আইফেল টাওয়ারের উচ্চতা গ্রীষ্মে বাড়ে,শীতে কমে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ জুন ২০২৩, ১৫:৪২

আইফেল টাওয়ার
১৩১ বছর ধরে মাথা উঁচু করে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে বিশ্বের বৃহৎ, দৃষ্টিনন্দন এই আইফেল টাওয়ার। পৃথিবীর অন্যতম আশ্চর্য স্থাপনাগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। কিন্ত মজার বিষয় হলো, টাওয়ারটির উচ্চতা প্রতি বছর বাড়ে ও কমে। এও কি সম্ভব! আসুন জেনে আসি আসলেই কি ঘটে থাকে।
আইফেল টাওয়ারটির ১৮৮৯ সালের ৩১ মার্চে নির্মিত হয়েছিল। সেসময় এটির মূল উচ্চতা ছিল ৩০০ থেকে ৩১২ মিটার। ১৯৩১ সাল পর্যন্ত আইফেল টাওয়ারটি ছিল বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু টাওয়ার। পরে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৮১ মিটার উচ্চতার অ্যাম্পায়ার স্টেট বিল্ডিং নির্মিত হলে শীর্ষ স্থানটি হারায় আইফেল টাওয়ার।
আর তখন থেকেই এটি উচ্চতায় বৃদ্ধি পেয়ে ৩৩০ মিটারে দাঁড়ায়।
তবে কি কারণে আসলে এমন হচ্ছে সেটা নিয়ে শুরু হয় গবেষণা। তাতে দেখা যায়, বৈজ্ঞানিক কারণেই এমনটি হয়ে থাকছে।
মূলত এটি এমনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে যাতে করে শীত, ঠান্ডা, বৃষ্টি, তুষার ও গরমের মধ্যেও টাওয়ারটি খাপ খাইয়ে থাকে।
মূলত লোহা বেশ সংবেদনশীল। তাপ প্রয়োগে এর আয়তন বেড়ে থাকে। যেহেতু ফ্রান্সে গ্রীষ্মের সময় তাপমাত্রা বেশি থাকে তাই টাওয়ারের লোহা সম্প্রসারিত হয়। অনুরুপ শীতে প্রবল ঠান্ডায় তা সংকুচিত হয়ে আসে। আর যখন তাপমাত্রা বাড়ে তখন এটির উচ্চতা কয়েক সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পায়।
এটিকে পদার্থ বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় থারমাল এক্সপানশন। আর এটির আরেকটি কারণ টাওয়ারটি সূর্যের দিক হতে থেকে কিছুটা হেলে থাকায়। এতে করে টাওয়ারের চার পাশে সূর্যের আলো না পৌছিয়ে তিনপাশে তাপ প্রয়োগ করে।
মূলত যে কোন পদার্থের মধ্যে দুটি শক্তি বিদ্যমান। একটি পদার্থে অবস্থিত কণাগুলোর মধ্যে বিদ্যমান আকর্ষণ শক্তি যাকে বলা হয় আন্তঃকণা আকর্ষণ শক্তি ও অপরটি কণাগুলোর গতি শক্তি ।
যখন বাইরে থেকে তাপ প্রয়োগ করা হয় তখন এ পদার্থের কণাগুলোর গতি শক্তি বৃদ্ধি পেতে থাকে। ফলে কণাগুলো একে অপরের কাছ থেকে দূরে সরে যায়। এতে পদার্থের আয়তন বৃদ্ধি পায় । এ জন্য বলা হয়ে থাকে তাপ প্রয়োগে পদার্থের আয়তন বৃদ্ধি পায়।
উল্লেখ্য, শীতকালে এটি ৪.৮ ইঞ্চি কমে যায় । আইফেল টাওয়ার তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে পেটা লোহা। যা সহজেই তাপ গ্রহণ করে প্রসারিত হতে পারে।
অন্যদিকে প্রবল বাতাসের ফলে টাওয়ারটি দোল খেয়ে থাকে যা উচ্চতা ও বাতাসের ধর্মের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তবে এ বাতাসের বেগে কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয় না আইফেল টাওয়ারের।
গত ২০ বছর যাবত এ বিষয়ে গবেষণাও চালিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বাঁকানো আকৃতির কারণে বাতাসের গতিবেগে টাওয়ারের কোনো সমস্যা হয় না।
সূত্র: টুরি আইফেল