দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে পিষ্ট মধ্য ও নিম্নবিত্ত মানুষ

দেশে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বাজারে চাল, ডাল, পেঁয়াজ ও ভোজ্য-তেলের মত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম যেভাবে বাড়ছে, তা নিয়ে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ ক্ষুব্ধ। এ অবস্থায় সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পেঁয়াজের শুল্ক প্রত্যাহার এবং অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেল এবং চিনির শুল্ক কমানোর অনুরোধ জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে।

সোমবার সচিবালয়ে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে এক বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়। অন্যদিকে, বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির দায় নিতে নারাজ খুচরা বিক্রেতারা। তারা বলছেন, আড়তদারেরা পণ্য মজুদ করছে বলেই দাম বাড়ছে।

পেঁয়াজের দাম গত দুই সপ্তাহে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। এছাড়া মসুর ডাল, আদা, চিনি, ভোজ্য তেল-সব কিছুরই দাম ঊর্ধ্বমুখী। এমনকি সবজি, মুরগি এবং মুরগির ডিমের দামও ডজনপ্রতি অন্তত ১০ টাকা বেড়েছে গত তিন সপ্তাহে। আর তাতে মধ্য এবং নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর বাড়তি এক ধরণের বড় চাপ তৈরি হয়েছে।

বনানী বাজারের একজন বিক্রেতা মো. ইমরান হোসেন বলছেন, আমরা পাইকারি মার্কেট থেকে আনি। তারা বলে দাম বেশি, নিলে নেন, নাইলে নাই। আমার মনে হয় এইটা শ্যামবাজার, কাওরানবাজারের মত বড় আড়তগুলা করতেছে। এখন বাজারে জিনিসপত্রের ঘাটতি নেই, কিন্তু তবু জিনিসের দামে বেশি। লকডাউনে গাড়ি বন্ধ ছিল, তখন দাম বাড়ে নাই এখন তাইলে কেন বেশি- এইটার উত্তর নাই আমাদের কাছে।

এদিকে, সরকার বলছে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী বলেছেন, পেঁয়াজ-ভোজ্যতেল-চিনিসহ যে কটি পণ্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে আমদানি করা হয়, সেগুলোর দাম কমানোর জন্য শুল্ক প্রত্যাহার এবং শুল্ক হ্রাসের জন্য রাজস্ব বোর্ডকে অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।

তিনি বলেন, পেঁয়াজ আমাদের যা প্রয়োজন তার ৮০ শতাংশ আমাদের দেশে হয়, বাকি ২০ শতাংশের বড় অংশটা ভারত থেকে আমদানি হয়। সম্প্রতি ওখানে (ভারতে) দুর্গাপূজা এবং টানা বৃষ্টি হওয়ায় ওরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। যে কারণে আমাদের ইমপোর্ট ভ্যালু বেড়েছে।

তিনি বলেছেন, সেইটা বিবেচনায় নিয়ে আমরা অনুরোধ করেছি যে পেঁয়াজের ওপর যে পাঁচ শতাংশ শুল্ক আছে, সেটা যেন এই মুহূর্তে বন্ধ করে দেয়া হয়।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে এরকম অনুরোধ জানানোর পর আগেও এনবিআর শুল্ক কমিয়েছিল বা কোন ক্ষেত্রে প্রত্যাহার করেছিল, ফলে দাম কমেছিল।

মন্ত্রী আশা করছেন, এবারো দ্রুতই এনবিআর এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে এবং দ্রুত সমাধান হবে। এছাড়া দাম কমানোর উদ্যোগ নেয়া ছাড়াও আড়তদারেরা পণ্য মজুদ করছে কিনা তা মনিটরিং করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী। এক্ষেত্রে কেউ পণ্য মজুদ করে দাম বাড়িয়ে দিলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //