প্রথম শ্রেণি থেকে বাংলা ভাষা বিকশিত করতে পারলে

ইংরেজির দৌরাত্ম কেটে যাবে

২০২৩-এর একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের ভাষা আন্দোলন একাত্তর বছরে পদার্পণ করছে। ফেব্রুয়ারির এই মহান দিনটিকে ঘিরে বাংলাভাষার চর্চা, বাংলা ভাষার বিকাশ এবং বাংলা বানান রীতি এসকল বিষয় নিয়ে দেশবরেণ্য কথাসাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম-এর সঙ্গে কথা বলেছেন সাম্প্রতিক দেশকালের সাহিত্য সম্পাদক এহসান হায়দার 

এহসান হায়দার: ভাষা আন্দোলনের একাত্তর বছর পালিত হচ্ছে এ বছর একুশে ফেব্রুয়ারি; কিন্তু বিশেষভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সর্বস্তরে বা সকল জায়গায় বাংলা ভাষার প্রচলন এখনও সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে কী সরকারি ব্যবস্থাপনা কিংবা তদারকি যথেষ্ট নয়- আপনি এ বিষয়কে কীভাবে দেখেন?

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম: ভাষার ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রথমত সবগুলো যায়গা বলতে কি বোঝাচ্ছে? শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তো আর সরকার নিয়ন্ত্রণ করে না। মানে সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তো আর ব্যবসা বাণিজ্যকে নিয়ন্ত্রণ করে না। এখন বাংলাদেশে শুধু নয় সমস্ত পৃথিবীতে ইংরেজী ভাষার এত জোরে শোরে প্রচলন হয়েছে যে, ইংরেজীর প্রভাব কাটিয়ে ওঠা আমাদের পক্ষে একেবারেই অসম্ভব।

এমনিতেই ইংরেজীর প্রভাব ছিল সব সময়। এদেশে বহুকাল আগে থেকে চাকরির আবেদন পত্র লিখতে হতো ইংরেজীতে। এমন কোনো শাখা নাই, এমনকী চাকরির সাক্ষাৎকারও ইংরেজীতে হয় অথচ কাজ করবে বাংলাদেশে। এ হলো উপনিবেশিক একটা মানসিকতা। ভাষাগত দিক থেকে এ বোঝা আমাদের উপরে ছিল বহুকাল আগে। সেটা আমরা কিছুতেই মোকাবেলা করতে পারিনি।

ইংরেজী যেহেতু একটা বৈশ্বিক যোগাযোগের ভাষা। এটা জানাকে দক্ষতা বা স্কীল বলা হয়। এটা আমাদের শিখতেই হতো; কিন্তু আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় কখনো ইংরেজীর পাশাপাশি বাংলাকে এভাবে শেখানো হয় নি। আমরা ইংরেজীও শিখি না আবার বাংলাও আমরা শিখি না। শিক্ষা ব্যবস্থাটা ব্যর্থ হয়েছে। আমাদের বাংলা ভাষাকে শক্ত করতে হবে। ইংরেজীর জন্য আমি চিন্তা করিনা বাংলা ভাষার অপ-ব্যবহার দেখে আমার কষ্ট হয়। 

এহসান হায়দার: স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর উদযাপন করেছি আমরা, বিশ্ব পন্যায়ণের দিকে ক্রমশ অগ্রসর হচ্ছে, প্রযুক্তিতে দারুণ সফলতা পৃথিবীজুড়ে অথচ আমাদের ভাষা এখনও বৈশ্বিক যোগাযোগে দারুণভাবে পিছিয়ে পড়েছে। ইংরেজির দাপুটে প্রভাব এখনও রয়েছে- এর প্রধান কারণগুলো বলবেন কী স্যার?

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম: এখানে তিনটি প্রশ্ন আছে প্রথমত: স্বাধীনতার পরও যেরকম ইংরেজীর একটা প্রভাব ছিল। তার থেকে অনেক বেশি প্রভাব আমরা অনুভব করছি এখন। কারণ এখন বিশ্ব চলছে প্রযুক্তিগত নানা শক্তির ওপর। যোগাযোগের মাধ্যম খুব দ্রুত এবং বিস্তৃত হয়েছে, সহজলভ্য এবং এত দ্রুত দ্রুতি দাঁড়াচ্ছে, যেভাবে পরিব্যপ্ত হয়েছে  তা ভাবনার অন্ত নেই। এই দ্রুতি এতোটাই এখন- যে কোনো মুহূর্তে বিশ্বের যেকোনো স্থানে সংযোগ ঘটাতে পারি।

বিজ্ঞাপনের পৃথিবী প্রসারিত হয়েছে, সবকিছু পন্যায়ণ হয়ে গেছে। আর এই পন্যায়ণের ভাষা হচ্ছে ইংরেজী। বৈশ্বিক যোগাযোগের মাধ্যম হচ্ছে ইংরেজী। প্রযুক্তির ভাষা হচ্ছে ইংরেজী। ইংরেজী থেকে আমাদের মুক্তি মিলবে এটি অবান্তর একটি চিন্তা। এবং সবকিছু বাংলায় পরিবর্তন করাও একটা অবান্তর চিন্তা। অনেকটা আকাশকুসুম চাওয়া।

কারণ আমি যখনই প্রযুক্তির কোনো একটা শব্দকে বাংলায় রূপান্তর করতে যাই- সেটা কেমন হয়? যেমন- মডেমের বাংলা কি? ইন্টারনেটের বাংলা আমরা অন্তর্জাল লিখি, অন্তর্জাল বলতে যেটা বোঝায় তা কী ইন্টারনেট? যখন আমি হাসপাতালে যাই তখন কী আমরা রোগের সব ঔষধগুলো বাংলায় বোঝাতে পারি বা ব্যাখ্যা দিতে পারি। আমরা বলি বটে বলবার সময়, যখন বাস্তবতা হলো ঔষধের নাম কী আমরা বাংলায় লিখতে পারবো? সকল রোগের নাম আমাদের বাংলায় লেখা কী সম্ভব? 

এহসান হায়দার: ভাষার ক্ষেত্রে তবে কী স্যার ইংরেজি ভাষা যতটা এগিয়ে চলেছে, বাংলার ক্ষেত্রে সচেতনতার দরকার ছিল আরও বেশি এক্ষেত্রে... 

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম: এটা করতে গেলে যেরকম মানুষকে সচেতন করতে হবে। একেবারে প্রথম শ্রেণির থেকে শুরু করতে হতো, আমরা সেটা পারিনি- ফলে প্রথমত ঐ সমস্যাটা আমাদের থাকবেই। বিশ্ব এখন ইংরেজীর মাধ্যমে চলছে সে হিসেবে যোগোযোগের ভাষা থেকে নিয়ে জীবনের সমস্তক্ষেত্রে এতখানি দ্বারস্ত হয়ে গিয়েছি, অধিনস্ত হয়ে গিয়েছি। ইংরেজির সঙ্গের সেই বন্ধনটা ছিন্ন করে বাংলাকে সেই স্থানে নিয়ে যাওয়া একেবারেই অসম্ভব।

অসম্ভব কেন বলছি দুই নম্বর কারণ, আমরা বাংলাকে যেভাবে শেখাচ্ছি। তাতে নতুন করে বাংলার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হচ্ছে না। বাংলাকে আমরা মুখস্ত করে শেখানোর অবস্থা করেছি। বাংলার একটা পরিভাষা আছে। বাংলাদেশে কখনো বরফ পড়েনি; কিন্তু বরফের তিনটা না চারটা প্রতিশব্দ রয়েছে। তার মানে আমাদের একটা সময়ে চেতনাটা-কল্পনাটা বিস্তৃত ছিল।

সেই কল্পনার পৃথিবীতে আমাদের বিস্তৃতি কমে গেছে। আমরা মুখস্ত নম্বর, মুখস্তনির্ভর সনদমুখী টিউশন বাণিজ্য এবং নোটবই-গাইড বই ইত্যাদি শিখিয়ে আমরা শিক্ষিত জাতি বানাচ্ছি। শিক্ষার্থীরা যেভাবে শিক্ষা গ্রহণ করছে, তাতে সৃজনশীলতার চিহ্ন মাত্র আমরা রাখছি না। মাতৃভাষার প্রতি যে ঔদাসীন্য দেখতে পাচ্ছি তা ভাবনার বিষয়। ভাষার প্রতি চরম ঔদাসীন্যতা কাটিয়ে ওঠা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।

যদি না আমরা শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল সংস্কার করতে না পারি। সে আমূল সংস্কার কেউ করবে না, কোনো সরকারই করবে না। কারণ তাতে যে পরিমান যত্ন নিতে হবে যে পরিমান খরচ করতে হবে। সেটি কোনো সরকার করতে রাজী হবে না। ফলে শিক্ষায় আমরা মাঝে মাঝে কিছুটা এদিক-সেদিক পরিবর্তন দেখবো, যেমন এখন একটা শিক্ষা কার্যক্রম হয়েছে খুবই ভালো। সেটাও অনেক শিক্ষক গ্রহণ করতে চাইবেন না, কারণ এইজন্য অনেক প্রশিক্ষন প্রয়োজন হবে।

টিউশন প্রথা শেষ হয়ে যাবে। কারণ টিউশন বাণিজ্যে যারা ঠাকুর, নোটবই-গাইড বইয়ের যারা ঠাকুর তারা চায় না হাত থেকে শিক্ষাবাণিজ্য বেরিয়ে যাক। তারা একটা বাধা দেবে। ফলে ঐখানেও আমরা পরিবর্তন আনতে পারবো না। তৃতীয়ত, আমাদের চাকরির বাজার, আমাদের জীবনের সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে সকর শিক্ষার্থী বিসিএস পরিক্ষার জন্য তৈরি হয়।

আর যারা বিসিএস পরিক্ষায় উত্তির্ণ হতে পারে না তারা হয়তো ব্যাংকে যায়, নানা যায়গায় যায়। সবখানে ইংরেজীর এমন দাপট তাদের পক্ষে বাংলা শিখে মনে হবে-আমি মনে হয় বাংলা শিখে খুব বেশি দূর যেতে পারবো না। যতদিন না পর্যন্ত আমরা শিক্ষা ব্যবস্থাকে সেই আমূল সংস্কারের দিকে নিয়ে না যাবো। যে সংস্কার মাতৃভাষাকে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে গুরুত্বের সঙ্গে শেখানোর ব্যবস্থা রাখবে এবং বহুমুখী মাতৃভাষার শিক্ষাটা না থাকে, তবে সেটা সম্ভব হবে না।

বহুমুখী মানে মাতৃভাষার যে কোনো ক্ষেত্রে। যেকোনো ক্ষেত্রে মাতৃভাষার চমৎকারভাবে ব্যবহার হওয়া চাই। যেমন- ক্রমাগতভাবে কথা বলা এবং দক্ষতা সৃষ্টি করা। কারণ আমি বাণিজ্য করি, আমি কৃষি কাজ করি- এর সব ক্ষেত্রেই বাংলা ভাষার প্রচলন হতে পারে। এতকিছু বলছি তারপরও আমি মনে করি শতাংশ ভাগ ইংরেজীর বিকল্প বাংলা ভাষার প্রচলন তৈরি করতে পারবো না।

কারণ আমাদের বিপনন ব্যবস্থা বিশ্বের ওপর নির্ভর করে। আমাদের কৃষিতেই হয়তো ধরুণ আমরা বাংলা চালু করে দিলাম। এবারে এই বাংলার ফসলগুলো আমাকে বিদেশে রপ্তানি করতে হবে। তখন আমার দ্বারস্ত হতে হবে ইংরেজী ভাষার। আমি ইংরেজী-বাংলার বিবাদে যাচ্ছি না। আমি মনে করি সবচেয়ে আদর্শ হওয়া উচিত মাতৃভাষা। আমাদের মাতৃভাষা বিকাশের সর্বোচ্চ পর্যায়ে চলে যাবে যখন তখন ইংরেজী ভাষারও বিকাশ হবে, দুটি ভাষার মধ্যে ঝগড়া হবে না। 

এহসান: বাংলা-ইংরেজির ঝগড়ায়, বাংলার প্রসারে বা বাংলা ভাষা শেখা এবং এর যত্নে আমাদের শিক্ষকদের ভূমিকা কতটা বলে মনে করেন আপনি?

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম: আমি আমার শিক্ষককে দেখেছি সিরাজুল ইসলাম চৌধুরি, খান সারোয়ার মুর্শিদ- তাদেরকে আমার শিক্ষা জীবনে শিক্ষক হিসেবে পেয়েছি। তাদের কাছে বাংলা-ইংরেজীর এমন চমৎকার ব্যবহার শুনেছি। তাদের মধ্যে কোনো ঝগড়া নেই। যখন ইংরেজী বলছেন তখন চমৎকার ইংরেজী বলছেন। যখন বাংলা বলছেন তখন সুন্দর বাংলা বলছেন। এই অবস্থা যদি আমরা তৈরি করতে পারি তখন এই ঝগড়াটা আমাদের করতে হবে না। এখানেও একটা হিনমন্যতা বোধ আসে যে আমরা ইংরেজীর চাপায় আমরা পড়ে গেলাম। 

এহসান হায়দার: ফেব্রুয়ারি মাস এলেই ভাষা বিষয়ে যত কথা শুনতে পারি, পত্র-পত্রিকায় লেখা পড়ি; কিন্তু এ মাস বিদায় হতেই আমরা বংলা ভুলে যাই বাংলাকে- এই বিষয়টিকে আপনি কী বলবেন স্যার? 

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম: ফেব্রুয়ারি মাস আসলেই আমরা বাংলা বাংলা বলে চিৎকার করি। ফেব্রুয়ারির ২৮ বা ২৯ তারিখ শেষ হলে আবার আমরা ইংরেজীতে চলে গেলাম। এটা এক ধরনের দ্বিমুখিতা। আমি মনে করি এটা আমাদের সততার পরিচয় নয়। 

এহসান হায়দার: আমরা নিজের বাংলা ভাষাকে নিয়ে যতটা না আজ চিৎকার করছি, ইংরেজির বিরোধিতা করছি- একইভাবে তো আমাদের দেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের ভাষার ওপর বাংলা জোর খাটাচ্ছে, চেপে বসছে?

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম: ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ভাষার ওপরে বাংলা ভাষা অবশ্যই চেপে বসছে। ইংরেজী আমাদের ওপর যেভাবে চেপে বসেছে তেমনি বাংলাও তাদের ওপর চেপে বসেছে। এইক্ষেত্রে তাদের ভাষাকেও বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্ব বর্তায়। তাদের নিজেদের বর্ণমালায় বই প্রকাশ করাও জরুরি। তাদের ভাষার সুরক্ষার ভার নিতে হবে। বাংলার পাশাপাশি তাদের ভাষারও সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। না হলে আমরাও একইভাবে অন্যায় করছি। 

এহসান হায়দার: বানান রীতি বিষয়ে কিছুকাল পর পর একটা শোরগোল ওঠে, একাডেমি একরকম নিয়ম করছে তো পত্র-পত্রিকাগুলো আরেকরকম নিয়মে বানান লিখছে, এ বিষয়ে স্যার বিস্তারিত বলবেন কী?

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম: বানান রীতি কয়েক বছর পর পর না শেষ বানান রীতি পরিবর্তন হয়েছে সেটা এখনো আছে। এবং আমি মনে করি এটা উচিত। কারণ আমাদের বাংলা ভাষায় দীর্ঘ-ঈ কারের ব্যবহার ছিল প্রচুর, ও-কারের ব্যবহারও ছিল। এগুলো সহজ করা উচিত। কারণ এখন মানুষ কম্পিউটারে কাজ করে। যেমন আমি অভ্র ফন্টে কাজ করি।
কম্পিউটারে কী-বোর্ডে ও-কার দিতে হয় শূন্যতে গিয়ে চাপতে হয়। আমি মনে করি, আমরা যদি নিজেদের প্রযুক্তিগত দক্ষতা বাড়াতে চাই। তাহলে এই পরিবর্তন প্রয়োজন। অভ্র ফন্টটা অত্যন্ত সুন্দর একটা বাংলা সফটওয়্যার। শুরুতে বিজয় ফন্ট ছিল, এখন মনে করি অভ্রোটা অনেক সহজ। ব্যবহার বান্ধব একটা অ্যাপস তৈরি করা হয়েছে। এটি ব্যবহার করলে হ্রস্ব-ই কার দীর্ঘ ঈ-কার ব্যবহারে অনেক সুবিধা আছে। ওই শিফট চেপে আমাকে হ্রস্ব ই-কার লিখতে হয় না। বানান অনেক সহজ করা হয়েছে। পশ্চিম বঙ্গেও হয়েছে।

পশ্চিম বঙ্গের অনেক পত্রিকাতেও এ নিয়ম রয়েছে। আমাদের এখানে প্রথম আলোর একটা বানান রীতি আছে। তবে আমি মনে করি একটাই বানান রীতি হওয়া উচিত। সকল পত্র-পত্রিকা বাংলা একাডেমি নির্ধারিত বানান রীতি মেনে চললে ভালো হবে।  ১০ বা ১৫ বছর পর পর সামান্য পরিবর্তন হতে পারে বানানে। কারণ বিদেশি নাম আমি হ্রস্ব-ই কার দিয়ে ব্যবহার করছি, এটা অত্যন্ত চমৎকার একটি প্রস্তাব; কিন্তু আলী নামটি যদি হ্রস্ব-ই কার দিয়ে লিখি সেটি কিন্তু সততার পরিচয় হয় না।

আলী নামটি যেভাবে এসেছে ‘আইন লাম ইয়া’ তাতে হ্রস্ব-ই কারের কোনো যায়গা নেই। দীর্ঘ ঈ-কার দিতেই হবে সেখানে। যেমন রবীন্দ্রনাথের বানানে রবী আর ইন্দ্র, এখানে হ্রস্ব ই-কার দিলে, দীর্ঘ ঈ-কার না দিলে সেটা ব্যকরনগত ভুল হয়। পশ্চিমবঙ্গে এটা নিয়ে আমি তর্ক করেছি ‘আলী’ নামটা হ্রস্ব ই-কার দিয়ে লেখেন কি হয়। আপনাদের রবীন্দ্রনাথের নামটা যে সন্ধিগত কারণে যেমন দীর্ঘ ঈ-কার হয়েছে।

তেমনি একটা কারনে আলী নামটা একই হবে। এটা নিয়ে আমাদের পরিবর্তন করার কোনো কারন নেই। কাজেই আমাদের যৌক্তিক হতে হবে পরিবর্তনগুলি। এবং সেটা আমি মনে করি আমাদের সক্ষমতা বাড়বে। আমাদের বাংলা ভাষার প্রতি যদি ভালোবাসা সক্ষমতা বাড়ে। 

এহসান হায়দার: ভাষাশেখার ক্ষেত্রে অনেক বেশি জরুরি বানানের ক্ষেত্রে ঐক্য এ বিষয়ে আপনি কি বলবেন স্যার?

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম: আসলে আমি যেভাবে দেখছি প্রথম শ্রেণি থেকে যদি বাংলা ভাষা বিকশিত করতে পারি আমরা। তবে ধীরে ধীরে আমরা যে ইংরেজির দৌরাত্মের কথা বলছি তা কেটে যাবে। সর্বত্র বাংলার ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য এভাবেই আমাদের ধাপে ধাপে এগিয়ে যেতে হবে, এছাড়া সম্ভব নয়।

আর বানানের ক্ষেত্রে বলবো, প্রতি ১০-১৫ বছরে ভাষার জন্য বানানের একটা পরিবর্তনের প্রয়োজন দেখা দেয়। সেটা একটি বোর্ড গঠন করে বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে বদলালে দেখা যাবে খুব বেশি বদলের প্রয়োজন হয়নি। তবে পত্র-পত্রিকার ক্ষেত্রে আমি বলবো একটি বানান রীতি থাকা প্রয়োজন, সকলের জন্যই একটি রীতি। বানানগত ঐক্য এখানে থাকা জরুরি। না হলে একটি বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।  

বানানগত অভিন্নতাটা সকল ক্ষেত্রে অভিন্ন থাকে যাতে সেজন্য পত্রিকা আছে, যারা যারা বাংলা ভাষা ব্যবহার করে মিডিয়া আছে। বিশ^বিদ্যালয়, স্কুল-কলেজ রয়েছে। এসকল ক্ষেত্রে বাংলা একাডেমি যেটা করতে পারে বাংলা বানান অভিধান সেটি নির্দিষ্ট করে তৈরি করে দিতে পারে। বানান পরিবর্তন করে গায়ের ওপরে চাপিয়ে দেওয়া যাবে না। তবে আমি মনে করি বানান ভিষয়ে ঐক্যমত হলে সবচেয়ে ভালো।

আমরা এই একটা বানান রীতি মেনে চলবো, তাতে আমাদের অনৈক্য থাকবে না মাঝে মাঝে একটা বিপর্যয় তৈরি হবে তা নয়। একটা অভিন্নতা থাকলে লিখতে সুবিধা হয়। যারা বলবে তাদের অভ্যেসটাও তৈরি হয়ে যাবে। এবং বানান ভুলের যে মাঝে মাঝে বিপর্যয়টা সৃষ্টি করে সেটিও এক পর্যায়ে থাকবে না। আর তাছাড়া প্রযুক্তি সহায়ক যে কর্মসূচিগুলো আছে সেটিও এতে সহযোগিতা করবে।

এই বানানটা কাজে লাগাতে পারে। হয়তো এমন ভাবে যে অভ্রতে আমি একটা জিনিস টাইপ করেছি, তখন যে দুটি অক্ষর লিখলাম তারপর পুরো শব্দটাই আমাকে সে দিয়ে দিলো। তখন আরো সুবিধা হবে যে শব্দটা দিচ্ছে সেটা অভিন্ন বানান রীতির শব্দ। ফলে আমরা খুব সহজে কাজটি করতে পারলাম। এটা হলো বানানে অভিন্নতার সুবিধা।

এহসান হায়দার: একাত্তর বছরে ভাষা বিকাশের যে মাধ্যমে ভাষার আধুনিকায়ন ঘটেছে বলা হয়ে থাকে, সাধু ভাষার ব্যবহার থেকে চলতি ভাষার ব্যবহারে আমরা অভ্যস্ত হয়েছি, সময়ের ব্যবধানে কতটা এগিয়েছে এই বিষয়টি?

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম: আধুনিকায়ন শব্দটা আমি কিছুতেই বুঝলাম না। এর সঙ্গাটা কী? এর মানে কী- বাংলা ভাষা কী প্রাচীনটা ব্যবহার করছি আমরা। যেমন আমরা সাধুভাষা ব্যবহার করতাম। এটা কিন্তু আধুনিকায়ন না। যুগের প্রয়োজনে আমরা ব্যবহার করতাম। মানুষ একটা সময় সত্যিকার অর্থে কৃষিজীবী সম্প্রদায়ে ছিলাম আমরা- তখন সময় মানতো, সময় ছিল সূর্য এবং চাঁদ নির্ভর। অর্থাৎ দীর্ঘ একটা চক্রে ছিলাম।

আমাদের সকাল হতো ভোরে পাখির ডাক শুনে মোরগের ডাকের এটা ছিল এক সময়। তার পর যখন আমরা যন্ত্রযুগে চলে আসলাম তখন আমাদের ঐ শক্তিটা চলে গেলো। সময় আর সূর্য এখন এক হয় না। শহরে সেটা ঘড়ি দিয়ে চলে। যখন ঘড়ি দিয়ে চলে তখন দ্রুতি চলে আসে। তখন ঐ একটা নিশ্চিন্ত মনে বসে আছে সেই দিনটা চলে গেছে আমাদের। এভাবে দেখবেন সাধু ভাষা থেকে চলতি ভাষা পরিবর্তনের সময়টা।

দেখবেন নগর নির্ভর যান্ত্রিক সভ্যতার ভিতর আমরা পা রাখলাম যখন, তখনই আমাদের সেই ভাষাটাও পরিবর্তন হলো। এখন যদি আমরা বাংলাভাষার দিকে তাকিয়ে দেখি আমাদের দূরবর্তী কোনো অঞ্চলে কোনো বাঁধা নেই। যেমন আমাদের ঢাকা থেকে সিলেট যেতে লাগতো দুই দিন। এখন বিমান আছে, বিমানে দেড় ঘন্টায় আমরা পৌঁছে যেতে পারি। ঢাকা থেকে যদি রওয়ানা দেই রংপুরে আমি চার ঘণ্টায় পৌঁছে যেতে পারি।

এখনতো পদ্মা সেতু তৈরি হওয়ার জন্য খুলনা শহরে পর্যন্ত আমি চার ঘণ্টায় পৌঁছে যেতে পারি। ফলে অঞ্চলগত যে ভাষাটা ছিল আমাদের, যেটাকে ডায়ালেক্ট বলি। সিলেট, চিটাগাং ও যশোরের সেই ভাষাও এখন অনেকটা স্থানীয় হয়ে গেছে। অর্থাৎ সিলেট শহরে গেলেই যে সে ভাষা বলতে হবে তা না। সিলেট শহরে আমি আইতাছি যাইতাছি বললে মানুষ বোঝে। এই যে আমাদের একটা চলিত ভাষা চলে এসেছে যেটা সর্বশেষ।

যেটাকে অনেকে বলে জগাখিচুরি এটাও কিন্তু সময়ের প্রয়োজনে। কারণ, এখন আমি বগুড়ার ভাষা শুনি না, আমি আইতাছি যাইতাছি শুনি। এটা হচ্ছে পণ্যের যুগে বাণিজ্যের যুগের নিয়ম। এটা গ্লোবালাইজেশনের কারণেই এমনটি হয়েছে। তবে কোকাকোলা সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য যদি পৃথিবীর সব পানিয় সরিয়ে দিয়ে যদি কোকাকোলাকে সামনে আনতে পারি, তাহলে ফল ধীরে ধীরে পাওয়া যাবে।

আর কোকাকোলাকে সবাই গ্রহণ করবে কেন। আমি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে বোঝালাম যে কোকাকোলা সবচেয়ে ভালো পানিয়। সে যদি ইংরেজী জানে তার জন্য সবচেয়ে সহজ ইংরেজিতে বোঝানো, সে জন্য ইংরেজির প্রচলন সবচেয়ে বেশি। একইভাবে আমাদের দেশে যেটা হয়েছে বিজ্ঞাপনের কারণে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া একই পন্য বিক্রি করার প্রচলন করা। সেজন্য ভাষাগত একটা ঐক্যের প্রয়োজন যে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়ার মানুষ যেন এটা গ্রহণ করবে? বিষয়টি ভাষাগত আইতাছি যাইতাছি সেটার মতো। 

একটা সময় বাংলা সিনেমাতেও সুন্দর বাংলা ব্যবহার করা হতো। এখন সিনেমাতেও এধরনের ব্যবহার করা হয়। এটি যুগের প্রয়োজনে করা হয়। সময়ের প্রয়োজনে করা হয়। এটা নিয়ে হাহাকার করার কিছু নেই। তবে এটাকে আধুনিকায়ন বলবো না। এটি হচ্ছে সময়ের বিবর্তনে ভাষার রূপ পালটে যাওয়া। এটাতো সবসময় হয়ে আসছে। চর্যাপদের ভাষা কী এখন মানুষ বলবে।

আমি কী চর্যাপদের ভাষাকে অনাধুনিক বলবো, চর্যাপদ সেই সময় থেকে আধুনিক। সাধুভাষা সাধুভাষার সময়ে আধুনিক ছিল। যখন মধুসুদন শান্তিপুরে কুষ্টিয়ার ভাষা ব্যবহার করছেন তার নাটকে, চোখ কপালে উঠে গিয়েছিল পণ্ডিতদের; কিন্তু তিনি দেখিয়ে দিলেন সাধারণ মানুষের কথাগুলো যদি সাধারণ মানুষের মুখে লাগিয়ে দেই নাটকে আমার প্রাণ ফিরে আসবে।

মধুসুদন এমন একটা সময় করেছেন এ কাজ, তখন সাধুভাষার সবচেয়ে সুন্দর সময় ছিল। কেন তিনি তো পশ্চিম থেকে পড়ে এসেছেন। তিনি যদি যন্ত্রযুগের মানুষ হয়ে যদি এমনটা করতে পারেন, তাহলে সমস্যা কোথায়? পরিবর্তনকে রাগ করে ছুঁড়ে দেওয়াটা উচিৎ নয়। কেবলই একটা কথা বলি, যখনই পরিবর্তন আসবে তখনই ভাষার পরিবর্তন ঘটবে, কিন্তু ভাষার বিকৃতি যেন না হয়।

এহসান হায়দার: আপনার ভাষাচিন্তা জানতে চাই?

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম: ভাষা নিয়ে আমার যেটা চিন্তা। আমাদের মিডিয়ার কথা, আমি টেলিভিশনে দেখি- আমরা যখন সরাসরি কথা বলি উপস্থাপন করি। ধরুন রাস্তায় একটা দূর্ঘটনা ঘটেছে, ঘটনাটি একজন প্রতিবেদক সরাসরি জানাচ্ছেন আমাদের। তিনি রিপোর্ট করার সময়ে এমন বিপর্যস্ত হয়ে যান- যেন দুইটা লাঠি ছাড়া তার চলে না; কিন্তু হ্যাঁ আমি দাঁড়িয়ে আছি আমার সামনে দুইটা গাড়ি, একসিডেন্ট, এমনি করে আপনি পাঁচ মিনিট শোনার পরে বুঝতে পারবেন না তিনি কি বলতে চাচ্ছেন।

অথচ যদি প্রথম শ্রেণি থেকে ঐ প্রতিবেদক বাংলা ভাষাটা শিখতেন। তিনি বলতেন যে- আমি যেখানে দাঁড়িয়ে আছি তার কিছু দূরে একটা সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। আমি যত দূর জানি একটি গাড়ি ধাক্কা দিয়েছিল এই গাড়িকে। তার থেকে ক্ষয়ক্ষতি যা হয়েছে- তিনজন মানুষকে হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এভাবে তিনি যদি সুন্দর থেমে থেমে বলেন।

তাহলে তিনি দুই মিনিটে সুন্দর রিপোর্টটা করতে পারেন। অথচ আমি দেখেছি অস্থির হয়ে নিঃশ্বাস ফেলতে ফেলতে যেন বাংলাভাষা কঠিন এক দূধর্ষ কঠিন একটা ভাষা পৃথিবীতে। মাতৃভাষা নিয়ে এতো কুস্তি করতে আমি দেখিনি কাউকে। আমি ভাষাটা শিখতে পারিনি এবং শিখে তা চর্চা করার মতো আমার সামর্থ্য নেই, ক্ষমতা তৈরি হয়নি।

এর থেকে আমাদের মুক্তি চাই। ভাষার প্রতি এই এক মাসের উদারতার চেয়ে প্রথম শ্রেণির থেকে শিখতে শুরু করাটা জরুরি, তবেই আমরা ধীরে ধীরে ভাষার প্রতি দরদ তৈরি করতে পারবো, বলতে পারবো সঠিকভাবে।

এহসান হায়দার: আপনার নিজের সাহিত্যে লেখার ক্ষেত্রে ভাষার দিকটা কীভাবে দেখেন?

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম: আমি বাংলাভাষার যে দিকটা নিয়ে কাজ করি সেটা হচ্ছে কথ্য সাহিত্যের ঐতিহ্য। আমাদের লিখিত সাহিত্য, ছাপার অক্ষরে যে সাহিত্য তৈরি হলো সেটা দুইশ-তিনশ বছরের বেশ পুরনো। এবং সেটা পশ্চিমা আধুনিকতার পথ বেয়ে ভারতে এসেছে পশ্চিমবঙ্গে এসেছে, ঢাকায় এসেছে। এর আগের যেটা ঐতিহ্য সেটা কথ্য সাহিত্যের, কয়েক হাজার বছরের পুরনো এবং সেখানে গল্পের মর্যাদা বহু আগে ছিল।

লিখিত সাহিত্যের গল্প আসলো পশ্চিমে আঠারো শ শতকে, আমাদের এখানে উনিশ শতকের কথা সাহিত্যে। আর আমাদের লোক কথা বা লোক সাহিত্য সেই কয়েক হাজার বছরের পুরনো যা রয়ে গেছে এখানে। এখন আমি নতুনটা নেবো- যেটা পশ্চিম থেকে এসেছে, না-কী আমাদের লোক সাহিত্যের ঐতিহ্য যেটা আছে সেটা নেবো?

আমি তো আমার নিজের যা তা নিয়েছি। সেটা নেওয়ার ফলে যেটা হয়েছে আমি জনজীবনের কাছে যেতে চেয়েছি। আমার ছোটবেলায় শখ ছিলো গল্প শোনা, খুঁজে খুঁজে বের করতাম কোথায় গল্প হচ্ছে। আমি কখনো গ্রামের বাড়িতে থাকিনি। যখনই যেতাম মামা বাড়িতে সেখানে কোথাও গল্প শোনার জন্য ছুটে যেতাম। আমার ছোটবেলায় দেখতাম যে গল্পকথক অত্যন্ত সহজ ভাষায় সুন্দর প্রকাশে আবেগের অনুভূতির যত কল্পনা আছে তার একেবারে প্রতিচ্ছবিগুলি তুলে ধরতে পারতেন।

আমি ভাবতাম মনে মনে এতো সমৃদ্ধ বাংলা ভাষা। কথক এবং সেই কথ্য ভাষায় কোনো বিকৃতি ছিল না। অর্থ্যাৎ কোনো বিদেশি ভাষা ঢুকে পড়তো না। বিদেশি ভাষার প্রচলনও সেখানে ছিল না। তবে বিদেশি ভাষাও ছিল আমাদের এখানে; কিন্তু ভাষাকে নষ্ট করেনি। সে সময়ে আমাদের একটা ভাষা আর একটা ভাষাকে সমৃদ্ধ করেছে, ভাষায় ভাষায় কথোপকথন চলেছে। এটি পৃথিবীর সমস্ত সংস্কৃতির ব্যাপার আমাদের দেশেও হয়েছে।

আমি কথ্য সাহিত্যের গল্পের যে স্বাচ্ছন্দ আছে, সেটা আমি বজায় রাখার চেষ্টা করেছি। কথ্য ভাষার একটা সারল্য আছে, সে কিন্তু জীবনের গভীর বিষয়গুলোকে তুলে ধরে। আমি সেই দিকেই চেষ্টা করেছি। আমি কতটুকু সফল হয়েছি সেই দিকে বলার বিতর্ক আছে বা আমি নিজেও সব সময় সন্তুষ্ট নই। আমি মনে করি আমি যে কাজটা করেছি সেটা আমার দায়বদ্ধতার থেকে করেছি।

আমার নিজের সংস্কৃতির একটা গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল আমাদের কথ্যভাষার, কথ্যগল্পের, মুখে শোনা গল্পের- আমি সেটিই আমার গল্পে ধরে রাখার চেষ্টা করেছি। ফলে আমার ভাষাগত একটা ঐতিহ্য আমার নিজের করে নিয়েছি। ফলে আমার পরিশ্রমটা কম হয়েছে। তারমধ্যেও আমি আমার আধুনিকতার প্রকাশ তো করেছি, কারণ আমি এই সময়ের মানুষ।

আমিতো নগরের মানুষ, নগরের এ সভ্যতায় থাকি বেশ কিছুকাল হয়ে গেলো। ফলে নগরের নিঃসঙ্গতা, নগরের যন্ত্রণা সেগুলি ছায়া ফেলেছে আমার গল্পে; কিন্তু মূল কাঠামোটা আমি ধরে রেখেছি। আমাদের গল্প বলার ঐতিহ্যটা নিয়ে এসেছি আমার গল্পে।

এহসান হায়দার: অনেক ধন্যবাদ স্যার আপনাকে।

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম: আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //