করোনা মোকাবেলায় বাংলাদেশকে সহায়তা করছে ইউনিলিভার

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাভাইরাসকে (কভিড-১৯) মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে গত মার্চে, এর ঠিক পরপরই ইউনিলিভার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এই মহামারির সংক্রমণ প্রতিরোধ ও মোকাবেলায় সহায়তা করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে শুরু করে।

ইউনিলিভার কভিড-১৯ মোকাবেলায় বিশ্বব্যাপী ৫০ মিলিয়ন বা পাঁচ কোটি ইউরো মূল্যের পণ্যসামগ্রী অনুদান করার প্রতিশ্রুতি প্রদান করে। করোনাকালে যাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তাঁদের অনুদান প্রদান করার জন্য এসব পণ্যসামগ্রীর অধিকাংশই ইউনিসেফ (ইউনাইটেড নেশন্স ইন্টারন্যাশনাল সিল্ড্রেন্স এমার্জেন্সি ফান্ড) এবং জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার বা ইউএনএইচসিআরের (ইউনাইটেড নেশন্স হাই কমিশনার ফর রিফিউজিস) মাধ্যমে প্রদান করছে ইউনিলিভার।

বৈশ্বিক অংশীদারিত্বের আওতায় ইউনিলিভার এবং ইউনিসেফ বাংলাদেশ ২৫টি সরকারি হাসপাতাল ও ৩০টি চা বাগানের শ্রমিকসহ দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে স্বাস্থ্য ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার পণ্যসামগ্রী প্রদান করেছে।

ইউনিলিভারের পণ্যসামগ্রী প্রদান করার ব্যাপারে ডিরেক্টারেট জেনারেল অব হেলথ্ সার্ভিসেস (ডিজিএইচএস) বা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরামর্শক্রমে ইউনিসেফ সারাদেশে কভিড-১৯ চিকিৎসায় নিয়োজিত ২৫টি সরকারি হাসপাতাল নির্বাচন করে। ২৫টি হাসপাতালের মধ্যে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ডিএমসিএইচ), মুগ্দা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হাসপাতাল রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত। বাকি ২০টি সারা দেশে বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত।

অন্যদিকে চা বাগানের শ্রমিকেরা সমাজের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অন্যতম, যারা করোনাভাইরাসের এই ঝুঁকির মুখে রয়েছেন। কারণ তাঁদের জন্য পানি, স্যানিটেশন ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য সুবিধা পাওয়ার সুযোগ এখন পর্যন্ত বেশ সীমিত। চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে ইউনিসেফ অনেক বছর ধরেই বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশন এর সাথে একযোগে কাজ করে আসছে। ইউনিলিভার ও ইউনিসেফের যৌথ উদ্যোগের অংশ হিসেবে ইউনিসেফ ও বিটিএ ৩০টি চা বাগানকে নির্বাচিত করে সেগুলোর শ্রমিকদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও পারসনাল হাইজীন বা ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সুরক্ষার পণ্যসামগ্রী অনুদান হিসেবে পৌঁছে দেয়া হয়।

ইউনিলিভার এই অনুদানের আওতায়  ইউনিসেফের ওয়াশ প্রোগ্রামে বার সোপ বা সাবান দেয়া হয়, যাতে গ্রামের প্রান্তিক মানুষেরা স্যানিটেশন অ্যান্ড হাইজীন বা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় মনোযোগ দিতে পারেন। এতে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার কম হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ইউনিলিভারের প্রদান করা সাবানগুলো ইউনিসেফ তাদের সুদূর প্রসারিত ওয়াশ প্রোগ্রামের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে বিতরণ করবে। ইউনিসেফের ওয়াশ প্রোগ্রাম দেশে ঝুঁকির মধ্যে থাকা জনগোষ্ঠীর মধ্যে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সংক্রান্ত আচরণের উন্নতি ঘটানোর লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।

ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেডের (ইউবিএল) চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেদার লেলে বলেন, যতটা সম্ভব ও যত বেশি মানুষকে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সহায়তা করাটা আমাদের একটি বড় দায়িত্ব। কভিড-১৯ চ্যালেঞ্জের ভয়াবহতা এবং বিভিন্ন পর্যায়ে এই সমস্যা মোকাবেলার বিষয় বিবেচনা করে আgরা সরকার, স্বাস্থ্য খাতের প্রতিষ্ঠান, বাস্তবায়নকারী সংস্থা ও সুশীল সমাজের সাথে যৌথ উদ্যোগে কাজ করে চলেছি। ইউনিসেফের সাথে মিলে আমরা সরকারের সাথে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যাতে দেশের সুদূর প্রসারিত এলাকাজুড়ে লাইফবয় সাবান, হুইল ডিটারজেন্ট ও ডোমেক্স ক্লিনারের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী পৌঁছে দেয়া যায়। কারণ এসব পণ্যই এখন মানুষের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।
 
বাংলাদেশে ইউনিসেফের ডেপুটি রিপ্রেজেন্টেটিভ ভীরা ম্যানডোসা বলেন, কোনো একটি সংস্থা, সংগঠন বা খাতের একার পক্ষে করোনা মহামারির মোকাবেলা করা সম্ভব নয়। এই সঙ্কটকালে সরকার ও ব্যবসায় খাতের কৌশলগতভাবে যৌথ উদ্যোগ নেয়া গুরুত্বপূর্ণ। ইউনিলিভারের দেয়া স্বাস্থ্য সুরক্ষার পণ্যগুলো ইউনিসেফের জন্য বাংলাদেশে কভিড-১৯ মোকাবেলায় বেশ সহায়ক হচ্ছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //