বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে করোনার আঘাত

করোনাভাইরাস সারাদুনিয়ার মানুষের কাছে এখন মুর্তিমান এক আতঙ্কের নাম। ডিসেম্বরের শুরুর দিকে চীনের উহান প্রদেশ থেকে এই ভাইরাসের উৎপত্তি হয়ে সেটি এখন ছড়িয়ে পড়েছে সারা দুনিয়ায়। অনেকটা অপ্রস্তুত অবস্থায় থেকে সারা দুনিয়ার মানুষের ঘুম হারাম করে দিয়েছে।

এখনো ভ্যাকসিন তৈরি না হওয়ার কারণে বেড়েই চলেছে প্রাণহানির ঘটনা। এই মহামারি থেকে রক্ষা পায়নি কোনো শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিশেষ যারা সম্মুখযোদ্ধা তাদের মধ্যে আক্রান্ত রয়েছে আশঙ্কাজনকহারে। বাদ যায়নি মাঠের খেলায় মানুষের মন জয় করা খেলোয়াড়রাও।

অন্য যে কোনো খেলার চেয়ে ফুটবলারদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে বেশি। যার মধ্যে বেশিরভাগই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছেন। তবে খেলোয়াড়দের ভাইরাসে আক্রান্তের চেয় বড় ক্ষত হয়ে থাকছে দীর্ঘদিন কোনো ক্রীড়া আসর মাঠে না গড়ানো।

পাওলো মালদিনি আক্রান্ত হলেন


ইতালির কিংবদন্তিতুল্য খেলোয়াড় পাওলো মালদিনিকেও ছাড়েনি করোনা। শুধু তিনি একাই নন ছেলে দ্যানিয়েলের শরীরও প্রমাণ দিয়েছে করোনা পজিটিভ হওয়ার। এসি মিলানের এই লিজেন্ডারী যদিও সুস্থতার পথেই ছিলেন। ছেলে দ্যানিয়েলের এই মৌসুমে মিলানে অভিষেক হয়েছে।

মিলান এক বিবৃতিতে এ খবর নিশ্চিত করে বলেছে, ‘করোনায় পজিটিভ হওয়া এক ব্যক্তির সংস্পর্শে থাকার কথা জানার পরপরই পাওলো মালদিনির শরীরে ভাইরাসটির উপসর্গ দেখা গিয়েছিল।তার করোনা পরীক্ষা করানো হয় এবং এর অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। তার ছেলে দ্যানিয়েলের ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার ঘটেছে।’

মিলানেই ফুটবল ক্যারিয়ারের পুরোটা কাটিয়েছেন মালদিনি। পরে বাবা ও ছেলে দু’জনেরই করোনা নেগেটিভ আসে বলে জানা গেছে। 

পাবলো দিবালাকে পাড়ি দিতে হয়েছে কঠিন পথ


চীনের পর সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত দেশ হিসেবে নাম ওঠে ইতালির। সেখানে জুভেন্টাসের ফুটবলার পাবলো দিবালার নামও সবার ওপরে উঠে আসে। একাধিকবার আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে ফিরে এসে ফুটবল দুনিয়ার আলোচিত চরিত্রে রূপান্তরিত হন তিনি। 

মার্চেই জুভেন্টাসের আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার দিবালাসহ আরও দুই সতীর্থ দ্যানিয়েল রুগানি ও ব্লেইস মাতুইদির করোনা পজেটিভ হয়। মাতুইদি আবার ফ্রান্সের হয়ে বিশ্বকাপ জিতেছেন। রুগানি ও মাতুইদি সুস্থ হয়ে উঠলেও করোনা থেকে মুক্তি পাননি দিবালা। অবশেষে মার্চ মাসের পর মে মাসে এসে করোনা থেকে মুক্তি পেলেন দিবালা।

এই লড়াইয়ে বান্ধবীকে পাশে পেয়েছিলেন তিনি। দিবালা টুইটার পোস্টে দুই হাত মেলে ধরা এক ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘আমার চেহারা সবকিছু বলছে যে, অবশেষে আমি কোভিড-১৯ থেকে মুক্তি পেয়েছি।’

এর পাশাপাশি আরেকটি পোস্টে লিখেছেন, ‘অনেকে গত সপ্তাহ ধরে এ নিয়ে কথা বলে যাচ্ছেন; কিন্তু আমি আপনাদের নিশ্চিত করছি যে আমি কোভিড-১৯ কাটিয়ে উঠতে পেরেছি। সবাইকে আবারও অনেক ধন্যবাদ আমাকে সমর্থন জানানোর জন্য’। শুরুতে একা একা অনুশীলন করলেও ১৭ মে থেকে দলগত অনুশীলনে যোগ দেন। আর এখন তো নিয়মিতই মাঠ মাতাচ্ছেন দিবালা। 

সেবা করতে করতে নিজেই আক্রান্ত শহীদ আফ্রিদি


করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরুর হওয়ার পর পরই লড়াইয়ে নামেন সাবেক পাকিস্তানি অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি। জুন মাসের মাঝামাঝি আক্রান্ত হওয়ার পর সম্পূর্ণ সুস্থ হয়েছেন এই সুপারস্টার। আক্রান্ত হওয়ার খবরটা টুইটারে জানিয়েছিলেন। এরপর কোভিড-১৯ পরীক্ষায় নেগেটিভ হওয়ার খবরটাও টুইটারেই দিয়েছেন আফ্রিদি।

কন্যাসহ একটি ছবি দিয়ে টুইট করেছেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, আমাদের আগের পরীক্ষায় কোভিড-১৯ পজিটিভ আসার পর এবার আমার স্ত্রী এবং দুই কন্যা আকসা ও আনসাসহ সবার পুনরায় পরীক্ষা করা হয়েছে। এখন আমরা সবাই মুক্ত। সবার শুভ কামনার জন্য ধন্যবাদ। সর্ব শক্তিমান আপনাদের সবাইকে সুস্থ রাখুক’। পাকিস্তানে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই এর বিরুদ্ধে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছিলেন আফ্রিদি। তার সংস্থা ‘শহীদ আফ্রিদি ফাউন্ডেশন’ পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে ত্রাণ বিতরণ করে যাচ্ছে।

এমনকি অসহায় মানুষদের সহায়তায় বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহীম তার প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির ব্যাট নিলামে তোলার উদ্যোগ নিলে সেটা প্রায় ১৭ লাখ টাকায় কিনে নেন আফ্রিদি।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //