ভারতে কমতে পারে গমের উৎপাদন, মূল্যবৃদ্ধির শঙ্কা

গম ও অন্যান্য খাদ্যশস্য পাকার সময় ভারতের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে আরেকটি তীব্র তাপপ্রবাহ শস্যের ব্যাপক ক্ষতি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন দেশটির কৃষকরা। তারা বলছেন, চলতি মাসের তাপপ্রবাহের ফলে দেশটির গম উৎপাদন টানা দ্বিতীয় বছরের মতো হ্রাস পেতে পারে।

গত বছর একই ধরনের তাপপ্রবাহের কারণে ভারতে গম ও অন্যান্য খাদ্যশস্যের উৎপাদন ব্যাপকভাবে হ্রাস পায়। যে কারণে দেশটির সরকার গম-আটা ও অন্যান্য কিছু খাদ্যশস্যের রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এর প্রভাব পড়ে বিশ্ববাজারে, লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে গম ও গমজাত অন্যান্য খাদ্যপণ্যের দাম।

চলতি মার্চে দেশটির উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে তীব্র তাপপ্রবাহ শুরু হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন দেশটির আবহাওয়াবিদরা। এই তাপপ্রবাহের কারণে সময়ের আগেই গম পরিপক্ক হয়ে যেতে পারে। এর ফলে কমে যেতে পারে গমের উৎপাদন। গত বছর রপ্তানি নিষিদ্ধ করার পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম শস্য উৎপাদনকারী এই দেশটি এবার আমদানির অনুমতি দিতেও বাধ্য হতে পারে।

দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গমের ব্যাপক উৎপাদন হয়, এমন কিছু অঞ্চলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ফেব্রুয়ারিতে কয়েক দিনের জন্য ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছিল; যা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় প্রায় ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।

গত ফেব্রুয়ারিতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড হয়েছে ভারতে। আবহাওয়া অফিস সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, মার্চ মাসে আরেকটি তাপপ্রবাহের সম্মুখীন হতে পারে দেশ। আর এই তাপপ্রবাহ দেখা দিতে পারে ভারতের গম উৎপাদনকারী মধ্য এবং উত্তরাঞ্চলীয় প্রধান প্রধান রাজ্যগুলোতে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের পররাষ্ট্র কৃষি পরিষেবা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের মার্চে একই ধরনের তাপপ্রবাহের প্রভাবে ভারতের গম উৎপাদন কমে ১০ কোটি টনে দাঁড়ায়; যা স্থানীয় চাহিদার ১০ কোটি ৩৬ লাখ টনের তুলনায় কম।

গত মাসে ভারতের কৃষি বিভাগের এক পূর্বাভাষে চলতি বছর দেশটিতে গমের উৎপাদন ঘুরে দাঁড়াতে পারে বলে আশা প্রকাশ করা হয়। ওই সময় ২০২৩ সালে দেশটিতে গম উৎপাদন রেকর্ড ১১ কোটি ২২ লাখ টন হতে পারে বলে জানানো হয়। কিন্তু দেশটির বাণিজ্যিক সংস্থাগুলো তাপপ্রবাহের কারণে গমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।

২০২২ সালে ভারতের সরকারের গম কেনার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। দেশটির সরকার গত বছর লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৫৩ শতাংশ গম কিনতে পেরেছিল। এর ফলে স্থানীয় বাজারে গমের দাম ব্যাপক বৃদ্ধি পায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে ভারতের সরকারি খাদ্য সংস্থা (এফসিআই) নিজেদের মজুত থেকে ৫০ লাখ টন গম বাজারে ছেড়েছিল।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //