কাঁচাবাজারে উপচেপড়া ভিড়, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি

একদিকে সপ্তাহব্যাপী কঠোর বিধিনিষেধের ঘোষণা অন্যদিকে রমজানকে সামনে রেখে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী কিনতে রাজধানীর বাজারগুলোতে ক্রেতার ঢল নেমেছে।

ক্রেতার সংখ্যার সাথে যেন পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দ্রব্যমূল্য। ক্রেতাদের আনাগোনা দেখে বোঝার উপায় নেই, দেশে কোনো মহামারি চলছে।

মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মৌচাক, হাতিরপুল কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অন্যান্য দিনের চেয়ে আজ ক্রেতার উপস্থিতি বেশি। সাথে সব পণ্যের দাম বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা। করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে ঘরের বাইরে বের হলেই সার্বক্ষণিক মুখে মাস্ক পরিধান, নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখা ও জনসমাবেশ এড়িয়ে চলাসহ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কথা বারবার বলা হলেও এসবের বালাই নেই বাজারগুলোতে।


সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় ৮৩ জনের মৃত্যু হলেও এর কোনো প্রভাব নেই বাজারে। অসংখ্য ক্রেতা-বিক্রেতা যারা স্বাস্থ্যবিধিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তাদের সচেতন বা বাধ্য করতে কোনো সরকারি সংস্থা কিংবা বেসরকারি ও স্বেচ্ছাসেবক প্রতিষ্ঠানের কাউকে চোখে পড়েনি।

এদিকে গত একদিনের ব্যবধানে কেজিতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে পাঁচ টাকা। বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা কেজিতে। একদিন আগে অর্থাৎ রবিবার একই পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩৫ টাকা থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে।

পেঁয়াজের পাশাপাশি রসুনও কেজি প্রতি ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা কেজিতে। আর ৭০ টাকা কেজি দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে।

পিয়াজু, আলুর চপ এবং বেগুনি তৈরির জন্য ব্যবহৃত ১০০ টাকা কেজির বেসন বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকায়। আলুর দাম ৩-৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২২-২৮ টাকা কেজি দরে। সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে বেগুনের। ৪০-৫০ টাকা কেজির বেগুন ৬৫ টাকা থেকে ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।


এগুলোর পাশাপাশি বুটের ডাল বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজিতে। আর অ্যাংকরের ডাল বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজিতে। কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে মানভেদে ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজিতে, যা একদিন আগেও ছিল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা। মুড়ি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজিতে। এছাড়াও শসা বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায় আর কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা কেজি দরে।

লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৭০ টাকায়। গত কয়েকদিন আগেও ৩০-৪০ টাকা হালি ছিল লেবুর দাম। শরবতের জন্য অপরিহার্য চিনি বিক্রি হচ্ছে ৭৫-৮০ টাকা কেজি দরে। তবে আগের কেনা থাকলে ৭০ টাকায়ও বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

খেজুর বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা থেকে এক হাজার ৮০০ টাকা কেজি দরে। তবে মধ্যম মানের খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে। এছাড়াও ফলের মধ্যে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ টাকা কেজি দরে। আপেল ২০ টাকা বেড়ে ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। মাল্টা বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা ১৮০ টাকা কেজি দরে। দেশি পেয়ারা বিক্রি হচ্ছে ৫০-৯০ টাকা কেজি দরে।


কাওরান বাজারের কাঁচাবাজার ব্যবসায়ী আবুল হোসেন বলেন, আলু, পেঁয়াজ, বেগুন আর লেবুর দাম বেড়েছে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, সামনে রোজা। আর রোজায় এগুলোর চাহিদা বেশি। আর সে জন্য দামও বেড়েছে। রোজা শুরুর দিন থেকে আরো বাড়তে পারে।

নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য কিনতে বাজারে আসা আসলাম হোসেন জানান, অন্যান্য দিনের চেয়ে আজ বাজারে মানুষ একটু বেশিই। দ্রব্যমূল্যের দাম বেশ চড়া। পরিবার নিয়ে খেয়ে বাঁচার জন্য দাম বেশি হলেও কিনতে হচ্ছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //