মিষ্টি হাসির লাস্যময়ী মডেল ও অভিনেত্রী দোলন দে। প্রায় তিন মাসের বিরতির পর সম্প্রতি ফের কাজ শুরু করেছেন তিনি। ইতিমধ্যে শেষ করেছেন পাঁচটি নাটকের কাজ।
করোনাকালে শুটিংয়ে ফেরা প্রসঙ্গে দোলনের মন্তব্য, ‘অন্য পেশার মানুষজন কিন্তু কাজ করছে। শিল্পীরাই শুধু ঘরে বসে থাকলে সুস্থ থাকবে তা তো না। ঘরে থেকেও অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। আজ হোক কাল হোক বের হতেই হবে। নিজের সুরক্ষা নিজের কাছে। আমি যদি নিজের খাবার নিজেই নিয়ে আসি, মাস্ক পরি, গ্লাভস পরি তাহলে অনেকটা নিরাপদ থাকা যায়। অর্থাৎ স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়গুলো মেনে চলাটা জরুরি। তা ছাড়া আমি একটু দেরিতে কাজ শুরু করেছি। প্রথমে ভেবেছি কয়েক দিন হবার পর বন্ধ হয়ে যাবে; কিন্তু না, কাজ তো চলছে। আমি প্রথম বুঝতে পারিনি। এ জন্য কয়েকটি কাজ ছেড়ে দিয়েছি; কিন্তু ভেবে দেখলাম ঝুঁকি নিয়েই কাজ করতে হবে।’
এরই মধ্যে যে কাজগুলো দোলন শেষ করেছেন সেগুলো হলো সঞ্জিত সরকারের ‘চিটিং মাস্টার’, রুবেল রানার ‘মুশকিল আসান’, অপি আশরাফের ‘বিয়ের প্যারা’, আবু বিপ্লবের ‘সেদিন দু’জনে’ ও আসাদুজ্জামান তুহিনের ‘দেখা হবে’। সামনে আরও কয়েকটি নাটকের কাজ করবেন তিনি। লকডাউনের আগে তিনি কয়েকটি বিজ্ঞাপনের কাজ করেন।
২০১২ সালে ভিট চ্যানেল আই টপ মডেল হয়ে শোবিজে যাত্রা শুরু করেন দোলন। তখন তিনি সদ্য এ লেভেল শেষ করে এসেছেন। এরপর পড়াশোনার জন্য কয়েক বছরের বিরতি নেন তিনি। লালমাটিয়া মহিলা কলেজ থেকে ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিংয়ে মাস্টার্স শেষ করেছেন দোলন। ২০১৬ সাল থেকে মূলত নিয়মিত কাজ শুরু তার।
সবচেয়ে ভালো কাজের কথা জানতে চাইলে দোলন একটু ভেবে বলেন, ‘কয়েকটি শর্ট ফিল্ম করেছিলাম। আমার খুব ভালো লেগেছিল। দুটি গল্প আমার নিজেরই ছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে কাজগুলোর তেমন ভিউ হয়নি। গতানুগতিক ধারার বাইরের কাজ। প্রশংসা করেছেন অনেকে।’
দোলনের পছন্দের কাজগুলো হলো রায়হান খানের পরিচালনায় তার লেখা গল্পে ‘ফিউশন অব লাভ’ ও ‘অতঃপর মন’, রাইসুল তমালের ‘প্রিয় মুখ’ এবং ‘সুজন ও মালার দিনগুলো’। ভিউ নিয়ে দোলন বলেন, ‘ভিউ হলেই যে ভালো নাটক হবে, সে কথায় বিশ্বাসী নই আমি। আমার নিজেরই এমন নাটক আছে যেগুলোর অনেক ভিউ; কিন্তু কাজগুলো করার জন্য করা। অনেক ভালো নাটক আছে যেগুলোর চিত্রনাট্য ভালো। সেগুলোর ভিউ হয় না। আসলে দর্শক এক ধরনের গল্প দেখতে দেখতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। তাই ভালো কাজ তারা দেখছে না। যেসব নাটকে কিছু শেখার নেই, সেগুলোই দর্শক বেশি দেখছে।’
ইদানীং ওয়েব সিরিজ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া সরগরম। অশালীন দৃশ্য ও সংলাপের জন্য সমালোচিত হচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে দোলন তার দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে বলেন, আমরা বয়ফ্রেন্ড বা গার্লফ্রেন্ডের সঙ্গে কথা বললে কিন্তু কাউকে দেখিয়ে কথা বলি না। ওয়েব সিরিজও তেমনি ব্যক্তিগতভাবে দেখার জন্য নির্মাণ করা হয়। দর্শককে প্যাকেজ কিনে দেখতে হয়। প্রাপ্তবয়স্ক হলে আমি তো দেখতেই পারি। আমরা বাইরে সাহসী দৃশ্য দেখে অভ্যস্ত তাই হুট করে দেশের সাহসী দৃশ্য নিতে পারছি না। আস্তে আস্তে দর্শককে অভ্যস্ত করলে এত সমালোচনা হতো না। এসব দেখতে তো দর্শক বাধ্য নয়। আবার আমাদের দেশের প্রেক্ষাপট মাথায় রেখে ওয়েব সিরিজ নির্মাণ করলে এসব কথা ওঠে না।
গল্পের প্রয়োজনে সাহসী দৃশ্য আসতে পারে তবে উপস্থাপনা শালীনভাবে করতে হবে।’ আপনি ওয়েব সিরিজ করবেন কি-না জানতে চাইলে দোলন বলেন, ‘আমি অবশ্যই ওয়েব সিরিজ করব। আগেও কাজের প্রস্তাব পেয়েছি। নানা কারণে করা হয়নি। তবে ভবিষ্যতে সুন্দর গল্পের কোনো প্রস্তাব পেলে কাজ করার ইচ্ছে আছে। বিশেষ করে জীবনধর্মী গল্পের ওয়েব সিরিজে কাজ করতে চাই।’
নিজের পরিকল্পনা সম্বন্ধে দোলন বলেন, ‘ভালো ভালো কাজ করতে চাই। চাকরি করার তো ইচ্ছে নেই, অভিনয়ই করব। বড়পর্দায়ও কাজ করার ইচ্ছে আছে। বিশেষ করে গল্পভিত্তিক চলচ্চিত্রে কাজ করতে চাই। চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন উৎসবে দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পারলে ভালো লাগবে।’