মনোবিদে ভরসা করে শুটিংয়ে পদক জয়ের স্বপ্ন

সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও শুধু মনোসংযোগে ব্যাঘাত ঘটার কারণে অনেক সময় পদক জেতার খুব কাছ থেকে ফিরে আসতে হয় খেলোয়াড়দের। সব খেলাতেই এমনটি হতে পারে। তবে সেটি উৎরাতে পারলে আর মনের চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হয় না। কিন্তু বাংলাদেশের শুটাররা তা করতে পারছেন না। সে কারণেই মনোবিদের পরামর্শ নিতে হয়েছে বাংলাদেশ শুটিং স্পোর্ট ফেডারেশনকে। পিস্তল কিংবা রাইফেল হাতে নিশানা ভেদ করতে করতে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে খেই হারিয়ে ফেলতে দেখা যায় শুটারদের। সে কারণেই হতাশা ঘিরে ধরে আব্দুল্লাহ হেল বাকী, শাকিল আহমেদ, আরমিন আশা, কামরুন নাহার কলিদের। 

এবার সেই সমস্যা থেকে বের হতে মনোবিদের অধীনে ক্লাসের আয়োজন করিয়েছে ফেডারেশন। মূলত শুটিং রেঞ্জে দাঁড়ালে কীভাবে আত্মবিশ্বাসী বজায় রেখে খেলা এবং একটি শট খারাপ হলেও মনোবল ধরে রাখার কৌশল শেখানো হয়। পাশাপাশি সঠিক খাদ্যাভ্যাসসহ নানা বিষয়ে শুটারদের দিকনির্দেশনা দেন ফিজিওথেরাপিস্ট, সাইকোলজিস্ট ও ইয়োগা কোচ জিল্লুর রহমান এবং মৌসুমী সাবিনা। এশিয়ান গেমসের আগে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার ওপর বিশেষ এই কর্মশালাটিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন শুটাররা। 

একটা শট খারাপ হলেই ভেঙে পড়তে দেখা যায় শুটারদের। মনোবল হারানোর কারণে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সম্ভাবনা জাগিয়েও একাধিক আসরে পদক হাতছাড়া হওয়ার রেকর্ড রয়েছে বাংলাদেশের। এই অভিজ্ঞতা বেশি হয়েছে দেশসেরা শুটার আব্দুল্লাহ হেল বাকীর। তাই কমনওয়েলথ গেমসে রৌপ্য পদক জিতলেও সেই ধারাটা এসএ গেমসের মতো আসরে পরে ধরে রাখতে পারেননি তিনি। বড় মঞ্চে শুটারদের অনেকের স্নায়ুর চাপ ধরে না রাখার জন্য মনোবিদ আনার পরিকল্পনা দীর্ঘদিন ধরেই ছিল ফেডারেশনের। 

এশিয়ান গেমসের এবারের আসরে ১৫ জন শুটার দেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন। ইরানি কোচ জায়ের রেজাইয়ের অধীনে সন্তোষজনক প্রস্তুতি হয়েছে শুটারদের। তবে ম্যাচের আগে যতই প্রস্তুতি নেওয়া হোক না কেন, বারবার বড় আসরে স্নায়ুর চাপে ভোগেন বাংলাদেশের প্রতিযোগীরা। মানসিকভাবে শুটারদের এগিয়ে নিতে ব্যায়াম, খাদ্যাভ্যাসসহ প্রতিটি বিভাগে মনোনিবেশ নিতে বলেছেন দুই মনোবিদ। জিল্লুর রহমান শুটারদের সম্পর্কে বলেন, ‘সব খেলাকে এক পাল্লায় মাপার কোনো সুযোগ নেই। শুটিংয়ে মানসিক বিষয়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি খাবার, ব্যায়ামের প্রতিও নজর দিতে হবে।’ আরেক মনোবিদ মৌসুমীও একইভাবে মনের জোর বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। 

আর স্বল্প সময়ের জন্য হলেও এই কর্মশালা নিয়ে বেশ আশাবাদী বাকী বলেন, ‘আমার প্রিয় ১০ মিটার এয়ার রাইফেল ছেড়ে ৫০ মিটারে খেলার কারণে এবারের এশিয়ান গেমসের জন্য চ্যালেঞ্জটা একটু বেশি। অল্প সময়ের জন্য হলেও এই কর্মশালা আমাদেরকে অনেক সাহায্য করবে।’ 

এশিয়ান গেমসের আগে মনোবিদ নিয়ে প্রশিক্ষণে পদক জয়ের ব্যপারে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন শুটাররা। বিশেষ করে ১৯৯০ ও ২০০২ সালের কমনওয়েলথ গেমসে স্বর্ণজয়ের মতো সুখস্মৃতি ফিরিয়ে আনতে চান তারা।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //