বন্ধ হচ্ছে না অনিবন্ধিত মোবাইল সেট

গ্রাহক ভোগান্তি বিবেচনায় বৈধ-অবৈধ কোনো মোবাইল ফোনই বন্ধ হবে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

শুক্রবার (২২ অক্টোবর) মন্ত্রী জানান, পহেলা অক্টোবর থেকে কোনো মোবাইল ফোন চালু করতে গিয়ে অবৈধ চিহ্নিত হলে তা বন্ধের যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, তা আর হচ্ছে না। এ বিষয়ে নেয়া সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছে সরকার। এখন থেকে মোবাইল ফোন সেট চালু করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তার নিবন্ধন হবে।

দেশে ১ অক্টোবর থেকে সব অনিবন্ধিত ফোন বন্ধ হয়ে যাবে এমন সরকারের এমন ঘোষণার পর বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন বা বিটিআরসি কী প্রক্রিয়ায় নিবন্ধন করা হবে, যারা ইতিমধ্যে অনিবন্ধিত ফোন ব্যবহার করছেন তাদের ক্ষেত্রে কী হবে এসব নিয়ে একাধিক দিক-নির্দেশনা দিয়েছিল।

বিটিআরসি এর আগে একাধিকবার অনিবন্ধিত হ্যান্ডসেট ব্যবহার করা যাবে না বলে সময়সীমা নির্ধারণ করলেও সিদ্ধান্ত চূড়ান্তভাবে বাস্তবায়ন করতে পারেনি।

সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমরা দেখেছি, এখনো ৭০% মানুষ ফিচার ফোন ব্যবহার করে। অনেকে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন না। বা মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ নেই। এসব ক্ষেত্রে নিবন্ধন করা মুশকিল।

জব্বার জানান, প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় আমাদের বলেছেন, জনগণের ভোগান্তির কারণ হয়, এমন কোনো কাজ আমরা করবো না। তার পরামর্শে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যেকোন মোবাইলে বাংলাদেশের সিম ব্যবহার করলে ঐ মোবাইল স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধন হয়ে যাবে।

দেশে মোবাইল ফোন আমদানি বা বাংলাদেশের ভেতরে প্রস্তুত করার জন্য বিটিআরসির অনুমোদন লাগে।

মন্ত্রী বলেন, যারা লাগেজে করে মোবাইল বিদেশ থেকে আনেন তারা দুটো ফোন শুল্কমুক্ত আনতে পারেন। আবার ছটা ফোন আনতে গেলে শুল্ক দিতে হয়। আমাদের মোবাইলের আইএমইআই নম্বরে ডাটাবেস তৈরির যে কাজ চলছে সেটা অব্যাহত থাকবে।

এছাড়া অবৈধ ফোনের ট্যাক্স, ভ্যাট এসব দিক দেখা রাজস্ব বোর্ডের কাজ বলে তিনি মন্তব্য করেন। মন্ত্রী বলেন, যেহেতু মোবাইলে ডাটাবেস থাকছে রাজস্ব বোর্ডের দরকার হলে তারা তথ্য ব্যবহার করতে পারবে।

বিটিআরসি সূত্র জানায়, ১ জুলাই থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রায় এক কোটি সাড়ে আট লাখ মোবাইল ফোন বিক্রি হয়েছে, যার মধ্যে প্রায় সাড়ে ৩১ লাখ সেটকে অবৈধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

পহেলা অক্টোবর থেকে এসব অবৈধ সেট ধাপে ধাপে ডিঅ্যাকটিভেট বা নিষ্ক্রিয় করার প্রক্রিয়া শুরু করবে বলে জানিয়েছিল বিটিআরসি।কিন্তু এখন আর সেটা হচ্ছে না।

বিটিআরসির স্পেকট্রাম ডিভিশনের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহিদুল আলম এর আগে বলেছিলেন, মোবাইল ফোন সেট রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে নেটওয়ার্কের আওতায় নিয়ে আসার কয়েকটি উদ্দেশ্য রয়েছে।

একদিকে এর নিরাপত্তাজনিত বিষয় রয়েছে অন্যদিকে এর একটি আর্থিক দিক রয়েছে। এই দিকগুলো হচ্ছে-
১. কেউ যাতে অবৈধভাবে হ্যান্ডসেট আনতে না পারে। দেশে যাতে বৈধভাবে অ্যাসেম্বল বা তৈরি করা যায়।
২. মোবাইল সেটগুলো নিবন্ধিত থাকলে আমদানিকারকরা সরকারের ট্যাক্স ফাঁকি দিতে পারবে না।
৩. কারো মোবাইল ফোন ছিনতাই বা চুরি করে অন্য কেউ সেটি বিক্রি বা ব্যবহার করতে পারবে না। চুরি হওয়া সেটগুলো উদ্ধার করা সহজ হবে।
৪. মোবাইল সিম, আইএমইআই এবং জাতীয় পরিচয়পত্র একসাথে ট্যাগিং করা হবে। এতে করে একজনের নামে নিবন্ধিত মোবাইল অপরজনের মোবাইল সেটে ব্যবহার করা যাবে না।
৫. মোবাইল ফোন ব্যবহার করে কোন অপরাধ সংঘটন হলে সেটির বিরুদ্ধে দ্রুত এবং সহজে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //