মৃত্যুমিছিল বাড়ছেই, নিউইয়র্কের হার্ট আইল্যান্ডে গণকবর

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১১ এপ্রিল ২০২০, ০৯:১৫

ছবি: বিবিসি
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস মহামারিতে সর্বোচ্চ আক্রান্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্র। আর মহামারি সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে দেশটির নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে। সেখানে প্রতিদিন মারা যাচ্ছে শত শত মানুষ।
নিউইয়র্কের একটি গণকবরে একসাথে বহু মানুষকে কবর দেয়ার ড্রোন দিয়ে তোলা ছবি ও ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে।
মুখ থেকে শুরু করে পা পর্যন্ত ঢাকা ‘হ্যাজমাট’ স্যুট পরা কর্মীদের কাজ করতে দেখা যাচ্ছে বিরাট এক গণকবরে। তারা মই দিয়ে সেই কবরে নামছে, একটার পর একটা কফিন সেখানে রাখছে।
এই কবরস্থানটি হচ্ছে নিউইয়র্কের হার্ট আইল্যাণ্ডে। সাধারণত যেসব মৃত ব্যক্তির কোনো আত্মীয়-স্বজনের খোঁজ পাওয়া যায় না বা যাদের শেষকৃত্যানুষ্ঠানের খরচ দেয়ার সাধ্য নেই, তাদেরকেই এখানে কবর দেয়া হয়। হার্ট আইল্যান্ড গত দেড়শ বছর ধরেই গণকবরের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।
নিউইয়র্কের করোনাভাইরাস মহামারি এখন ভয়ংকর চেহারা নিয়েছে। বলা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই একটি রাজ্যের আক্রান্ত মানুষের সংখ্যাই অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি।
গত বৃহস্পতিবারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, নিউইয়র্কে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৫৯ হাজার ৯৩৭ জন। আর মারা গেছে সাত হাজারের বেশি।
করোনাভাইরাসের মহামারি শুরু হওয়ার পর এই জায়গায় কবর খোঁড়ার কাজ বেড়ে গেছে। আগে যেখানে কবর খনন করা হতো সপ্তাহে একদিন, এখন সপ্তাহে পাঁচদিন খনন কাজ চলছে। সাধারণত রিকার্স আইল্যান্ডের কারাবন্দিদের দিয়ে কবর খোঁড়ানো হয়। কিন্তু এখন যেহেতু অনেক বেশি কবর খুঁড়তে হচ্ছে, তাই এই কাজ দেয়া হয়েছে ঠিকাদারদের।
নিউইয়র্কের মেয়র বিল ডে ব্ল্যাসিও ইঙ্গিত দিয়েছেন, সংকট কেটে না যাওয়া পর্যন্ত হয়তো অনেককে অস্থায়ী কবরে সমাহিত করতে হতে পারে। ঐতিহাসিকভাবে আমরা হার্ট আইল্যান্ডকেই এই কাজে ব্যবহার করেছি।
নিউইয়র্কে করোনাভাইরাসের মহামারির ভয়াবহতাকে ৯/১১’র ভয়াবহতার সাথে তুলনা করেছেন গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো। তিনি বলেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
কামো আশাবাদী যে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। কারণ দ্বিতীয় দিনের মতো হাসপাতালে নতুন করে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা কমেছে।
তিনি বলেছেন, মানুষজন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখায় হয়তো পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।
দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের করোনাভাইরাস টাস্ক ফোর্সের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ডা. ফউসি এনবিসি টেলিভিশনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, কভিড-নাইনটিনে যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুর সংখ্যা ৬০ হাজারের মতো দাঁড়াবে বলে মনে করছেন তারা।
তবে গত মার্চে তারা অবশ্য এক লাখ হতে দুই লাখ মানুষ মারা যেতে পারে বলে আশংকা করেছিলেন। -বিবিসি