দেশে জ্বালানি তেলের দাম এক লাফে লিটারে ৩৪ থেকে ৪৬ টাকা বাড়িয়েছে সরকার। শুক্রবার রাতে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এখন থেকে ডিজেলের দাম হবে ১১৪ টাকা লিটার, যা এত দিন ৮০ টাকা ছিল। এ ক্ষেত্রে দাম বাড়ানো হয়েছে ৩৪ টাকা। কেরোসিনের দামও একই হারে বাড়ানো হয়েছে।
নতুন দর ডিজেলের সমান, অর্থাৎ ১১৪ টাকা লিটার। সাধারণত, ডিজেল ও কেরোসিনের দাম সমান হয়। গত রাত ১২টার পর থেকেই নতুন এই দাম কার্যকর হচ্ছে।
যাতায়াত ভাড়া বাড়বে
সরকার এর আগে গত নভেম্বরে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে এক লাফে ১৫ টাকা বাড়িয়েছিল। তখন দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল ৮০ টাকা লিটার। ডিজেলের দাম বাড়ানোর পর বাসভাড়া বাড়ানো হয় প্রায় ২৭ শতাংশ, যা তেলের দাম বাড়ানোর হারের চেয়ে অনেক বেশি। একই ভাবে তখন লঞ্চভাড়া বাড়ানো হয় ৩৫ শতাংশ।
এখন জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর কারণে নতুন করে বাস, লঞ্চ ও ট্রাকভাড়া বাড়বে। প্রাইভেট কারের মালিক ও মোটরসাইকেলের চালকদের খরচও বাড়বে। ব্যয় বাড়বে কৃষি খাতে, যা বাড়িয়ে দেবে পণ্যের দাম।
দ্রব্যমূল্যের উপর প্রভাব পড়বে
বাজারে এখন চাল, ডাল, তেল, চিনি, সাবান, টুথপেস্টসহ প্রায় সব পণ্যের দাম বেশি। গত মে মাসের পর ডলারের দাম ৮৬ থেকে ১০৮ টাকায় উঠে যাওয়ায় আমদানি করা সব পণ্যের দাম বাড়ছে। এমন অবস্থায় জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি মানুষকে বড় সংকটে ফেলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দেশের ইতিহাসে কখনোই জ্বালানি তেলের দাম একসঙ্গে এতটা বাড়ানো হয়নি। জ্বালানি তেলের দাম যে পরিমাণে বাড়ানো হয়েছে, তাতে যাত্রীদের ওপর চাপ বিপুলভাবে বাড়বে বলে মনে করছেন বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রমেশ ঘোষ। তিনি বলেছেন, এর আগে এক দফায় জ্বালানি তেলের দাম এতটা বাড়ানোর নজির আছে কি না, তা মনে পড়ছে না। জ্বালানির দাম বাড়ানোর এই হারকে অস্বাভাবিক আখ্যায়িত করেছেন শ্যামলী পরিবহনের স্বত্বাধিকারী রমেশ ঘোষ। দ্রব্যমূল্যের ওপরও এর প্রভাব পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
বিদ্যুতের দামও বাড়ানোর ইঙ্গিত
সরকারি কোম্পানিগুলোর আবেদনের পর গত ৫ জুন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) গ্যাসের দাম বাড়িয়ে দেয়। পাইকারি পর্যায়ে বাড়ানো হয় প্রায় ২৩ শতাংশ। বাসাবাড়িতে দুই চুলার গ্যাস বিল ৯৭৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ৮০ টাকা করা হয়।
ঢাকা ওয়াসা গত ৮ জুলাই পানির দাম ৫ শতাংশ বাড়িয়েছে, যা ১ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হবে। দাম আরও বাড়ানোর চেষ্টা করছে ওয়াসা। কৃষি মন্ত্রণালয় গত সপ্তাহে ইউরিয়া সারের দাম প্রায় ৩৮ শতাংশ বাড়িয়েছে। ৬ টাকা বাড়িয়ে প্রতি কেজিতে নতুন দর নির্ধারণ করা হয়েছে ২২ টাকা।
জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ শুক্রবার তার বাসায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম আরেক দফা বাড়ানোরও ইঙ্গিত দিয়েছেন। বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর একটি প্রস্তাব ইতিমধ্যে বিইআরসিতে প্রক্রিয়াধীন।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : জ্বালানি তেল তেলের মূল্যবৃদ্ধি আইএমএফ
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh