অনেকটা অপ্রস্তুত পরিস্থিতিতে বাজে সময় শুরু, তাতে বেকার হয়ে পড়েছেন বাংলাদেশের বক্সিং খেলোয়াড়রা। কীভাবে সামনের সময়গুলো পার করবেন সেই চিন্তায় অনেকটা ঘুম হারাম তাদের। দেশের খেলাধুলার ইতিহাসে বড় ধরনের ‘নিষেধাজ্ঞায়’ পড়েছে বক্সাররা।
বলা যায় অনেকটা অনিশ্চিত পরিস্থিতির দিকেই ধাবিত তারা। কর্মকর্তাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণেই সমস্যা গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। যে কারণে বক্সারদের মধ্যে হতাশা বেড়েই চলেছে। তৈরি হয়েছে অনিশ্চিয়তা। এ থেকে মুক্তি চাইছেন বোক্সাররা।
আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে এখন অখণ্ড অবসর বক্সিং খেলোয়াড়দের। বাংলাদেশের খেলাধুলার ইতিহাসে অনেকটা বিরল এ ঘটনার সাক্ষী হয়েছে খেলাটি। এরই মধ্যে অভিভাবকহীন হয়ে প্রায় পাঁচ মাস পার করেছে। নতুন করে আরও ছয় মাস স্থগিতাদেশ দিয়েছেন আদালত। স্থগিতাদেশ এসেছে গত এপ্রিল মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের উপর। সেই নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ীরা ফেডারেশনের দায়িত্ব নিতে পারছেন না বলেই এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, আরও ছয় মাস তারা তা পারবেন না। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, মাসের পর মাস একটা ফেডারেশনের কার্যক্রম তাহলে কীভাবে পরিচালিত হবে? খেলা নেই, খেলোয়াড়রা অনুশীলন করতে পারছেন না। এ বিষয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব পরিমল সিংহ আশার কথা শোনাতে পারেননি, ‘আমাদের জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের আইন বিভাগ বিষয়টি সমাধানের সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে। সবচেয়ে ভালো হয় যদি দুই পক্ষকে একসঙ্গে বসিয়ে কোনো সমঝোতায় আসা যায়। নইলে অ্যাডহক কমিটি দিয়েই একটা সমাধান করতে হতে পারে।’
গত এপ্রিলের নির্বাচন নিয়ে মূলত সাবেক দুই সাধারণ সম্পাদকের মধ্যকার দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসে। একটা পর্যায়ে এসে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন সর্বশেষ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম তুহিন। কিন্তু ভোটার তালিকায় অস্বচ্ছতার অভিযোগ এনে ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কুদ্দুস খান আদালতে গেলে নির্বাচনের ফলাফলের উপর স্থগিতাদেশ চলে আসে। সেই থেকে বক্সিং ফেডারেশনের সব কার্যক্রম বন্ধ।
ফেডারেশন তালাবদ্ধ। আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে পুরানা পল্টনের মোহাম্মদ আলী বক্সিং স্টেডিয়ামের মূল ফটকে তালা। তালা অফিস কক্ষেও। অথচ সামনেই দক্ষিণ এশিয়ান (এসএ) গেমস। এখন পুরোদমে প্রস্তুতি নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সব কার্যক্রম বন্ধ থাকায় খেলোয়াড়রা হতাশ-ক্ষুব্ধ।
মাজহারুল ইসলাম তুহিন আগের কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাবেরও সাধারণ সম্পাদক তিনি। এখন বক্সিংয়ে ক্যাম্প করছেন এই ভিক্টোরিয়া ক্লাবের ৩০ ফুটবলার। সেখানেই তাদের রান্না ও থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা। ক্যাসিনো কেলেঙ্কারির কারণে ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিংয়ের ক্লাবঘর তালাবদ্ধ থাকায় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অনুমতিতে ফুটবলারদের রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তুহিন।
এই অচালবস্থার অবসান না হলে সামনে আরও খারাপ কিছুই অপেক্ষা করছে বক্সারদের জন্য।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh