পাহাড় ও মেঘের মিতালী কেওক্রাডং

যারা বেড়াতে পছন্দ করেন তাদের কাছে জনপ্রিয় নাম হচ্ছে কেওক্রাডং। পাহাড়ের প্রতি যাদের রয়েছে দুর্বলতা তাদের জন্যও কেওক্রাডং হচ্ছে স্বর্গময় জায়গা। এখানে দেখতে পাওয়া যাবে পাহাড়ের চূড়া থেকে পাহাড় ও মেঘের মিতালী, যা আপনাকে রোমাঞ্চিত করবে। আপনি যদি ট্র্যাকিং প্রিয় হোন, তাহলে কেওক্রাডং একটি আদর্শ জায়গা। পরিবার, বন্ধু-বান্ধব, ভ্রমণসঙ্গী অথবা আপনার প্রিয় ব্যক্তিকে নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন এখান থেকে। যে কোনো সময় ভ্রমণ করা গেলেও হালকা বৃষ্টি বা শীতের সময় যাওয়াই উপযুক্ত সময়।

ঢাকা থেকে কেওক্রাডং যেতে হলে প্রথমে বান্দরবান যেতে হবে। বাস ও ট্রেন দু’ভাবেই যাওয়া যাবে। বান্দরবান থেকে রুমা বাজার এবং রুমা বাজার থেকে বগা লেক হয়ে কেওক্রাডং যেতে হয়। একদিনে বান্দরবান থেকে কেওক্রাডং পৌঁছানো কষ্টকর হতে পারে। ফলে একদিন বগা লেক থেকে পরের দিন রওনা হলে ভ্রমণ আরামদায়ক হবে। বান্দরবান থেকে রুমা বাজার লোকাল বাস অথবা চান্দের গাড়ি বা জিপে করে যেতে পারবেন। রুমা বাজার থেকে আপনাকে একজন গাইড সঙ্গে নিতে হবে। যেহেতু গাইড নেওয়াটা বাধ্যতামূলক তাই গাইড সমিতির রেজিস্ট্রেশন করা গাইড সঙ্গে নিতে ভুলবেন না। তবে গাইডের থাকা-খাওয়ার খরচ নিজের বহন করতে হবে।

রুমা বাজার থেকে রওনা হওয়ার আগে আপনাকে অবশ্যই আর্মি ক্যাম্প থেকে কেওক্রাডং যাওয়ার অনুমতি নিতে হবে। এক্ষেত্রে মনে রাখবেন বিকেল ৪টার পর বগা লেক যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয় না। চাইলে রুমা বাজার থেকে বগা লেক চান্দের গাড়ির মাধ্যমেও যেতে পারবেন। বগা লেক পৌঁছানোর পর প্রথমে সেখানকার আর্মি ক্যাম্পে রিপোর্ট করতে হবে। সেই রাত বগা লেক থেকে পরের দিন ভোরে রওনা দিলে কয়েকটি মাঝারি পাহাড় ট্র্যাকিং করার পর ৩-৪ ঘণ্টার মধ্যে কেওক্রাডঙ্গের চূড়ায় পৌঁছাতে পারবেন। পাহাড়ের চূড়া থেকে সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয় উপভোগ করার মজাই আলাদা।

ঢাকার যে কোনো জায়গা থেকে সাউদিয়া, হানিফ, শ্যামলী, সেন্টমার্টিনসহ আরও বেশি কিছু পরিবহনে বান্দরবান যেতে পারবেন। ঢাকা থেকে বান্দরবান যেতে বাসে ভাড়া জনপ্রতি ননএসি ৫৫০ টাকা এবং এসি ৯৫০-১৫০০ টাকা। ট্রেনেও যাওয়া যাবে। ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী সোনার বাংলা, সুবর্ণ এক্সপ্রেস, মহানগর গোধূলি ইত্যাদি ট্রেনে শ্রেণিভেদে জনপ্রতি ৩৫০ থেকে ১২০০ টাকা পরবে। চট্টগ্রাম থেকে জনপ্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা ভাড়ায় আপনি বান্দরবান যেতে পারবেন। এ ছাড়া বান্দরবান থেকে কেওক্রাডং পর্যন্ত বাস বা চান্দের গাড়ি এবং গাইড বাবদ জনপ্রতি বা দলগতভাবে একটি (আলোচনা সাপেক্ষে) নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ খরচ করতে হবে।

থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা

কেওক্রাডংয়ে রাত কাটাতে চাইলে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার কটেজ ভাড়া করতে হবে। চাইলে গাইডের সহায়তায় আগে থেকেই কটেজ ভাড়া করতে পারবেন। একেক রুমে জনপ্রতি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। একসঙ্গে থাকা যাবে কয়েকজন। আলাদা কোনো হোটেল না থাকায় ক্ষুদ্র জাতিসত্তাদের ঘরেই খাবার খেতে হবে। এখানে আলাদাভাবে ও প্যাকেজ (১০০ থেকে ২০০ টাকা) হিসেবে ভাত, ডাল, আলুভর্তা, পাহাড়ি মুরগি পাবেন। কেওক্রাডং না থেকে বগা লেকেও থাকতে পারবেন। এখানেও আপনাকে ক্ষুদ্র জাতিসত্তাদের ছোট ছোট কটেজে থাকতে হবে। কটেজগুলোতে জনপ্রতি ১০০ থেকে ২০০ টাকা খরচ হবে। তবে এক রুমে ৫ থেকে ৬ জন থাকতে পারবেন। মহিলা বা কাপলদের জন্য আলাদা থাকার জায়গা করে নিতে পারবেন। এখানেও আপনি আলাদাভাবে ও প্যাকেজ (১০০ থেকে ২০০ টাকা) হিসেবে ভাত, ডাল, আলুভর্তা, পাহাড়ি মুরগি পাবেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //