দ্য গোল্ড ক্রস অব মেরিট অ্যাওয়ার্ড পেলেন সিওনতেক

সেই যে গত ১০ অক্টোবর থেকে স্বপ্নের ঘোরে ঢুকে পড়েছেন, তার সেই স্বপ্ন যেন ভাঙছেই না! ঘুমের ঘোরে তো বটেই, বরং জাগরণেও যেন স্বপ্নের মধ্যেই বসবাস করে চলেছেন তিনি। 

একের পর এক পুরস্কার প্রাপ্তির মিছিলে সিওনতেকের স্বপ্নময় অধ্যায়টা কেবলই দীর্ঘতরই হচ্ছে। এত এত পুরস্কার, সংবর্ধনা, সম্মান-মর্যাদা, ভালোবাসা প্রাপ্তির স্রোতের মধ্যে তার স্বপ্ন ভাঙে কী করে! হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন। ফ্রেঞ্চ ওপেনের নতুন রানী ইগা সিওনতেকের কথাই বলা হচ্ছে। ১০ অক্টোবরের আগ পর্যন্তও সাধারণ জীবনযাপন করছিলেন তিনি। দেশের সেরা টেনিস তারকার তকমা হয়তো গায়ে ছিল। 

তবে সিওনতেকের স্বপ্নের ঘোরটা এতটা গভীর ছিল না কিছুতেই; কিন্তু ১০ অক্টোবর অবিশ্বাস্য এক কীর্তি গড়ে ফেলেছেন পোলিশ এ মেয়ে। দেশের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে জিতে নিয়েছেন ফ্রেঞ্চ ওপেনের মহিলা এককের শিরোপা।

ফাইনালে রোমানিয়ার সিমোনা হেলেপকে হারিয়ে দেশ পোল্যান্ডের হয়ে এই ইতিহাস রচনা করেছেন তিনি। তো ফাইনাল শেষেই সিওনতেক ঢুকে পড়েন স্বপ্নরাজ্যে। যে স্বপ্নময় রঙিন রাজ্য থেকে বেরই হতে পারছেন না তিনি। কী করে পারবেন, দেশের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম বিজয়ীকে নিয়ে পোলিশদের উৎসব, মাতামাতি যে চলছেই। সাথে চলছে নানারকম পুরস্কার প্রদান ও সংবর্ধনা পর্ব। বিজয়ী রানীকে যথাযথভাবে সম্মান জানাতে হবে না।

পোলিশ ফ্রেঞ্চ ওপেনের নতুন রানীকে সম্মান জানাতে কার্পণ্য করছেও না। বরং পুরস্কারের পর পুরস্কারের মালা পরিয়ে সিওনতেককে বসিয়েছে সম্মান-মর্যাদার সর্বোচ্চ আসনে। সত্যিই তাই। একের পর এক পুরস্কারের মিছিলে সিওনতেকের মাথায় পরিয়ে দেয়া হয়েছে পোল্যান্ডের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার ‘দ্য গোল্ড ক্রস অব মেরিট’ অ্যাওয়ার্ডের মুকুট।

মানে মাত্র ১৯ বছর বয়সেই সিওনতেক দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। ব্যাপারটা কল্পনা করা যায়; কিন্তু কল্পনা নয়, ঘটনা বাস্তব। ফ্রেঞ্চ ওপেন জেতার সুবাদে গত ২৩ অক্টোবর দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার ‘দ্য গোল্ড ক্রস অব মেরিট’ অ্যাওয়ার্ড দেয়া হয়েছে তাকে। দেশটির প্রেসিডেন্ট স্বয়ং আন্দরজাই দুদা দেশের টেনিস রানীর মাথায় সর্বোচ্চ মর্যাদার এই মুকুট পরিয়ে দিয়েছেন। 

মাত্র ১৯ বছর বয়সে প্রেসিডেন্টের কাছে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার গ্রহণ করা, ব্যাপারটা সিওনতেকের জন্য কতটা স্বপ্নময়, তা সহজেই অনুমেয়। তবে ওই দিন সিওনতেকের স্বপ্নময় অর্জনের দিনে বড় একটা দুঃসংবাদও পেয়েছে পোলিশরা। সেদিনই মরণঘাতী করোনাভাইরাস পরীক্ষায় পজেটিভ প্রমাণিত হয়েছেন প্রেসিডেন্ট আন্দরজাই দুদা। তবে প্রেসিডেন্টের সম্মানে অনেক বড় একটা ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেছেন, তিনি নিজেও কোয়ারেন্টিনে থাকবেন। 

না, স্বপ্নের রঙিন রাজ্যে উড়ে বেড়ানো সিওনতেক করোনা পরীক্ষায় পজিটিভ প্রমাণিত হননি। বরং পরীক্ষায় নেগেটিভ এসেছে তার; কিন্তু সতর্কতার অংশ হিসেবে তিনি নিজে থেকেই কোয়ারেন্টিনে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। সিওনতেক স্বেচ্ছায় কোয়ারেন্টিনে থাকার ঘোষণা তো দিয়েছেন; কিন্তু প্রশ্ন হলো, তিনি কোয়ারেন্টিনে থাকবেন কি করে? পুরস্কার-সংবর্ধনা গ্রহণ করতে প্রতিনিয়তই যে তাকে ছুটে বেড়াতে হচ্ছে এক অনুষ্ঠান থেকে আরেক অনুষ্ঠানে। 

নাকি পুরস্কার-সংবর্ধনা প্রাপ্তির চলমান পর্বটায় তিনি নিজেই আপাতত বিরতি টেনে দেবেন! সেটা হলে তো স্বপ্নরাজ্যে উড়াউড়ি বাদ দিয়ে পোল্যান্ডের টেনিস রানী হয়ে যাবেন পুরোপুরি গৃহবন্দি। তা গৃহবন্দি হলেও নিশ্চয় সিওনতেকের স্বপ্নের ঘোর কাটবে না!

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //