
ইসরায়েলি পণ্য নিষিদ্ধ করলো সুইডেন। ছবি: সংগৃহীত
সুইডেনের গোথেনবার্গ শহরে ইসরায়েলি পণ্য নিষিদ্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আজ শনিবার (১৮ মে) সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
গোথেনবার্গ শহরের ডেপুটি মেয়র ড্যানিয়েল বার্নমার আল জাজিরাকে বলেন, আমরা মনে করি গোথেনবার্গের করদাতারা কর প্রদান করার মাধ্যমে যুদ্ধে অংশ নিতে চান না।
এর আগে গত ২ ফেব্রুয়ারি থেকে গাজায় নিহত ফিলিস্তিনি শিশুদের স্মরণে সুইডেনের রাজধানীতে বিক্ষোভ করছে একদল বিক্ষোভকারী।
বিক্ষোভকারীরা সার্জেলস টর্গে জড়ো হয়ে ‘ফিলিস্তিনীদের মুক্ত করুন’ ‘দখলদারি বন্ধ করুন’ স্লোগান দিয়ে ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদ জানায়। এছাড়াও বিক্ষোভকারীরা ইসরায়েলি পণ্য বর্জন এবং ইসরায়েলকে সমর্থনকারী সংস্থাগুলো বয়কটের আহ্বান জানান।
এদিকে অস্ত্র বহনকারী একটি ইসরায়েলগামী জাহাজকে নিজেদের বন্দরে নোঙর ফেলতে দেয়নি স্পেন। মারিয়ান ড্যানিকা নামের একটি জাহাজ ২১ মে দেশটির দক্ষিণ-পূর্ব কার্টেজেনা বন্দরে নোঙর ফেলার অনুমতি চেয়েছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৬ মে) একটি সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসে ম্যানুয়েল আলবারেস। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।
বেলজিয়ামে সফররত স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রাসেলসে সাংবাদিকদের বলেন, এই প্রথমবারের মতো আমরা এমনটি করেছি। আমরা ইসরায়েলগামী একটি অস্ত্রবাহী জাহাজ শনাক্ত করেছি যা স্পেনের বন্দরে ভিড়তে চেয়েছিল। এই নীতি ইসরায়েলের দিকে যাওয়া যে কোনো অস্ত্রবাহী জাহাজের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে। মধ্যপ্রাচ্যের আর অস্ত্র দরকার নেই সেখানে শান্তি দরকার।
স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, নেদারল্যান্ডের পতাকাবাহী জাহাজটি ২৭ টন বিস্ফোরক দ্রব্য ভারত থেকে সংগ্রহ করে ইসরায়েলের হাইফা বন্দরের দিকে যাচ্ছে।
অন্যদিকে কার্টেজেনা বন্দরে বরকুম নামের আরেকটি জাহাজকে শুক্রবার (১৭ মে) নোঙর করে। এ নিয়ে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ ও তার কোয়ালিশন দল সুমার পার্টির মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়।
ফিলিস্তিনপন্থীরা বলছেন, বরকুম জাহাজে করে ইসরায়েলের জন্য অস্ত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তবে স্পেন সরকার বলছে, ওই জাহাজে চেক প্রজাতন্ত্রের জন্য সামরিক মালামাল নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এই জাহাজটি নোঙর করার বিরোধিতা করে সুমার পার্টি।
গাজায় ইসরায়েলি হামলা শুরুর পর থেকেই এর বিরোধিতা করছে স্পেন। ইউরোপিয়ান এই দেশটি এই সংকট সমাধানে ফিলস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য কাজ করছে। গাজায় হামলা চালানোর পরই ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করে দেয় স্পেন।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের বিভিন্ন বসতিতে হামলা চালায় হামাসের যোদ্ধারা। সে সময় গাজার সীমান্তে চলছিল নোভা মিউজিক ফেস্টিভাল। হামাসের হামলায় ওই ফেস্টিভালে ৩৫০ জন প্রাণ হারান। ওইদিন হামাসের হামলায় সব মিলিয়ে ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিকরা নিহত হন।
পরে হামাসের হামলার পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ৩৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি এই হামলায় নিহত হয়েছে, যাদের এক তৃতীয়াংশই শিশু।