
দিলারা জামান। ছবি: সংগৃহীত
অভিনেত্রী দিলারা জামান। নাটক ও চলচ্চিত্রে দুই মাধ্যমেই কাজ করেন তিনি। আট থেকে আশি সব প্রজন্মের কাছেই তিনি পরিচিত। গুণী এই অভিনেত্রী সম্প্রতি ‘সবুজ গ্রাম পাথরের শহর’ শিরোনামের একটি ধারাবাহিকের শুটিং শুরু করেছেন। বৈশাখী টিভির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক টিপু আলম মিলনের গল্পে ও ইউসুফ আলী খোকনের চিত্রনাট্যে এটি নির্মাণ করছেন রোমান রুনি। ধারাবাহিক নাটক ও সমসাময়িক নানা বিষয়ে কথা বলেছেন অভিনেত্রী। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এন আই বুলবুল
দীর্ঘদিন পর নতুন ধারাবাহিক নাটকের শুটিং শুরু করেছেন। এই
ধারাবাহিকে কাজ করার কারণ কী?
এটি সত্যি, অনেক দিন নতুন কোনো ধারাবাহিকে কাজ করিনি। তবে
এ কাজটি করার জন্য যেটি বেশি আগ্রহ কাজ করছে, সেটি হলো গল্প। ধারাবাহিকটির নাম শুনলেই
বোঝা যায় এখানে গল্পকার কি বলতে চান। আমাদের শহুরে জীবন ও গ্রামীণ জীবনের একটা চিত্র
এই ধারাবাহিকে আছে। যেটি অনেক দিন পর আমাকে কাজ করার জন্য আগ্রহী করেছে। তবে আমাদের
সবুজ গ্রামও এখন আর আগের মতো সবুজ নেই। শহরের একটা প্রভাব গ্রামে পড়েছে। শহরের কথা
তো নতুন করে কিছু বলার নেই।
গত কয়েক বছরে অনেকের মন্তব্য, আগের মতো টিভি নাটকের দিকে
দর্শকের আগ্রহ নেই। আপনি কী মনে করেন?
সত্যি বলতে, আগের মতো এখন আর কিছু হবে না। এ জন্য আগের সঙ্গে তুলনা না করা ভালো। আগে আমাদের দর্শকের বিটিভি ছাড়া আর কিছুই দেখার সুযোগ ছিল না। কিš‘ এখন সারা বিশ্ব মানুষের হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। বিশ্বের অনেক বিনোদনের সঙ্গে দর্শক পরিচিত হয়ে আছে। এখন আমাদের সময়োপযোগী কাজ দিয়েই দর্শকের মন ভরাতে হবে।
দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করছেন। এ সময়ে শুটিং স্পটে এলে কেমন অনুভূতি হয়?
আমার এখন ৮২ বছর বয়স চলে। এ সময়ে এসেও কাজ করতে পারছি, এটি আমার জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। তবে এখন প্রতিটি কাজকেই আমার শেষ কাজ মনে করি। যেদিন যে কাজটি করার জন্য শুটিং স্পটে আসি, মনে মনে ভাবি আমার জীবনে হয়তো এটিই শেষ শুটিং।
নতুন প্রজন্ম অনেক আধুনিকতার মধ্য দিয়ে জীবন যাপন করছে। এটিকে
আপনি কীভাবে দেখছেন?
নতুন কিছু আসবে, সেটিকে নতুন প্রজন্ম গ্রহণ করবে, এটিই স্বাভাবিক। তবে নিজের অস্তিত্বকে অস্বীকার করা যাবে না। কিন্তু আজকাল সব কিছু কেমন যেন হয়ে
গেছে। যেমন আমাদের বাঙালি নারীদের প্রিয় হলো শাড়ি। অথচ এখন অনেক মেয়ে শাড়ি পরতে চায়
না। এমন অনেক ঐতিহ্য আমাদের আড়ালে চলে যাচ্ছে। আমি মনে করি, যাই করি আমাদের ঐতিহ্যকে
হারিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না।
এখন অনেকে অভিনয় করতে এসে ভাইরাল হতে চায়। এটি আমাদের সংস্কৃতির
জন্য কতটা ভালো-মন্দ?
সহজে যদি কেউ কিছু পায় সেটির মূল্য থাকে না। এ জন্য নিজের
যোগ্যতা ও পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে অর্জন করতে হবে। সেটির স্বীকৃতিও অন্য রকম। নতুনদের
অনেকেই অল্প সময়ে তারকা হতে চায়। এ চিন্তা থেকে বের হয়ে আসতে হবে।