Logo
×

Follow Us

আন্তর্জাতিক

গাজা যেন ‘কিয়ামতের ময়দান’

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৪:১১

গাজা যেন ‘কিয়ামতের ময়দান’

সংগৃহীত ছবি।

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার নাসের হাসপাতালে চলছে তুমুল হট্টগোল, আর্তচিৎকার আর আহাজারি। হাসপাতালের বাইরে মানুষের ছিন্নভিন্ন দেহ নিয়ে একের পর এক ছুটে আসছে অ্যাম্বুলেন্স, ট্রাক ও গাধায় টানা গাড়ি। মানুষগুলোর কারও কারও শরীরে প্রাণের স্পন্দন পাওয়া যাচ্ছে আবার কেউবা একেবারে নিথর। এরই মধ্যে কাঁদতে কাঁদতে এক শিশুর আবদার, ‘আমার মাকে এনে দাও।’ যদিও শিশুটি জানেনা ওর মা আর কখনো ফিরে আসবেন না।

গত সোমবার রাতে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের এক স্কুলে ইসরায়েলের নারকীয় বোমা হামলায় অনেকের সাথে নিহত হয়েছেন শিশুটির মা। স্কুলটিতে আশ্রয় নেওয়া হতাহত ব্যক্তিদেরই নিয়ে আসা হয় নাসের  হাসপাতালে। আর এমন নারকীয় হামলা ও রক্তক্ষয়ের চিত্রই এখন পুরো গাজাজুড়ে।

এদিকে ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের মানবিক ত্রাণ সহায়তাবিষয়ক সমন্বয়ক লিন হেস্টিংস মঙ্গলবার বলেছেন, ‘গাজার কোথাও নিরাপদ নয়, গাজাবাসীর আশ্রয় নেওয়ার কোনো জায়গা আর বাকি নেই।’

এর আগে ইসরায়েলের হুমকির মুখে প্রথমে উপত্যকাটির উত্তর থেকে দক্ষিণে পালাতে হয়েছিল গাজাবাসীদের। এখন দক্ষিণ থেকে আরও দক্ষিণে তাদেরকে সরে যেতে বলা হচ্ছে। 

এরই মধ্যে সোমবার থেকে উত্তরের পাশাপাশি দক্ষিণ গাজায় স্থল ও আকাশপথে নির্বিচারে বোমাবর্ষণ শুরু করেছে আইডিএফ।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার গাজায় সাত দিনের যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার কয়েক দিন পরই দক্ষিণ গাজায় স্থল অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। এ সময় খান ইউনিসের বাসিন্দারা জানান, এলাকাটির পূর্বাংশে প্রথমবারের মতো ইসরায়েলের ট্যাংক প্রবেশ করেছে। সেগুলো বনি সুহাইলা ও হামাদ সিটি এলাকায় অবস্থান নিয়েছে। 

ইসরায়েল সরকারের মুখপাত্র ইলন লেভি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা এখন দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধে এগিয়ে চলেছি। এই ধাপ কঠিন হতে চলেছে।’

এদিকে গাজা বাসিন্দাদের শোচনীয় অবস্থার কথা তুলে ধরেছে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা। জাতিসংঘের জরুরি ত্রাণ সমন্বয়ক মার্টিন গ্রিফিথসের মতে, গাজায় ‘কেয়ামতের ময়দান’ এর মতো পরিস্থিতির দেখা মিলেছে। আর ইউএনআরডব্লিউএর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেন, গাজার মানুষকে যেখানে চলে যেতে বলা হয়েছে, যার আয়তন পুরো উপত্যকাটির এক-তৃতীয়াংশের কম।

অন্যদিকে মঙ্গলবার কাতারের রাজধানী দোহায় অনুষ্ঠিত গালফ কো–অপারেশন কাউন্সিলের (জিসিসি) সম্মেলনে দেশটির আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি বলেছেন, ইসরায়েল গণহত্যা চালাচ্ছে। এ ব্যাপারে নিশ্চুপ থাকার জন্য তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দোষারোপ করেন। শেখ তামিম বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে নতুন করে যুদ্ধবিরতি চুক্তির লক্ষ্যে কাজ করছে কাতার।

বর্তমান গাজার সহিংসতারোধে বাসিন্দাদের সুরক্ষা দিতে ইসরায়েলের প্রতি মঙ্গলবারও আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র কিংবা জাতিসংঘ যা–ই বলুক না কেন, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট মঙ্গলবার সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, উত্তরের চেয়ে দক্ষিণ গাজায় আরও জোরদার সামরিক শক্তি প্রয়োগে ব্যস্ত তারা।

সূত্র : রয়টার্স, এএফপি

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫