বেড়েই চলেছে নিত্যপণ্যের দাম

নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহে বাজারে বেড়েছে চাল, ডাল ও ডিমের দাম। সেই সাথে এখনও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সবজি। এছাড়াও অপরিবর্তিত রয়েছে অন্যান্য পণ্যের দাম।

শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

এসব বাজারে নাজিরশাইল চালে কেজিতে বেড়েছে ১ থেকে ২ টাকা। নাজিরশাইল চালের কেজি ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মিনিকেট চালে প্রতি কেজিতে ১ থেকে ২ টাকা দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬৩ থেকে ৬৪ টাকা, আটাশ চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ১ থেকে ২ টাকা। আটাশ চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫১ থেকে ৫২ টাকা। এক সপ্তাহ আগেও আটাশ চালের কেজি ছিল ৪৯-৫০ টাকা।

মোহাম্মাদপুর কৃষি মার্কেট বাজারের একজন চাল বিক্রেতা বলেন, হঠাৎ করেই বেড়েছে চালের দাম। পাইকাররা বলছেন বাজারে ধানের সংকট ও ধানের দাম বাড়তে থাকায় চালের দাম বেড়েছে।

তিনি আরও বলেন, মোটা ধানের সিজন হওয়া সত্ত্বেও দাম বেড়েছে। আসলে বড় বড় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান চালের ব্যবসা শুরু করেছে, এরা একবারে অনেক চাল কিনে মজুদ করে, এরপর হঠাৎ করে বাজারে দাম বাড়িয়ে দেয়। সরকারের পক্ষ থেকে এ নিয়ে কোনো মনিটরিং হচ্ছে না।

বাজারে বেড়েছে মুসুরির ডালের দাম। দেশি ডালের কেজি ১১৫ থেকে ১২০ টাকা। গত সপ্তাহে ছিল ১০০ থেকে ১০৫ টাকা কেজি। বেড়েছে ইন্ডিয়ান ডালের দাম। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকা। গত সপ্তাহে ছিল ৯০ টাকা কেজি। এসব বাজারে ভোজ্যতেলের প্রতি লিটার খুচরা বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের তেলের লিটারও বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়।

বাজারে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। এছাড়া প্যাকেট চিনি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকায়। আটা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকায়।

বাজারে বেড়েছে ডিমের দাম। লাল ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১০৫ থেকে ১১০ টাকায়। হাঁসের ডিমের ডজন বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা। সোনালি (কক) মুরগির ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। 

অস্বাভাবিক দাম বাড়ার পর গেল সপ্তাহে রাজধানীর বাজারগুলোতে মুরগির দাম কিছুটা কমেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে কমেছে ১৫ টাকা। আর পাকিস্তানি কক বা সোনালী মুরগি দাম কেজিতে কমেছে ৬০ টাকা পর্যন্ত।

ব্যবসায়ীরা ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৯৫ থেকে ২০০ টাকা। আর গত সপ্তাহে ৩০০ থেকে ৩৪০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া সোনালী মুরগির দাম কমে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

মুরগির দামের বিষয়ে মহাম্মাদপুর কৃষি মার্কেট বাজারের একজন মুরগি ব্যবসায়ী বলেন, সরবরাহ কম থাকায় ব্রয়লার মুরগির দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছিল। এখন আবার মুরগির সরবরাহ বাড়ছে। তাই দাম কিছুটা কমেছে। আমাদের ধারণা সামনের সপ্তাহে মুরগির দাম আরও কমতে পারে।

তবে মাছের দামে তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি। মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে কাতল মাছ। শিং ও টাকি মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা। শোল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬৫০ টাকা। তেলাপিয়া ও পাঙাস মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা।

এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকা। ছোট ইলিশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। নলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা কেজি।

এদিকে সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা ফুলকপির পিস বিক্রি করছেন ৩০ থেকে ৫০ টাকা। বিচি ছাড়া শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। বিচি শিম বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে এ সবজিগুলোর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। একইসঙ্গে অপরিবর্তিত রয়েছে আলুর দাম। গত সপ্তাহের মতো নতুন আলুর কেজি ২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা। তবে গাজরের দাম কেজিতে ১০ টাকা কমে কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা।

এছাড়া বরবটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা। মুলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, শালগমের (ওল কপি) কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, লালশাকের আঁটি ১০ থেকে ১৫ টাকা, মুলাশাকের আঁটি ১০ থেকে ১৫ টাক বিক্রি হচ্ছে। আর পালংশাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। এ গুলোর দামও সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //