তে দিল্লিতে কারফিউ জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারফিউ চলাকালীন শুধু জরুরি প্রয়োজনে চলাচলের বিশেষ অনুমতি দেয়া হবে। অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা ছাড়া সব সরকারি ও বেসরকারি অফিসের সকলকে বাড়িতে থেকে কাজ করার জন্য বলা হয়েছে।

দিল্লি অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্স তাদের শীতকালীন ছুটি বাতিল করেছে। ফ্যাকাল্টি সদস্যদের নিজ নিজ কাজে যোগ দিতে বলা হয়েছে।

দেশের বিভিন্ন রাজ্যে করোনা শনাক্তের হার প্রতিদিনই বাড়ছে। সেই সঙ্গে করোনা আক্রান্তের তালিকায় যোগ হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নাম।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মহেন্দ্রনাথ পান্ডেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। তাকে গাজিয়াবাদের যশোদা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দিল্লিতে বিজেপির সাংসদ মনোজ তিওয়ারি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সাবেক সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় ও তার স্ত্রী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ শতাধিক ব্যক্তি এ সময়ে করোনার ধকল সামলাচ্ছেন হাসপাতালে অথবা বাড়িতে। সফদরজং হাসপাতালের অন্তত ২৩ জন চিকিৎসকের করোনা শনাক্ত হয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতালের অর্ধশতাধিক চিকিৎসক রয়েছেন পর্যবেক্ষণে।

করোনার দ্রুত বিস্তারে পাঞ্জাব সরকার পৌর এলাকায় রাতে কারফিউ জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে বার, সিনেমা হল, শপিং মল, রেস্টুরেন্টসহ কিছু প্রতিষ্ঠানে অর্ধেক উপস্থিতির অনুমতি দেয়া হয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি অফিসে উপস্থিত কর্মীদের করোনার দুই ডোজ টিকা বাধ্যতামূলক।

মহারাষ্ট্র, অন্ধ্র প্রদেশ, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক ও পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য সরকার স্থানভেদে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধসহ বেশ কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে গত বছর নাজুক অবস্থা ছিল ভারতের। ওয়ার্ল্ডো মিটারের হিসাবে করোনা আক্রান্তের তালিকায় ভারতের অবস্থান ছিল তৃতীয়। দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ২৫ লাখের বেশি মানুষ। মারা গেছেন ১ লাখ ৬৫ হাজার ১৩২ জন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //