ভারতের জায়গা নিজেদের দাবি করলো চীন

প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বা এলএসি নিয়ে চীনের সঙ্গে ভারতের দ্বন্দ্ব কিছুদিন আলোচনার বাইরে থাকলেও সম্প্রতি অরুণাচল প্রদেশের কয়েকটি জায়গার নাম নিজেদের মতো করে রাখে চীন। সেই নাম প্রকাশও করা হয় রবিবার। এ নিয়ে এবার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ভারত।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, অরুণাচল প্রদেশকে নিজেদের বলে দাবি করে আসছে চীন। ইতিমধ্যে এর নামও দিয়েছে তারা জ্যাংনান। রবিবার দেশটির রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অরুণাচল প্রদেশের ৩০টি জায়গার নতুন নাম দিয়েছে চীন।

নাম ঘোষণা করা ৩০টি জায়গার মধ্যে রয়েছে ১২টি পাহাড়, চারটি নদী, একটি হ্রদ, একটি পাহাড়ের পথ, একটি জমি ও ১১টি আবাসিক এলাকা। নাম প্রকাশ করার পাশাপাশি এসব এলাকার আধুনিক মানচিত্রও প্রকাশ করেছে বেইজিং।

উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় এই প্রদেশ নিয়ে চীনের এই কার্যক্রমের তীব্র বিরোধিতা করেছে ভারত। গতকাল সোমবার (১ এপ্রিল) দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, অরুণাচল প্রদেশ সবসময় ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলো, আছে এবং থাকবে।   

এর আগে ২০১৭ সালে প্রথম অরুণাচল প্রদেশের ৬টি লোকেশনের নাম প্রকাশ করে চীন। এরপর ২০২১ সালে প্রকাশ করা হয় আরেকটি তালিকা। তাতে ১৫টি জায়গার নাম প্রকাশ করা হয়। ২০২৩ সালে প্রকাশ করা হয় ১১টি নাম।  

সীমান্ত নিয়ে ভারত ও চীনের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। প্রায়ই চরম আকার ধারণ করে এই বিরোধ। গত বছর অরুণাচল প্রদেশ নিয়ে শুরু হয় দ্বন্দ্ব। চীনের প্রকাশিত মানচিত্র নিয়েই মূলত এই দ্বন্দ্ব। ২৮ আগস্ট প্রকাশিত চীনের স্ট্যান্ডার্ড মানচিত্রে দেখা যায়, ভারতের অরুণাচল ও আকসাই চিন অঞ্চল চীনের মানচিত্রের ভেতরে। 

চীনের রাষ্ট্র মালিকানাধীন সংবাদ সংস্থা গ্লোবাল টাইমস বলছে, ২০২৩ সালের মানচিত্রে অরুণাচল ও আকসাই চিন অঞ্চল ছাড়াও দক্ষিণ চীন সাগরের বিতর্কিত অঞ্চল ও তাইওয়ানকেও চীনের ভেতরে রাখা হয়েছে। চীন ছাড়াও বিশ্বের অন্যান্য দেশের এলাকা বিবেচনায় রেখেই মানচিত্রটি বানানো হয়েছে বলে দাবি করা হয় প্রতিবেদনে।

এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ভারত। প্রতিক্রিয়ায় এক ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর বলেন, এই ধরনের ভ্রান্তি ছড়ানো ম্যাপ প্রকাশের অভ্যাস চীনের রয়েছে। এভাবে ম্যাপ পরিবর্তন করে কিছুই হবে না। ওই ভূখণ্ড ভারতের ছিল, ভারতেরই রয়েছে।

এস জয়শংকর বলেন, চীন ওদের ম্যাপে এমন ভূখণ্ডকে অন্তর্গত করেছে, যা আদৌ ওদের নয়। এটা ওদের পুরোনো অভ্যাস। ভারতীয় ভূখণ্ডকে নিজেদের ম্যাপে ঢুকিয়ে দিলেই কিছু পরিবর্তন হয় না। ভারত সরকার নিজেদের সীমান্ত সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত। আজগুবি দাবি করলেই অন্যের ভূখণ্ড ওদের হয়ে যাবে না।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //