মধ্যরাতের আদালত নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ইমরান খান

‘কী অপরাধ করেছি আমি যে আপনারা রাত ১২টায় আদালত বসালেন, আপনারা রাতের অন্ধকারে আদালত বসালেন। অথচ আমি কখনো কোন প্রতিষ্ঠান বা আদালতের বিরুদ্ধে মানুষকে উস্কে দেইনি।’

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তার বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট নিয়ে মধ্যরাতে আদালত বসানোর সমালোচনা করে তিনি এ প্রশ্ন তুললেন।

দেশটির পেশোয়ার শহরে গতকাল বুধবার (১৩ এপ্রিল) রাতে অনুষ্ঠিত সমাবেশের মাধ্যমে দেশজুড়ে ধারাবাহিক জনসভা কর্মসূচি শুরু করেছেন ইমরান।

পাকিস্তানের পার্লামেন্টে ইমরান খানের বিরুদ্ধে বিরোধীদের আনা অনাস্থা ভোট ডেপুটি স্পিকার নাকচ করে দেয়ার পর দেশটির আদালত থেকে পার্লামেন্ট পুর্নবহাল করে অনাস্থা ভোট গ্রহণের নির্দেশ এসেছিল। গত শনিবার (৯ এপ্রিল) অনেক নাটকীয়তার পর অনাস্থা ভোটে হেরে প্রধানমন্ত্রীর পদ হারান তিনি।

ওইদিন মধ্যরাতে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট খোলা হয় এবং সেখানকার প্রধান বিচারপতি আতহার মিনাল্লাহর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ডেকে পাঠান।

তখন জানানো হয়েছিল যে, হাইকোর্ট একটি জরুরি পিটিশনের শুনানি করবে, যেখানে অভিযোগ করা হয়েছে যে, ইমরান খান রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন এবং সেনাপ্রধানকে পদচ্যুত করার সুপারিশ করেছেন। ফলে জনস্বার্থে আদালতের ওই আদেশ বাতিল করে দেয়া উচিত।

তবে শেষপর্যন্ত যেহেতু ইমরান খানের ওই আদেশ কার্যকর হয়নি, ফলে ওই পিটিশনেরও আর শুনানি হয়নি। তাই ধারণা করা হচ্ছে এসব কারণেই মধ্যরাতে আদালত বসানোর বিষয়টি ইমরানের ভাষণে উঠে এসেছে।

পার্লামেন্টে তার হেরে যাওয়ার পর সমর্থকদের প্রতিক্রিয়ার দিকে ইঙ্গিত করে পেশোয়ারের সমাবেশে ইমরান খান বলেন, পাকিস্তানের জনগণ এভাবে আর কখনো রাস্তায় নামেনি। মনে রাখতে হবে যে এটা সত্তরের দশকের পাকিস্তান নয়। এটা নতুন পাকিস্তান। এখন সচেতন মানুষের পাকিস্তানের, এটা সোশ্যাল মিডিয়ার পাকিস্তান মানুষ সচেতন।

তিনি তার দলের নেতাকর্মীদের ওপর দমন-পীড়নের অভিযোগ করে নতুন সরকারের উদ্দেশে বলেন, যেদিন আমরা ডাক দেব, সেদিন আপনারা পালানোর পথ পাবেন না। যখনই পাকিস্তানের কোন প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতা হারিয়েছেন, তখন জনতা মিষ্টি বিতরণ করেছে। কিন্তু আমি আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ যে আমি সরে যাওয়ার পর আপনারা সবাই এসেছেন এবং সম্মান দিয়েছেন।

এদিকে ইমরানের বক্তব্যে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন পাকিস্তান পিপলস পার্টি চেয়ারম্যান বিলওয়াল ভুট্টো জারদারি।

এক টুইট বার্তায় তিনি বলেছেন, আদালত অনেক ধৈর্য ধরেছে। সাবেক ডেপুটি স্পিকার, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি অনাস্থা ভোট খারিজ করে সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। ইমরান খান রাজনৈতিক স্বার্থে সিকিউরিটি কাউন্সিলকে ব্যবহার করতে চেয়েছেন। প্রতিষ্ঠানগুলো এখন নিরপেক্ষ। ইমরান লুকানোর পথ পাবেন না। -বিবিসি