Logo
×

Follow Us

আন্তর্জাতিক

ঘনিষ্ঠ হচ্ছে ফ্রান্স-ব্রাজিল সম্পর্ক

Icon

এম এ আলআমিন

প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৪, ১৬:৫৮

ঘনিষ্ঠ হচ্ছে ফ্রান্স-ব্রাজিল সম্পর্ক

ফ্রান্স ও ব্রাজিলের পতাকা। ছবি: সংগৃহীত

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ গত মাসের শেষের দিকে তিন দিনের সফরে ব্রাজিল যান। তার এই সফর ব্রাজিলের সঙ্গে ফ্রান্সের সম্পর্ককে বেশ উষ্ণ করেছে। যে কোনো দেশের সরকারপ্রধানের রাষ্ট্রীয় সফরে করমর্দন, নৈশভোজ বা সংবাদ সম্মেলন খুব স্বাভাবিক ও গতানুগতিক কিছু বিষয়। আনুষ্ঠানিকতাগুলো প্রায় সব রাষ্ট্রীয় সফরেই হয়ে থাকে। তবে ম্যাক্রোঁর সফর আনুষ্ঠানিকতার গণ্ডিতে সীমিত ছিল না। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা ডি সিলভার সঙ্গে তিনি ঘুরতে গেছেন আমাজনের বন, সাও পাওলো ও রিওডি জেনিরো। এ সময় দুই নেতা পরস্পরের প্রতি যে আন্তরিকতা দেখিয়েছেন মনে হয়েছে তারা দুজনই বহুদিনের পুরনো বন্ধু। 

ম্যাক্রোঁর এই সফর ব্রাজিল ও ফ্রান্স-দুই দেশের দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ। লুলার পূর্বসূরি জাইর বোলসোনারোর সময় দেশ দুটোর মধ্যে বেশ তিক্ততা দেখা দিয়েছিল। সেদিক দিক থেকে দেখলে ম্যাক্রোঁ উভয় দেশের সম্পর্ক আবার আগের জায়গায় এনেছেন। ম্যাক্রোঁ ও লুলা নিজ নিজ এক্স অ্যাকাউন্টে আমাজন রেইনফরেস্ট ছবি শেয়ার করেছেন। সফর শেষে ম্যাক্রোঁর অফিস থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা এখন ফ্রাঙ্কো-ব্রাজিলিয়ান মুহূর্তে আছি।’ ম্যাক্রোঁর সফরসঙ্গীদের মধ্যে ফ্রান্সের কয়েকটি বড় কোম্পানির সিনিয়র কর্মকর্তারা ছিলেন। যদিও দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি হয়নি। তবে ম্যাক্রোঁ আশা প্রকাশ করছেন চুক্তি ছাড়াই দুই দেশ পারস্পরিক বণিজ্যিক সম্পর্ক এগিয়ে নিতে পারবে।

আমাজনের বন রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ম্যাক্রোঁ ১ বিলিয়ন ইউরো (১.১ বিলিয়ন ডলার) ব্যয় করার কথা ঘোষণা করেন। বন সংরক্ষণ এবং আমাজন অঞ্চলে টেকসই কৃষি উন্নয়নে আগামী চার বছরে ওই অর্থ ব্যয় হবে। এ ছাড়া ফ্রান্স ব্রাজিলকে একটি পরমাণু শক্তিচালিত সাবমেরিন তৈরি করে দিতেও রাজি হয়েছে। ব্যবসা বাণিজ্য ও বনজ সম্পদ উন্নয়ন ছাড়াও ম্যাক্রোঁর এই সফরকে বিশ্লেষকরা একটু ভিন্ন আঙ্গিকে দেখছেন। ‘আজকের দিনে উন্নত দেশগুলোর মধ্যে ফ্রান্সই একমাত্র দেশ যা বৈশ্বিক দক্ষিণের দাবিগুলো উদার ও সংবেদনশীল দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখছে’ বলেছেন ব্রাজিল ভিত্তিক গবেষণা সংস্থা প্লাটাফর্মা সিপোর নির্বাহী পরিচালক মাইয়ারা ফলি। গ্লোবাল সাউথ বা বৈশ্বিক দক্ষিণের দাবিগুলোর মধ্যে আছে, আন্তর্জাতিক জলবায়ু অর্থায়ন ব্যবস্থা সংস্কার, প্রস্তাবটি বার্বাডোজ দিয়েছে। এ ছাড়া ব্রাজিলের প্রস্তাবের মধ্যে আছে বিলিওনিয়ারদের ওপর ন্যূনতম বৈশ্বিক কর আরোপ। ব্রাজিলে চলতি বছর আরো পরের দিকে যে জি-২০ সম্মেলন হবে তাতে এই বিষয়গুলো প্রাধান্য পাবে বলে ধারণা করা যায়। 

যুক্তরাষ্ট্রে চলতি বছর অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয়বারের মতো ফিরে আসা নিয়ে জল্পনা যখন তুঙ্গে ইউরোপের দেশগুলো তখন বিকল্প নির্ভরযোগ্য মিত্র খুঁজছে। এমনি এক টালমাটাল সময় ম্যাক্রোঁ তার দেশকে বৈশ্বিক না হোক ইউরোপের নেতৃত্বের পর্যায়ে নিয়ে যেতে চান। ব্রেক্সিট ও ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি এখন ইউরোপের অনুকূলে নয়। বৈঠককালে দুই নেতা ইউক্রেন যুদ্ধ ও ভেনেজুয়েলার রাজনৈতিক সংকট নিয়ে আলোচনা করেন। অন্য সব পশ্চিমা দেশের মতো ফ্রান্সও যুদ্ধ শুরুর জন্য রাশিয়াকে দায়ী করে। কিন্তু লুলা এক্ষেত্রে মস্কোর সমালোচনা করেননি। তিনি বলেছেন, এ ব্যাপারে উভয় পক্ষের দায়দায়িত্ব রয়েছে। ছোটখাটো কিছু মতপার্থক্য সত্ত্বেও ম্যাক্রোঁর সফরকালে দুই নেতার মধ্যে যথেষ্ট সৌহার্দ দেখা গেছে। 

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫