জুবায়ের আহমেদ পুলক
প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২২, ০৯:৫৪ এএম
আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২২, ০৩:১০ পিএম
বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলার রেমাক্রি স্থানটি সাঙ্গু নদীর উজানে একটি মারমা বসতি। থানচি থেকে নৌকায় করে প্রায় আড়াই ঘণ্টা নৌপথ পাড়ি দিয়ে পৌঁছতে হয় রেমাক্রি, সেখান থেকে তিন ঘণ্টার হাঁটা পথ পাড়ি দিয়ে যেতে হয় আশ্চর্য সুন্দর এক জলপ্রপাতে; যার নাম ‘নাফাখুম’।
বর্ষায় সাঙ্গু নদীতে পানি আর স্রোত বেশি থাকায় রেমাক্রি থেকে আমাদের নাফাখুমের উদ্দেশে নৌকা নিতে হয়। তবে নৌকা নামিয়ে দেয় নাফাখুমের আগে; বাকি পথটা এক থেকে দেড় ঘণ্টা হেঁটেই যেতে হয়। রেমাক্রি খালের পানিপ্রবাহ এই নাফাখুম। নাফাখুমে এসে বাঁক খেয়ে নেমে গেছে প্রায় ২৫-৩০ ফুট, প্রকৃতির খেয়ালে সৃষ্টি হয়েছে চমৎকার এক জলপ্রপাত। সূর্যের আলোয় যেখানে নিত্য খেলা করে জলরাশি।
ভরা বর্ষায় রেমাক্রি খালের জলপ্রবাহ নিতান্ত কম নয়। প্রায় যেন উজানের সাঙ্গু নদীর মতোই। পানিপ্রবাহের ভলিউমের দিক থেকে নাফাখুমই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জলপ্রপাত।
আরেকটা মজার ব্যাপার হচ্ছে- নাফাখুমের পড়ন্ত জলের ধারার নিচে গিয়ে বসার সুযোগ রয়েছে। বিষয়টা বেশ রিস্কি হলেও পাহাড়িরা জলপ্রপাতের পেছনে বসে অনায়াসে মাছ শিকার করে। এক ধরনের উড়ুক্কু মাছ (স্থানীয় ভাষায় মাছটির নাম নাতিং)। উজান ঠেলে এসে নাফাখুমে বাধাপ্রাপ্ত হয়, লাফ দিয়ে এই প্রপাতটা আর ক্রস করতে পারে না; গিয়ে পড়ে জলপ্রপাতের ভেতরে ছোট্ট একটা গুহায়। অনায়াসে সেখান থেকে মাছ সংগ্রহ করে স্থানীয় পাহাড়িরা।
বান্দরবান হচ্ছে ‘ভয়ঙ্কর সুন্দর’ বলতে যে ব্যাপারটা বোঝায় সেটাই। বান্দরবান যেন এক অলীক স্বপ্নের পাড়, যেখানে দেখা মেলে অনিকেত প্রান্তরের। রোদ-বৃষ্টি, মেঘ-পাহাড়ের মিলনমেলা এই বান্দরবানে। বাংলাদেশে অ্যাডভেঞ্চারের জন্য আদর্শ কোনো জেলা থাকলে সেটা নিঃসন্দেহে বাংলার ভূস্বর্গ বান্দরবান। তাই অ্যাডভেঞ্চারের কৌটোর শূন্যস্থান পূরণ করতে অবশ্যই ছুটে যেতে হবে বান্দরবানের গহিনে।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh