ওয়াগনার কলকাঠি নাড়ছে,অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের
মালি থেকে শান্তিরক্ষা মিশন প্রত্যাহার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৩, ২১:০২

এক দশক ধরে চলা আফ্রিকার মালিতে জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশন কার্যক্রমের ইতি টানতে চলেছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। মঙ্গলবার (৩০ জুন) এই শান্তি মিশনের সমাপ্তি ঘোষণা করে সংস্থাটি।
এর আগে মালির জান্তা সরকার এই কার্যক্রম শেষ করতে জাতিসংঘের ওপর চাপ প্রয়োগ করে। এসময় মালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদৌলায়ে দিওপ অনতিবিলম্বে এই শান্তি মিশন প্রত্যাহার করে নিতে বলেন জাতিসংঘকে।
পরে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ শুক্রবার (৩০ জুন) সর্বসম্মতিক্রমে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালি থেকে শান্তিরক্ষী বাহিনী সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহারের অনুমোদন দেয়। আর এই অনুমোদনের মধ্যদিয়ে আগামী ছয় মাসে ১৬০০ বাংলাদেশিসহ প্রায় ১৭ হাজার ‘নীল হেলমেট’ দেশ ছাড়বে।
এ শান্তিরক্ষা মিশনে ১৬৩৬ বাংলাদেশি সেনাসহ ১৭০০০ সৈন্য মোতায়েন ছিল।
মালিতে এর আগে ইসলামিক একটি জিহাদিপন্থী দলের আক্রমণে কয়েকহাজার লোক মৃত্যু বরণ করেছিলেন। পরে শান্তিরক্ষা মিশনের আওতায় সেনা মোতায়েন হলে
দেশটিতে স্থিতিশীলতা ফিরে আসে। তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, সেনা প্রত্যাহারে
পুনরায় মালির পরিস্থিতি পূর্বের নৃশংস অবস্থায় ফিরে যাবে।
এদিকে শনিবার ( ১ জুলাই) থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু হয়ে ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি সম্পূর্ণভাবে শেষ হবে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
অন্যদিকে মালিতে শান্তিরক্ষা মিশন শেষ করতে ভোট চলার সময়ই যুক্তরাষ্ট্র মালি থেকে শান্তিরক্ষীদের তাড়াতে ওয়াগনার প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিনের কলকাঠি নাড়ার বিষয়ে ইঙ্গিত করেছে। তারা বলেছে, মালি কর্তৃপক্ষ ২০২১ সালের শেষের দিক থেকে এ পর্যন্ত ওয়াগনারকে ২০ কোটি ডলার দিয়েছে এমন তথ্য তাদের হাতে রয়েছে।
আর এ প্রসঙ্গে হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মুখপাত্র জন কিরবি বলছেন, ওয়াগনারের স্বার্থ রক্ষা করতেই বাহিনীটির প্রধান প্রিগোজিন শান্তিরক্ষা মিশনকে মালি থেকে সরিয়ে দিতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন।
এদিকে ১ হাজার ওয়াগনার যোদ্ধা দেশটির উত্তরাঞ্চলে নিরাপত্তা দিবে বলেও গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।
তবে জাতিসংঘে রাশিয়ার উপ-রাষ্ট্রদূত আন্না এভস্টিগনিভা নিরাপত্তা পরিষদকে অবশ্য বলেছেন, মালি ‘সার্বভৌম সিদ্ধান্ত’ নিয়েছে।
জাতিসংঘের তথ্যানুসারে, শান্তিরক্ষার এ মিশনে বাংলাদেশ দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অবদানকারী দেশ। এতে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর ১৩৪৮ জন সদস্য, পুলিশের ২৪০ জন ও ৪৮ জন অন্যান্য কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করছেন।
উল্লেখ্য, মালিতে ২০১৩ সালে জিহাদি দখল প্রতিরোধে জাতিসংঘের মিশন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ১৮ বাংলাদেশি কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন।
সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি