আকাশপথে পাঁচদিনের মধ্যে ৫০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আসছে: বাণিজ্যমন্ত্রী

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, সরকার বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে আকাশ ও সমুদ্রপথে পেঁয়াজ আমদানি শুরু করেছে। আকাশপথে আমদানি করা ৫০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ পাঁচদিনের মধ্যে দেশে এসে পৌঁছাবে।

তিনি জানান, সমুদ্রপথে ১২ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজও দেশে পৌঁছাতে শুরু করেছে। এছাড়া দেশি পেঁয়াজ বাজারে উঠেছে। পেঁয়াজের মূল্যও দ্রুত গতিতে কমছে।

সচিবালয়ে গতকাল মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এ তথ্য জানান। বাণিজ্য সচিব মোহাম্মদ জাফর উদ্দীন ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রী বলেন, মিসর থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজ সৌদি এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজ যোগে ঢাকার পথে রয়েছে। পেঁয়াজবাহী প্রথম সৌদি এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ এসভি ৩৮০২ যোগে মিসরের কায়রো থেকে জেদ্দা হয়ে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আজ বুধবার গভীর রাতে পৌঁছাবে।

তিনি বলেন, এরপর প্রতিদিন প্যাসেনজার ও কার্গো ফ্ল্যাইটে পেঁয়াজ অব্যাহতভাবে ঢাকায় আসবে। এসব পেঁয়াজ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ট্রেডিং করপোরেশন অফ বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করা হবে। টিসিবির ট্রাক সেল ও নিয়োজিত ডিলারের মাধ্যমে সারাদেশে এ পেঁয়াজ বিক্রি করা হবে। আনার খরচ যা-ই পড়ুক না কেন, সরকার এ ক্ষেত্রে ভর্তুকি দেবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, পেঁয়াজ আমদানি বৃদ্ধির জন্য সরকার শুরু থেকেই আমদানিকারকদের মাধ্যমে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ আমদানির প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে। ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করলে ও মিয়ানমার পেঁয়াজের মূল্য কয়েকগুণ বৃদ্ধি করলে বিকল্প হিসেবে মিসর ও তুরস্ক থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু করা হয়। সমুদ্রপথে পেঁয়াজ আসতে সময় বেশি লাগার কারণে এখন তা আকাশপথে আমদানি করা হচ্ছে। 

তিনি আরো বলেন, দেশে দৈনিক প্রায় ছয় হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজের প্রয়োজন হয়। দেশের মজুত ও আমদানিকৃত পেয়াঁজ মিলে তা পর্যাপ্ত হবে। এরই মধ্যে দেশীয় পেঁয়াজ পর্যাপ্ত বাজারে আসবে। সামনে কোনো সমস্যা হবে না।

টিপু মুনশি বলেন, আমাদের প্রতি বছর ৮ থেকে ১০ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। এর বেশির ভাগই প্রতিবেশি রাষ্ট্র ভারত থেকে আমদানি করা হয়। এখন আমদানি নির্ভর না থেকে চাহিদার পুরো পেঁয়াজই দেশে উৎপাদনের বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এজন্য কৃষকদের ভর্তুকি ও উৎসাহ প্রদান করা হবে। এছাড়া পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্য বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, যাতে পেঁয়াজ সারা বছর সংরক্ষণ করা যায়।

তিনি বলেন, মৌসুমের সময় পেঁয়াজ আমদানির কারণে যাতে দেশের কোনো কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সে সময় পেঁয়াজ আমদানির উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হবে। কৃষকরা যাতে পেঁয়াজের উপযুক্ত মূল্য পান, তা নিশ্চিত করা হবে।

ভারত গত ২৯ সেপ্টেম্বর রপ্তানি বন্ধ করার পর ৫০ দিন পার হয়ে গেছে, এখন কেন তোড়জোড় করে উড়োজাহাজের মাধ্যমে পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে? সংকট বুঝতে এত সময় লাগার দায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে টিপু মুনশি বলেন, ‘ভারতের পক্ষ থেকে আমাদের বলা হয়েছিল ২৪ অক্টোবর মহারাষ্ট্রের নির্বাচনের পর রপ্তানির দ্বার তারা খুলে দেবে। পরে সেটি আর হয়নি। এরপরই আমরা অন্য দেশ থেকে পেঁয়াজ আনার সিদ্ধান্ত নিই।’

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //