চিনির দাম বেশি নিলে অ্যাকশনে যাবে সরকার

নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত দামে চিনি বিক্রি করলে আগামী সপ্তাহ থেকে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যাবে সরকার। আজ বৃহস্পতিবার (১১ মে) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদকিদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

তিনি বলেন, বৈশ্বিক বাজার বিবেচনায় অনেক হিসাব-নিকাশ করে চিনির দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে ট্যারিফ কমিশন।  তবে সমস্যা হচ্ছে, আমরা খুব বেশি চাপ দিলে বাজার থকে পণ্য সরে যায়। তখন একটা উভয় সংকটের মধ্যে পড়ে যাই।

গত ১৫-২০ দিনে বৈশ্বিক বাজারে চিনির দাম টনপ্রতি ৪৫-৫০ ডলার করে বেড়ে গেছে জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের ৯৯ শতাংশ চিনি আমদানি করতে হয়। এসব কারণে বিদেশের ওপর আমাদের নির্ভরশীলতা বেশি। বৈশ্বিক দাম বাড়লে আমাদের ওপর প্রভাব পড়বেই। আবার কিছু অসৎ ব্যবসায়ী সুবিধাও নেয়।

তিনি বলেন, সবকিছু বিবেচনা করেই আমরা চিনির একটি দাম নির্ধারণ করে দিয়েছি। এরপরও বাজারে অতিরিক্ত দামে পণ্যটি বিক্রি হলে আগামী সপ্তাহ থেকেই অ্যাকশনে যাব।

তিনি আরও বলেন, এটিও ঠিক যে, যেটা ঠিক করে দেওয়া হয়েছে তার চেয়ে বেশি দামেও বিক্রি হচ্ছে। আমরা দেখছি, তাদের (ব্যবসায়ীদের) অবস্থান কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়। আবার চিনি যদি বাজার থেকে উধাও হয়ে যায়, সেটিও একটি সমস্যা। সবকিছু দেখেশুনেই আমরা চেষ্টা করছি।

চিনির দাম ঠিক করে দেওয়া হলেও বাজারে তার চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে এ প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা দেখি। দুদিন হলো দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। যদি সেভাবে বিক্রি না হয়, তবে আমাদের ভোক্তা অধিকার তো আছেই।

বাজার থেকে প্যাকেটজাত চিনি হাওয়া হয়ে গেছে, প্যাকেটজাত চিনি অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে। বেশ কিছুদিন ধরেই এমনটি দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাজারে কী চলছে, সেটা বড় কথা না। ট্যারিফ কমিশন দেখে, কত দামে আমদানি করা হয়েছে, তার একটি গড় মূল্য নিয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়। তবে এতে ব্যবসায়ীরা সুযোগ নেয়। যেমন আজকে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু নতুন দামের চিনি আসার আগেই তারা সুযোগ নিয়ে ফেলে।

টিপু মুনশি বলেন, আমাদের হিসাব হচ্ছে একটি অংকের মেথডে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসি। তারাও আমাদের সঙ্গে একমত হয়। কিন্তু একমত হলেও বাজারে তার প্রভাব পড়তে দেরি হয়। দেখা যাক, পরবর্তী সপ্তাহ থেকেই আমরা বাজারে অ্যাকশনে যাব। কারণ ব্যবসায়ীরা তো আমাদের সঙ্গে এই দাম নির্ধারণে একমত হয়েছে। তবে উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় বাংলাদেশে চিনি উৎপাদন প্রতিযোগিতামূলক হবে না। সবচেয়ে ভালো হলো আমদানি করে নিয়ে আসা। কিন্তু পেঁয়াজ ও আলু উৎপাদন সম্ভব। দেশে চিনি উৎপাদন লাভজনক হবে না।

প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রমবর্ধমান মূল্যের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বাজারে প্রতি কেজি চিনির দাম ১৬ টাকা বাড়ানোর অনুমতি দিয়েছে সরকার।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, পরিশোধিত খোলা চিনির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি কেজি ১২০ টাকা, যা আগে ছিল ১০৪ টাকা। প্যাকেটজাত পরিশোধিত চিনির দাম কেজি প্রতি ১০৯ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২৫ টাকা করা হয়েছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //