যে পথ কখনোই আনন্দ হারায় না

যে কোনো শহর থেকে ফেরার সময় মন বিষণ্ণ হয়ে ওঠে, সেই পথ, সেই নদী, অচেনা মানুষ চোখ ভিজিয়ে দেয় কেন? আমাদের ভ্রমণ শুরু হয়েছিল ১৯. ১০. ২০২৩ তারিখ রাতে। স্থান ছিল দার্জিলিং, গ্যাংটক, সিকিম, পেলিং; পথে ছিল শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি। আনন্দের পাশাপাশি শিখলাম কতকিছু। ‘দ্য ট্রাভেলার্স-বাংলার পথে, ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে আমরা যাত্রা করেছি পথের ক্লান্তি আর কষ্ট দূরে রাখার জন্য। আমাদের আট সদস্যের ভেতরে কনিষ্ঠ সদস্যের নাম নেহেজা, বয়স ২+। তিনজন আছি বয়স্ক। অন্যরা তরুণ। মূলত তারাই চেয়েছে পরিবারকে সময় দিতে, মন ভালো রাখতে।

তিস্তা নদীর বন্যা-পরবর্তী ক্ষতি এখনো দাঁত বের করে আছে। রাস্তা মেরামত চলছে। পানির রং ঘোলা হয়ে আছে। ‘মিতালি’ ট্রেন সময়মতো পৌঁছাতে পারেনি। ড্রাইভার সুক্কু আগে থেকে উপস্থিত ছিলেন। দারুণ হাসি-খুশি মানুষ। সেদিন  দার্জিলিঙে রিসোর্টে যখন পৌঁছতে পেরেছি তখন সন্ধ্যা হয়ে গেছে। Tripoo potala palace-এ পৌঁছে আমরা ছুটলাম মল রোডে চা, মম খেতে। 

একই ড্রাইভার নিয়ে চললাম জাপানিজ টেম্পল, ঢালী মনেস্টারী, বাতাসিয়া লুপ দেখে গ্যাংটকের পথে। কিছু পথ এগিয়ে হাসি-খুশি ড্রাইভার টাকা পুরোটাই নিয়ে বলতে থাকে আজ ওদের ফেস্টিভ্যাল, তাই অন্য একজন ড্রাইভার অর্জুন আমাদেরকে পৌঁছে দেবে রুফিনা পিনাসা রিসোর্টে। দ্বিতীয় ড্রাইভার আমাদেরকে নামিয়ে দিল মাঝপথে, কারণ সন্ধ্যা ৬টার পর কোনো বড় গাড়ি ভেতরের রাস্তায় চলতে পারবে না। আমরা দুটো ট্যাক্সি নিয়ে রিসোর্টে পৌঁছে মেজাজ খারাপ করলাম। কারণ বারবার আমাদের ট্যাক্সি নিতে হচ্ছিল এমজি মার্ক শপিং মলে যেতে। 

এরপর আমরা গেলাম সাঙ্গু লেক, গাইড হিসেবে ছিল পুষ্পা। দারুণ হৃদয়বান মেয়ে। ওয়াটার ফল ঘুরে বাইরে খেয়ে এমজি মার্ক মলে ঘুরে ঘুরে চেনা অচেনা অনেক মুখ দেখলাম। তেইশ তারিখ এলো নতুন ড্রাইভার তামাং। যাত্রা, ইমাহ বুটিক রিসোর্ট, গ্যালায়াসিং। আনাড়ি ড্রাইভার, নষ্ট জিপ যখন আমাদের চরম হতাশ করে তখন রিসোর্টের ম্যানেজার কাজাং-এর আদর-আপ্যায়ন আর আমুদে ব্যবহার আমাদের মন ভালো করে দেয়। তিন ঘণ্টা ঘুর পথে যাওয়ায় ভাবি খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে, ড্রাইভার তামাং ও তার গাড়ি এতটাই হতাশ করে যে আমরা আরও একদিন থাকার ইচ্ছা বাতিল করে পেলিং হয়ে ‘স্কাই ওয়াক’ দেখে শিলিগুড়ি হয়ে নিউ জলপাইগুড়ির হোটেলে এসে উঠি। 

প্রতিদিন রাতের খাবার ও সকালের নাশতা রিসোর্ট বুফে সিস্টেমে দিয়েছে। প্রথম দিন দুপুরে ‘শান্তা, বান্টা’ ধাবায় ভেজ থালি ও ভেজিটেবল বিরিয়ানি, ও ভেজিটেবল হায়দ্রাবাদি বিরিয়ানি খেয়ে আমরা মুগ্ধ হয়েছি। দুপুরের খাবার ভেজ হলেও একদিন গ্যাংটকে মুসলিম হোটেলে শিক কাবাব, গরুর মাংস, সবজি খেয়েছি। সব হোটেলেই চমৎকার ডাল রান্না, আচার খেয়েছি। সকলের ব্যবহার ছিল মনোরম। সকালবেলায় মোবাইলে সংকেত দেয় উঠবার সময় হয়েছে, রিসোর্টের জানালায় অপার্থিব আলো-ছায়ার খেলা দেখতে দেখতে ঘুম ভাঙলেও লেপের নিচ থেকে বের হতে ইচ্ছে করত না। গিজার অন করে আরও কিছু সময় পার করতাম। কারণ বরফ শীতল পানি মুখে দিয়ে দাঁত মাজা যায় না। রুমে গরম পানির কেটলি চা, কফি থাকায় নিসর্গ আর আমার জন্য দুকাপ বানিয়ে ফেলতাম। কফির স্বাদ ভালোই ছিল। নিসর্গ তাড়া দেওয়ার আগেই প্রস্তুত হয়ে দেখতাম ভাবি, মুমু নেহেজাকে নিয়ে বেরিয়ে এসেছে লিফটের কাছে। প্রতিদিন রিসোর্টের একতলায় নাশতা খেয়ে আটটার ভেতরে বের হতাম। সত্যি বলতে কী কফি খাওয়ার পর টেনশনে সুযোগ হলেই ওয়াশরুমে ঢুকে যেতাম যাতে পথে কোনো বিপত্তি না হয়। যদিও সব জায়গায় দশ টাকা খরচ করলেই পাবলিক টয়লেট ব্যবহার করা যায়। জলপাইগুড়ি থেকে দার্জিলিং পথে ফেস্টিভ্যাল থাকায় ছোট বড় জ্যাম ছিল। উত্তাল তিস্তা নদীর নীল জল উধাও। মাঝে মাঝে পথ এতটাই সরু হয়ে গেছে, পাহাড়ের ভাঙা অংশ রীতিমতো ভয় ধরিয়েছে। সেতুর উপরে বাঁদরেরা বাচ্চা সমেত ঘুরছে। কুকুরগুলো কান ফুলিয়ে একদম শান্ত। ওদের মুখে কোনো আওয়াজ নেই, যেন বিস্ময়ে দেখছে লোক। এসব পাহাড়ি পথে ছোট বড় গাড়িই ভরসা। পথচারীও কম। তবে কখনো ঢাকার মতোই যানজট। দার্জিলিং পৌঁছে রাতে শুধু মল রোডে গিয়ে ঘুরে ঘুরে দেখেছি। পরদিন ড্রাইভার সুক্কু আমাদেরকে প্রথমে নিয়ে গেল জাপানিজ টেম্পল, পাহাড়ের উপরে সাদা ঝকঝকে সেই স্থাপনা মুগ্ধ হয়ে দেখি। সিঁড়ি বেয়ে অনেকটা দূর উঠলেও সময়ের কথা বিবেচনা করে কিছু ছবি তুলে নেমে এলাম। সেখান থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যাওয়ায় অন্যসব পর্যটকের মতো আমরাও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করি। এর পর আমরা যাই ঢালী মনেস্টারী, টিকিট কেটে আস্তে আস্তে সিঁড়ি বেয়ে উঠি। হাঁপিয়ে গেলেও বাইরে প্রকাশ করিনি। অনেকটা পথ বেয়ে উঁচুতে উঠে শান্ত এক খোলা বারান্দায় এসে দাঁড়াই। বুদ্ধদেবের মূর্তি সৌম্য ভঙ্গিতে বাইরে ভেতরে শোভা পাচ্ছে। একটুকরো সবুজ গালিচা ঘেরা বসার স্থানও আছে। হয়তো দর্শনার্থীদের ছবি তোলার সহায়ক। ক্যামেরা পারপর ক্লিক করতে থাকে। নেহেজা কিছুতেই ছবি তুলবে না-পাথর কুড়াতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। সেখান থেকে নেমে বাতাসিয়া লুপ পৌঁছে আবারও টিকিট কেটে পুলের মতো পথ পার হয়ে পার্কে এসে দাঁড়ালাম। রোদে শরীর তেতে উঠেছে, আবার সাঁই সাঁই বাতাস। সৈনিকের স্থাপনা ঘিরে ছবি তোলার হিড়িক। হঠাৎ অবাক হলাম-লোকেরা রাজার মতো, রানির মতো পোশাক পরে গলায় মালা, কোমরে তলোয়ার ঝুলিয়ে ছবি তুলছে কেন? পরে শুনলাম এই পোশাক দার্জিলিংয়ের ঐতিহ্যকে ধারণ করছে। পোশাক ভাড়া নিয়ে, মেয়েরা কোমরে বাঁশের টুকরি নিয়ে ছবি তুলে আবার পোশাক ফিরিয়ে দিচ্ছে। এখান থেকেও দেখা যায় কাঞ্চনজঙ্ঘার সাদা রেখা। দার্জিলিঙে দুপুরে ভেজ খাবার খেয়ে আমরা ড্রাইভার অর্জুনের গাড়িতে গ্যাংটকের পথে রওনা দেই। মাঝপথে গাড়ি বদল, সিকিমের এলাকায় ঢোকার জন্য পুলিশ স্টেশনে পারমিশন নিতে হয়, পাসপোর্টে সিল দিয়ে পৌঁছাতে হয়। ‘রুফিনা পিনাসা রিসোর্ট’-এ আমাদেরকে সিল্কের সাদা উত্তরীয় পরিয়ে অভ্যর্থনা করা হয়। আমরা একটু পরেই বেরিয়ে যাই এমজি মার্গ শপিং মলে। পরদিন সকালে নতুন ড্রাইভার (নাম মনে নেই) আর গাইড পুষ্পার সাথে আমরা সাঙ্গু লেকের উদ্দেশে যাত্রা করি। পথে থেমে পড়ি আবার কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখে। ছোট ছোট ঝরনা পার হয়ে এসে দাঁড়াই প্রবল স্রোতের ধারা নেমে আসা সেই ঝরনার কাছে, যেখানে দাঁড়িয়ে আমরা শিশুর মতো কোমল হয়ে গেলাম। নেহেজা এত খুশি হলো যে নামনা নামনা (সে পানিকে বলে নামনা) বলে চিৎকার করে ওঠে। আবার সে পানিতে মাছ খুঁজতে থাকে। সেখানে কিছুক্ষণ থেকে আবার অনুমতি নিয়ে আমরা সাঙ্গু লেকের দিকে যাত্রা করি। যত উঁচুতে উঠতে থাকি ঠান্ডা বাড়ছিল, ঠকঠক করে কাঁপছিলাম মোটা জ্যাকেট পরেও। গাড়ি থেকে নেমে অপূর্ব নীল লেকের পানিতে চোখ স্থির হয়ে থাকে। বিরাট শিংওয়ালা চমরি গাই শুয়ে আছে, ঘোড়া চলছে। টাকার বিনিময়ে চমরি গাইয়ের উপরে উঠে কেউ কেউ মজা করছে। হেঁটে হেঁটে দেখছিলাম। হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হলো, গাইড পুষ্পা ধরে গাড়িতে এনে দরজা লক করে দিল। একটু ঠান্ডা কমলে আবার গাড়ি থেকে নেমে পাশের ওয়াশরুমে যাই। সেখান থেকে ফিরে পরপর দুকাপ কফি খেয়ে হাতে পুরু হ্যান্ডগ্লাভস পরে একটু আরাম বোধ করি। সাঙ্গু লেকে দুদিন আগেও বরফ ছিল, এখন গলে গেছে প্রায় সবটুকুই। ছিটেফোঁটা আছে তখনো। সেগুলো ওপার থেকে কুড়িয়ে মুমু হাতে করে আমাদেরকে দেখাতে নিয়ে আসে। এখানেও আরও উঁচুতে ওঠা যায় কেবল কারের মাধ্যমে। আমার আর সাহস হলো না। মূলত আমাদের ইচ্ছে ছিল বরফে ঢাকা সিকিমের অন্য অংশে যাওয়ার। সেখানে বন্যার কারণে সবকিছু বন্ধ রয়েছে। তাই পেলিং যাওয়ার কথা পাকা হয় ট্রাভেল এজেন্সির সাথে। 

রিসোর্টে ফিরে জামা-কাপড় পাল্টে এমজি মার্গ শপিং মলে আবার যাই। সেখানের মুসলিম হোটেলে নন ভেজ খাবার খাই। সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘুরে ঘুরে শপিংয়ের চেষ্টা করি। তেমন কিছু কেনা হয়নি। এন্টিক কিছু কেনার চেষ্টা করি, পাইনি। 

পরদিন ড্রাইভার তামাং আমাদের সাথি হলো, গন্তব্য পেলিং। আমরা হাসি-ঠাট্টা করছি, পাহাড়ি ফল, ফুল দেখছি, পথ আর ফুরায় না। তামাং আমাদেরকে ‘ইমাহো বুটিক রিসোর্ট’-এ নিয়ে যেতে পারছে না পথ ভুল করার কারণে। পথ এত ভয়ংকর যে মনে হচ্ছে জিপ উল্টে খাদে পড়ে যাবে। সন্ধ্যা হয়ে এলো, পথে বুনো শেয়াল ডাকছে, ভীষণ নির্জন। দুবার চাকা পাংচার হয়ে গেল। শেষেরবার একদম রিসোর্টের কাছাকাছি। উঁচু পাহাড়ের উপরে রিসোর্টের আলো দেখা যায়। ফোন করলে রিসোর্টের ম্যানেজারসহ অন্যরা এগিয়ে আসে। ততক্ষণে শক্তি তলানিতে এসে ঠেকেছে। থেমে থেমে শ্বাস নিয়ে আমি শেষ মাথায় উঠলেও, রিসোর্টে পৌঁছাতে পারলেও রেহানা ভাবি অসুস্থ হয়ে পড়ে। সারাদিনের ধকলে তার সুগারের মাত্রা একদম কমে গিয়ে শরীর কাঁপতে থাকে আর হাত-পা অবশ হয়ে যেতে থাকে। তাড়াতাড়ি চিনি আর চকলেট মুখে দিয়ে রিসোর্টের রুমে নিয়ে রুমহিটার চালিয়ে ধীরে ধীরে সুস্থ করে তোলা হয়। এই রিসোর্ট পেলিং শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে, অন্য এক পাহাড়ি এলাকায়। কফি খেয়ে মোটামুটি ধাতস্থ হয়ে দুদিনের বদলে আমরা একদিন রিসোর্টে থাকার প্ল্যান করি। চমৎকার রাতের খাবার খেয়ে সামান্য ঘুমিয়ে আমরা অপেক্ষা করি ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা’ দেখার জন্য। সকাল পাঁচটায় প্রচণ্ড ঠান্ডা উপেক্ষা করে বাইরে এসে দাঁড়িয়ে থাকি। আমার ছেলে নিসর্গ গলায় ক্যামেরা ঝুলিয়ে প্রস্তুত। কাঞ্চনজঙ্ঘা এখান থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে। আকাশে মেঘ ছিল না। ধীরে ধীরে আকাশ পরিষ্কার হচ্ছে। প্রথম সূর্যের আলো পড়েছে, সাদা বরফের চূড়া লাল হয়ে ওঠে মুহূর্তে। আমরা বিস্ময়ে বোবা হয়ে যাই। দাঁড়িয়েই থাকি। আলোর খেলা চলছে, একসময় আবার লাল দ্যুতি কেটে সব ঝকঝকে সাদা হয়ে চোখের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে। 

রিসোর্টে সকালে হালকা নাশতা, কফি খেয়ে আবার রওনা দেই পেলিং শহরের দিকে। পথে খাবার জন্য রিসোর্ট থেকে আমাদেরকে প্রচুর নাশতা সাথে দিয়ে দেয়। যার ভেতরে ছিল আলুর পরাটা, চাটনি, পাউরুটি, জেলি, ডিম সেদ্ধ। ম্যানেজার কাজাং এক রাতেই আপন হয়ে ওঠে। আমাদের পথের ক্লান্তি সে অনেকটাই দূর করে দেয়। 

পেলিং পৌঁছতে বেশি সময় লাগে না। দেড় ঘণ্টায় আমরা পৌঁছে যাই, পেলিং ‘স্কাই ওয়াক’ দেখতে। টিকিট কেটে সিঁড়ি বেয়ে যখন উঠছি ভাবছি দূর কষ্ট হচ্ছে, এখানে আর কী দেখব! জুতো খুলে গন্তব্যের দিকে এগোতেই চোখ আটকে গেল উঁচু বৌদ্ধ মন্দিরের দিকে। ডান দিক থেকে এগিয়ে যেতেই দেখলাম সেই আশ্চর্য কাচের দীর্ঘ সেতু। অনেকেই ভয়ে ভয়ে পা ফেলছে, কেউ বসে পড়েছে। মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকলাম। কাচের সেতু পার হয়ে এসে দাঁড়ালাম বৌদ্ধ মন্দিরের নিচে। উপরের দিকে তাকিয়ে, ছবি তুলে ফিরে এসে বসার স্থানে বসে জুতা পরে, গায়ের গরম জামা খুলে অপেক্ষা করতে থাকলাম কখন সাথের স্বজনেরা দেখে ফিরে আসে। একটু আগেও যেখানে শীত লেগেছে এখন রোদে পুড়ে যাচ্ছি কী অদ্ভুত! 

ফেরার সময় চমৎকার কফি খেয়ে জিপে এসে বসলাম। উদ্দেশ্য শিলিগুড়ি হয়ে জলপাইগুড়ি এমজি রেলস্টেশনের কাছাকাছি হোটেলে ওঠা। কারণ পরের দিন এগারোটায় ‘মিতালি’ ট্রেন ধরতে হবে। পথে ছিটগ্রস্ত নেপালি ড্রাইভার তামাং আমাদেরকে যথেষ্ট প্যারা দেয়। সে নেপালি ভাষা ব্যবহার করে, গুগল ম্যাপের বর্ণনা নয়, পথে শুধু নেপালি ড্রাইভার খোঁজে পথ বাতলে দেওয়ার জন্য। অথচ সে কিছুই চেনে না। মাঝপথে পুরো টাকা নেওয়ার পরে নানা টালবাহানা করতে থাকে। সন্ধ্যায় জলপাইগুড়ি শহরে এসে আমরা আবার বের হই ঘুরতে, আইসক্রিম খেতে। পূজা মণ্ডপে তখনো গান বাজছে, লাইটিং, সাজসজ্জা রাতের আকাশকে সোনালি করে তুলেছে। চেকিং, ইমিগ্রেশন পার হয়ে ‘মিতালি’ ট্রেনের কেবিনে এসে যখন বসলাম তখন চোখে রূপকথার জগৎ, মনে একটুকরো বাংলাদেশ। 

যে সমস্যাগুলো প্রকট ছিল 

১. আমাদের ভ্রমণ আরও আরামদায়ক হতো ট্রাভেল এজেন্সিকে ফোন করে সময়মতো পেলে। 

২. আনাড়ি ড্রাইভার ও ভালো গাড়ির অভাবে। 

৩. রিসোর্টের ভিউ ভালো থাকলেও দেখার স্থানগুলোর দূরত্ব থাকার কারণে। 

৪. বাজেটের অতিরিক্ত ব্যয়, এবং ট্রাভেল এজেন্সির সহায়ক মনোভাবের অভাবে। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //