আইনি লড়াইয়ে হেরে গেলেন জকোভিচ, অস্ট্রেলিয়া থেকে বহিষ্কার

টেনিস তারকা নোভাক জকোভিচ আইনি লড়াইয়ে হেরে যাওয়ার পর তাকে অস্ট্রেলিয়া থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া সরকার তাকে দেয়া ভিসা বাতিল করার পর তিনি সেটি আদালতে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। কিন্তু আদালতের বিচারকরা তার আবেদন খারিজ করে দেন।

বিশ্বের এক নম্বর টেনিস তারকা জকোভিচ অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে অংশগ্রহণের জন্য অস্ট্রেলিয়ায় যান। কিন্তু তিনি করোনাভাইরাসের টিকা ছাড়াই অস্ট্রেলিয়ায় ঢুকেছিলেন।

আদালত তার আবেদন খারিজ করে দেয়ার পর জকোভিচের ২১বার গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতে রেকর্ড করার স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল।

জকোভিচ বলেন, আদালতের রায়ে হতাশ হলেও তিনি এই রায় তিনি মেনে নিচ্ছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, আমার অস্ট্রেলিয়া ছেড়ে চলে যাওয়ার ক্ষেত্রে আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সহযোগিতা করবো।

আদালতে যখন রায় ঘোষণা করা হচ্ছিল, তখন বাইরে তার সমর্থকদের মধ্যে নীরবতা নেমে আসে। তার এক ভক্ত বিবিসিকে বলেন, অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে যদি নোভাক জকোভিচ না খেলেন, তার এই গ্রীষ্ম খুব ফাঁকা বলে মনে হবে।

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, এটি আমাদের সীমান্তকে শক্ত রাখা ও অস্ট্রেলিয়ানদের নিরাপদ রাখার জন্যই। মহামারির সময় অস্ট্রেলিয়ানরা অনেক আত্মত্যাগ করেছে এবং স্বাভাবিকভাবেই তারা আশা করে যে তাদের এসব আত্মত্যাগ যেন সুরক্ষিত থাকে।

অস্ট্রেলিয়ার ইমিগ্রেশন মন্ত্রী অ্যালেক্স হক যখন সার্বিয়ান টেনিস তারকা জকোভিচের ভিসা বাতিল করেন, তখন তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে, অস্ট্রেলিয়ায় তার উপস্থিতি টিকাবিরোধী মনোভাবে হাওয়া দিতে পারে।

গতকাল রবিবার (১৬ জানুয়ারি) আদালতে শুনানির সময় জকোভিচের আইনজীবীরা যুক্তি দেন, সরকার যে অজুহাতে ভিসা বাতিল করেছে তা অযৌক্তিক ও অকার্যকর।

প্রধান বিচারপতি জেমস আলসপ বলেন, ফেডারেল আদালতের রায়ের ভিত্তি ছিল মন্ত্রীর সিদ্ধান্তটি আইনসংগত ও বৈধ ছিল কিনা। এই সিদ্ধান্ত কতটা বিচক্ষণ ছিল, সেটি তারা বিচার করেননি।

অস্ট্রেলিয়া যখন কাউকে বহিষ্কার করে, তখন সাধারণত তার অস্ট্রেলিয়ায় ফেরার ওপর তিন বছরের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তবে কোন কোন ক্ষেত্রে এই নিয়ম শিথিল করার সুযোগ আছে।

আদালতের এই রায় গত ১০ দিন ধরে জকোভিচকে নিয়ে চলা আইনি লড়াইয়ের সমাপ্তি টানলো।

কোনও টিকা না নিয়েই জকোভিচ যেভাবে অস্ট্রেলিয়ায় ঢুকেছিলেন, তা দেশটির সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি করেছিল। অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল সরকার গত দুই বছর ধরে বলে এসেছে, করোনা মহামারি মোকাবেলায় জারি করা বিধিনিষেধ যেন মানুষ মেনে চলে ও ‘কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়’।

জকোভিচকে শুরুতে এই টিকার বাধ্যবাধকতা থেকে রেহাই দেয়া হয়েছিল ‘স্বাস্থ্যগত কারণে’। যে দুটি স্বতন্ত্র মেডিক্যাল প্যানেলের সুপারিশের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তার একটিকে নিয়োগ করেছিল ‘টেনিস অস্ট্রেলিয়া’, অপরটি ভিক্টোরিয়া রাজ্যের সরকার।

কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার বর্ডার ফোর্স গত ৫ জানুয়ারি তাকে আটক করে টিকা সংক্রান্ত ফেডারেল সরকারের নিয়ম ভঙ্গ করার কারণে।

একজন বিচারক পরে জকোভিচের পক্ষে রায় দিলেও ফেডারেল সরকার গত শুক্রবার আবার তার ভিসা বাতিল করে বলেন, জনগণের স্বার্থেই এটা করা হয়েছে।

জকোভিচ যদিও কোভিড-১৯ এর টিকা না নিলেও তাকে কখনও টিকাবিরোধী অপপ্রচার চালাতে দেখা যায়নি। তবে অস্ট্রেলিয়ায় টিকাবিরোধী আন্দোলনকারীরা জকোভিচের পক্ষে দাঁড়িয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায় #IStandWithDjokovic হ্যাশট্যাগে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //