
সাময়িক যুদ্ধবিরতি শেষে ফিলিস্তিনের গাজায় হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। ছবি: সংগৃহীত
যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পরপরই ফিলিস্তিনের গাজায় আবার হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় সকালে এ হামলা শুরু হয়।
আল-জাজিরার খবরে গাজার স্বাস্থ্যবিষয়ক কর্মকর্তাদের বরাতে জানানো হয়েছে, হামলায় এ পর্যন্ত গাজায় ১৮৪ জন নিহত হয়েছেন।
গাজার স্বাস্থ্যবিষয়ক কর্মকর্তারা আরো জানিয়েছেন, ইসরায়েলি হামলায় আহত হয়েছেন ৫৮৯ জন। কমপক্ষে ২০টি ঘরবাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে।
এদিকে ইসরায়েলি হামলার জবাবে হামাস ও ইসলামিক জিহাদসহ গাজার স্বাধীনতাকামী সংগঠনগুলো ইসরায়েলের সীমান্তবর্তী এলাকা লক্ষ্য করে রকেট ও মর্টার হামলা চালিয়েছে। এসময় ইসরায়েলের পাঁচ সেনা আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
গাজায় গত ২৪ নভেম্বর শুরু হওয়া চার দিনের যুদ্ধবিরতি দুই দফা বাড়িয়ে সাত দিন করা হয়। মেয়াদ বাড়াতে আন্তর্জাতিক চাপ ও হামাসের পক্ষ থেকে নতুন করে প্রস্তাব দেওয়া হলেও রাজি হয়নি ইসরায়েল।
ইসরায়েল সেনাবাহিনী গতকাল দাবি করেছে, ‘হামাস যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করেছে। পাশাপাশি তারা ইসরায়েলি ভূখণ্ড লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। পরে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী গাজা উপত্যকায় হামাসের বিরুদ্ধে আবারো হামলা শুরু করেছে।’
তবে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে হামলা শুরুর জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছে হামাস। সংগঠনটির জ্যেষ্ঠ নেতা খলিল আল-হায়া আল-জাজিরাকে বলেন, জিম্মি মুক্তি নিয়ে সমঝোতায় তিনটি প্রস্তাব দিয়েছিল হামাস। তবে ইসরায়েল এতে রাজি হয়নি।
হামাসের এই নেতা আরো বলেন, ইসরায়েলের পক্ষ থেকেও জিম্মি নারী সেনাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করে একটি তালিকা দেওয়া হয়। তাতে রাজি হয়নি হামাস। অন্যদিকে বয়োজ্যেষ্ঠ বন্দী বিনিময়ে ইসরায়েল রাজি হয়নি। এছাড়া জীবিত জিম্মি ব্যক্তিদের মুক্তির পাশাপাশি মৃত জিম্মি ব্যক্তিদের মরদেহ ফেরত দেওয়ার প্রস্তাব দেয় হামাস। বিপরীতে ইসরায়েলি সেনা গিলাদ শাতিলের মুক্তির বিনিময়ে কারামুক্ত হওয়া ফিলিস্তিনিদের মধ্যে যাদের আবার আটক করা হয়েছে, তাদের ছেড়ে দেওয়ার শর্ত দেওয়া হয়। ইসরায়েল এতে রাজি হয়নি।
দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ ও প্রস্তাব নাকচ করে দেওয়ার মধ্যে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা শুরু হলো। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থানকালেই আবার শুরু হলো নতুন এ লড়াই। আগের দিন, গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের যুদ্ধকালে মন্ত্রিসভার বৈঠকে অংশ নেন ব্লিঙ্কেন। দৃশ্যত ওই বৈঠকে গাজায় নতুন করে হামলার বিষয়ে ইসরায়েলকে তিনি ওয়াশিংটনের ‘সবুজ সংকেত’ দেন বলে মনে করছেন অনেক বিশ্লেষক।