ঋতুপর্ণ ঘোষের নবম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

ভারতীয় কিংবদন্তি চলচ্চিত্র পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষের নবম মৃত্যুবার্ষিকী আজ সোমবার (৩০ মে)। ২০১৩ সালের এই দিনে কলকাতায় নিজ বাসায় ঘুমের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান নন্দিত এই নির্মাতা।

চলচ্চিত্র জগতে আসার আগে ঋতুপর্ণ ঘোষ কাজ করতেন বিজ্ঞাপন জগতে। সেখানে জনপ্রিয়তা পেয়ে আগ্রহী হন চলচ্চিত্রে। বিজ্ঞাপন জগৎ ছেড়ে প্রথম ছবি করেছিলেন হীরের আঙটি। আর তারপরেই উনিশে এপ্রিল। এটি ঋতুপর্ণ ঘোষের প্রথম জাতীয় পুরষ্কার এনে দেওয়া চলচ্চিত্র।

উনিশে এপ্রিল দিয়ে শুরু করে দহন, উৎসব, চোখের বালি, অন্তরমহল, সব চরিত্র কাল্পনিক, নৌকাডুবির মতো একের পর এক ছবি তৈরি করেছেন ঋতুপর্ণ ঘোষ। তার ১২টি চলচ্চিত্র জাতীয় পুরষ্কার পেয়েছে। এছাড়াও পেয়েছেন বহু আন্তর্জাতিক পুরষ্কার এবং সম্মান।

নব্বইয়ের দশকের গোড়া অবধি বাংলা ছায়াছবিতে যে বন্ধ্যাত্ব চলছিল, সেটা কাটিয়ে উঠে দর্শককে আবারো সিনেমা হলের দিকে আকৃষ্ট করতে ঋতুপর্ণ ঘোষের অবদান ছিল অসামান্য।

যৌনতা নিয়ে নিজের স্পষ্ট চিন্তাভাবনা কোনোদিন লুকিয়ে রাখেননি ঋতুপর্ণ ঘোষ। আগে পুরুষদের পোষাক পড়লেও বেশ কয়েক বছর ধরে তিনি মহিলাদের পোষাকই পরতেন। এজন্য তাকে নিয়ে অনেকে ঠাট্টা তামাশা করলেও তিনি নিজের চিন্তাভাবনা থেকে সরে আসেননি এবং নিজের শর্তেই জীবন কাটিয়েছেন। উল্টে, তাকে নিয়ে যারা মজা করেছেন, তাদের সাথে মুখোমুখি তর্কও করতেন।

চলচ্চিত্র নির্মাণের পাশাপাশি বাংলা সাময়িক পত্রিকা সম্পাদনাও করতেন ঋতুপর্ণ ঘোষ। একই সাথে সামাজিক যোগাযোগরক্ষাকারী সাইটগুলোতেও তিনি ছিলেন জনপ্রিয়। মৃত্যুর মাত্র দুদিন আগে তিনি টুইটারে লিখেছিলেন, ‌‌‘সত্যান্বেষী’র শুটিং শেষ।’ শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের গোয়েন্দা চরিত্র ব্যোমকেশ বক্সীকে নিয়ে তৈরী হচ্ছিল তার সর্বশেষ ছবি। তার অকাল প্রয়াণে সেই ছবি অসমাপ্ত থেকে যায়। পরে ছবিটি মুক্তি দেয়া হয় অন্যদের তত্বাবধানে।

ফলে ২০১২ সালে নির্মিত ‘চিত্রাঙ্গদা’ চলচ্চিত্রটিকেউ ধরা হয় ঋতুপর্ণ ঘোষের শেষ কাজ। ওই ছবিটির জন্য বিশেষ জুরি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিলেন জাতীয় চলচিত্র পুরষ্কারে। তিনি নিজে অভিনয়ও করেছিলেন চিত্রাঙ্গদায়। সেখানে ঋতুপর্ণ ঘোষের গলায় একটি সংলাপে ছিল- ‘তাহলে আসি, হ্যাঁ?’

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //