প্রতিহিংসার রাজনীতি করবে না নতুন সরকার : শাহবাজ

বহু নাটকীয়তার পর পাকিস্তানের পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে প্রধানমন্ত্রীর পদ হারিয়েছেন ইমরান খান। গতকাল শনিবার (৯ এপ্রিল) সারা দিন জাতীয় পরিষদের অধিবেশন তিন-চার দফা মুলতুবি হবার পর মধ্যরাতের পর অনাস্থা ভোট অনুষ্ঠিত হয়।

জাতীয় পরিষদের ৩৪২জন সদস্যের মধ্যে ১৭৪ জন সদস্য ইমরানের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে ভোট দেন। পাকিস্তানের ইতিহাসে এই প্রথম একজন প্রধানমন্ত্রীকে অনাস্থা ভোটে পরাজিত হয়ে ক্ষমতা ছাড়তে হলো। ৩৪২ আসনের জাতীয় পরিষদে প্রস্তাবটি পাসের জন্য দরকার ছিল ১৭২ ভোট।

এই ভোটাভুটির পর জাতীয় পরিষদে বক্তব্য দেন বিরোধীদলীয় নেতা পাকিস্তান মুসলিম লিগের (নওয়াজ) সভাপতি শাহবাজ শরিফ। তিনি বলেন, নতুন সরকার প্রতিহিংসার রাজনীতি করবে না। 

প্রথম থেকেই জল্পনা ছিল, ইমরান পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী শাহবাজই হবেন। পুরো নাম মিয়া মোহাম্মদ শাহবাজ শরিফ। তিনি প্রধানমন্ত্রী পদে জাতীয় পরিষদে বিরোধীদলীয় জোটের প্রার্থী। 

বক্তব্যের শুরুতেই জোটের সব নেতাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান তিনি। শাহবাজ বলেন, ‘আমি অতীতের তিক্ততায় ফিরে যেতে চাই না। আমরা তাদের ভুলে যেতে ও সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই। আমরা প্রতিশোধ নেব না ও অবিচার করব না। আমরা অকারণে মানুষকে কারাগারে পাঠাব না। আইন ও বিচার প্রক্রিয়া তার নিজস্ব গতিতে চলবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘তাদের ত্যাগের জন্য আমরা সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। সংবিধান ও আইনের ভিত্তিতে পাকিস্তান নিজ অস্তিত্বে ফিরে আসবে। আমাদের জোট দেশকে উন্নতির দিকে নিয়ে যাবে বলে আশা করছি।’

শাহবাজের পর বক্তব্য দেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতা বিলাওয়াল ভুট্টো। ইমরানকে ক্ষমতাচ্যুত করতে অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেওয়ায় পরিষদের সদস্যদের অভিনন্দন জানান তিনি। এর আগে অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটিতে ইমরানের বিরুদ্ধে ভোট পড়ে ১৭৪টি। 

জাতীয় পরিষদ নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করতে আগামীকাল সোমবার (১১ এপ্রিল) আবার অধিবেশনে বসবে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে পরবর্তী নির্বাচন হবার কথা। তার আগে নবনিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় থাকবেন।

আর্থিক দুরবস্থা ও ভুল পররাষ্ট্রনীতির অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে বিরোধী দলগুলো। 

গত ৩ এপ্রিল ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে দেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পরামর্শে পার্লামেন্ট ভেঙে দেন রাষ্ট্রপতি। পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে প্রধান বিচারপতি বিষয়টিকে সুয়ো মোটো হিসেবে গ্রহণ করেন।

পাকিস্তানের ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে বলেছিলেন, এটি সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক। বিরোধী জোট সংবিধান লঙ্ঘন করেছে। -জিও নিউজ, ডন

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //