পাকিস্তানে সিইসি ও প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ দাবি

গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে নির্বাচনের পর থেকেই একের পর এক দৃশ্যের অবতারণা হচ্ছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পিটিআই নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তুলেছে। আরও কয়েকটি দল একই অভিযোগ করে আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচনে জালিয়াতি নিয়ে বোমা ফাটান রাওয়ালপিন্ডি ডিভিশনের কমিশনার লিয়াকত আলী চাতা। রীতিমতো সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচনে কারচুপির কথা প্রকাশ করেন তিনি। সেই সঙ্গে নিজের দায় স্বীকার করে পদত্যাগও করেন এ কর্মকর্তা। 

তার এই স্বীকারোক্তি পাকিস্তানজুড়ে নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত করেছে। আর এরই জেরে উঠেছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের দাবি।

আজ রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সদ্যসমাপ্ত সাধারণ নির্বাচনে কারচুপিতে নিজের ভূমিকা সম্পর্কে মিডিয়ার সামনে রাওয়ালপিন্ডির কমিশনারের স্বীকারোক্তিমূলক বিবৃতি পাকিস্তানজুড়ে নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত করেছে। পরে প্রধান বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) এবং তার সহযোগীরা প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ দাবি করেছে।

এছাড়া পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) এই অভিযোগের তদন্ত দাবি করেছে। তবে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) রাওয়ালপিন্ডির এই কমিশনারের মানসিক অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

পিটিআইয়ের মুখপাত্র দাবি করেছেন, সাধারণ নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি নিয়ে রাওয়ালপিন্ডির কমিশনার লিয়াকত আলী চাতা যে কথা ফাঁস করেছেন তাতে সিইসি সিকান্দার সুলতান রাজা এবং প্রধান বিচারপতি কাজী ফয়েজ ঈসাকে পদত্যাগ করা উচিত।

তিনি বলেন, নির্বাচনে কারচুপি নিয়ে লিয়াকত আলী চাতার এই বক্তব্য পিটিআই-এর অবস্থানকেই সমর্থন করছে যে, কীভাবে রাতের অন্ধকারে জনসাধারণের ম্যান্ডেট চুরি করা হয়েছে। একইসঙ্গে তার এই বক্তব্য নির্বাচনী কারচুপির সাথে জড়িত অন্যদের আসল চরিত্রও প্রকাশ করে দিয়েছে।

এর আগে শনিবার রাওয়ালপিন্ডির কমিশনার লিয়াকত আলী চাতা তার পদ থেকে সরে দাঁড়ান। পাকিস্তানে ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে জালিয়াতি হয়েছে দাবি করে তিনি তার পদ থেকে ইস্তফা দেন।

এক সংবাদ সম্মেলনে লিয়াকত আলী বলেন, নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি হয়েছে ও তিনি নিজেও এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন। শুধু অনিয়ম ও ফলাফল ঘোষণায় বিলম্ব হওয়াকে তিনি নিতান্তই কম বলে উল্লেখ করে দাবি করেন, নির্বাচনে অনেক বড় জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে।

তিনি আরও বলেন, অনেক স্বতন্ত্র প্রার্থী আছেন যারা ৭০ থেকে ৮০ হাজার ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন এবং তাদের আমরা জাল ভোট দিয়ে হারিয়ে দিয়েছি। আবার এমন অনেকে আছেন যারা হেরে যেতেন; কিন্তু তাদের আমরা ভোট জালিয়াতি করে জিতিয়ে দিয়েছি।

পাকিস্তানে ভোট গ্রহণ শেষ হয় ৮ ফেব্রুয়ারি। এরপর চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশে সময় লাগে তিন দিন। কিন্তু এতে দেখা যায়, এককভাবে সরকার গঠনের জন্য কোনো দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। এমনকি নির্বাচন পরবর্তী জোট গঠন নিয়েও জটিল পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে। কোনো দলই ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারছে না।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //