ভোজ্যতেলের মূল্য নির্ধারণে কাজ করছে কমিটি

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সমন্বয় করে শিগগিরই ভোজ্যতেলের যৌক্তিক মূল্য কোন তারিখে কেমন হওয়া উচিত তা ঠিক করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটি কাজ করছে।

তিনি বলেন, একইসাথে তেল আমদানিতে সরকারের রাজস্ব না কমিয়ে চারস্থানে শুল্ক নেয়ার পরিবর্তে একস্থানে নেয়ার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআরকে) আবারো চিঠি দেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

আজ রবিবার (২৪ জানুয়ারি) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীদের সাথে সভা শেষে এ তথ্য জানান তিনি।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ভোজ্যতেল নিয়ে সারা দেশে সঙ্কট তৈরি হয়েছে। আমাদের তেলের বাজার ৯০ শতাংশ আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর নির্ভর করে। যখন সেখানে দাম বাড়ে তখন দেশের বাজারেও তার প্রভাব পড়ে। ছয় মাস আগের ৭০০ ডলারের তেল বর্তমানে ১১৫০ ডলারে দাঁড়িয়েছে। এতে দেখা যায় ৭৫ শতাংশ দাম বেড়েছে।

দেশে দাম এতো বাড়েনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটাকে কিভাবে সমন্বয় করা যায়, সেজন্য দাম নির্ধারণের যে কমিটি আছে তাদেরকে বলা হয়েছে তারা চুলছেড়া বিশ্লেষণ করে একটা মানসম্মত দামের তালিকা করে দেবে। কারণ আজকে যে দাম নির্ধারণ করে দেব দুইদিন পর সে দাম কমে গেলে তখন আবার সকলেই লেখালেখি করবে। সেজন্য প্রতিমাসে একটি সভা করে একটি যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণের আইডিয়া দেবে আমরা সেটা নিয়ে কাজ করছি। তবে এই বিষয়টি সহজ নয়।

তিনি আরো বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম সাতদিন পরে কমে গেছে। এজন্য প্রতিনিয়ত ফলোআপ রাখতে হবে। আর একটা বিষয় আজকে যে পণ্যটা বুক করেন সেটা আমাদের দেশে আসতে তিন মাস লাগে। আজকের আমাদের বাজারে কি দাম, সেখানে কি দাম সেটার একটা প্রভাবে বাজারে পড়ে। এসব বিষয়ে নজর রাখার জন্য আমাদের কমিটি, ট্যারিফ কমিশন, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিদের নিয়ে চুলচেড়া বিশ্লেষণ করে একটা উপায় বের করবো।

টিপু মুনশি বলেন, একই সাথে রমজান মাসকে সামনে রেখে শুধুমাত্র তেল বলে নয়, সব পণ্য নিয়ে চিন্তা করছি। রমজানে যাতে মানুষ সাশ্রয়ী দামে পণ্য পায় সে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

ভোজ্যতেল আমদানি শুল্কের বিষয়ে ব্যবসায়ীদের দাবি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় বিষয় হলো ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে দাবি তোলা হয়েছে ভোজ্যতেলে তিন বা চার স্তরে যে ডিউটি, ভ্যাট, ট্যাক্স নেয়া হয়, সেটা সরকারের রাজস্ব না কমিয়ে এক জায়গা থেকে নেয়ার ব্যবস্থা করা। এতে করে ব্যবসায়ীদের সময় বাঁচবে, হয়রানি কমবে। পাশাপাশি সরকারেরও রাজস্ব কমবে না। ভোজ্য তেলে আগে ১৫ শতাংশ শুল্ক নেয়া হতো একটা স্থানে। এখন চার জায়গায়। ব্যবসায়ীরা চাচ্ছে সরকারের রাজস্ব না কমিয়ে সেটা আবার এক জায়গায় নিয়ে আসতে।

তিনি আরো বলেন, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমরা আগেই এনবিআরকে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু কোনো সাড়া পাইনি। আজকে সিদ্ধান্ত হয়েছে আমরা আবার চিঠি দেব। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মনে করে এটা একজায়গায় হওয়া উচিত। সেটা করার জন্য আমরা আরো তৎপর হব।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আজকে আমরা মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমানোর জন্য ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করেছি, পণ্যের হাত বদলের কারণে যেন বাজারে প্রভাব না পড়ে। বিশেষ করে খোলা তেলের বিষয়ে। আমাদের বাজারে ৭০ থেকে ৭২ শতাংশ খোলা তেল, বাকিটা বোতলজাত তেল। আরো বেশি বোতলজাত করা গেলে দামের হেরফের কম হবে। উৎপাদন পর্যায়ে ২ শতাংশ, তারপরের ধাপে ৩ শতাংশ ও খুচরা পর্যায়ে ৭ শতাংশ লভ্যাংশের কথা আগে থেকেই ঠিক করা আছে। সেটা যদি তারা পায় তাহলে তার আপত্তি নেই। কমিটি বসে ঠিক করে দেবে। -ইউএনবি

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //