
রাহুল গান্ধী। ফাইল ছবি
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের পঞ্চম দফায় আজ সোমবার (২০ মে) ছয় রাজ্য ও দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৪৯টি আসনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ দিন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা রাহুল গান্ধীর ভাগ্যও নির্ধারিত হবে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায়, পঞ্চম দফা ভোট গ্রহণের মধ্য দিয়ে ভারতের লোকসভার ৪২৮ আসনের ভোট গ্রহণ শেষ হবে। বাকি দুই দফায় ১১৫ আসনে ভোট গ্রহণ হবে। আজ যেসব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভোট হবে, তার মধ্যে আছে ঝাড়খণ্ডের তিনটি, উড়িষ্যার পাঁচটি, উত্তর প্রদেশের ১৪টি, বিহারের পাঁচটি, মহারাষ্ট্রের ১৩টি, পশ্চিমবঙ্গের সাতটি, লাদাখের একমাত্র আসন এবং জম্মু-কাশ্মীরের একটি। ষষ্ঠ দফার ভোট গ্রহণ আগামী ২৫ মে এবং ১ জুন সপ্তম ও শেষ দফার ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ফলাফল ঘোষণা করা হবে ৪ জুন।
সোমবার ভোট হওয়া এ আসনগুলোর মধ্যে রয়েছে– উত্তর প্রদেশের আমেথি ও রায়বারেলি। এ দুই আসনের সঙ্গে ভারতের নেহরু-গান্ধী পরিবারের সম্মান জড়িত। এগুলো ‘কংগ্রেসের ঘাঁটি’ হিসেবে পরিচিত হলেও গত নির্বাচনে আমেথি থেকে পরাজিত হয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। এবার তিনি রায়বারেলি থেকে লড়ছেন। ২০১৯ সালে উত্তর প্রদেশজুড়ে যখন ‘গেরুয়া ঝড়’ চলছিল, তখনও ওই আসনে রাহুলের মা সোনিয়া গান্ধী জয়ী হয়েছিলেন।
এ দুই আসন নিয়ে বিজেপিরও আগ্রহের শেষ নেই। এগুলোতে পরাজিত করতে পারলে কংগ্রেসকে নানাভাবে আক্রমণের সুযোগ পাবে দলটি। পাশাপাশি তারা দেখাতে পারবে– ভারতে কেবল বিজেপিরই ঝড় চলছে, কংগ্রেস কোথাও নেই। ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহসহ বিজেপির শীর্ষ নেতারা আমেথি ও রায়বারেলিতে গিয়ে দলের প্রার্থীদের পক্ষে ব্যাপক প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। সম্প্রতি এক জনসভায় অমিত শাহ ভোটারদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা আমেথি ও রায়বারেলিতে বিজেপিকে জিতিয়ে দিন, তাহলে এমনিতেই আসন ৪০০ পার হয়ে যাবে। আমেথিতে বিজেপি প্রার্থী স্মৃতি ইরানির পক্ষে তিনি প্রচারণা চালান।
অন্যদিকে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী আমেথিতে প্রচারণা চালাচ্ছেন প্রার্থী কিশোরী লাল শর্মার পক্ষে। প্রবীণ এ রাজনীতিক স্থানীয়ভাবে পরিচিত মুখ এবং বেশ জনপ্রিয়ও। এ কারণে স্মৃতি ইরানির জন্য জয় সহজ হবে বলে মনে করা হচ্ছে না। রায়বারেলিতে প্রিয়াঙ্কা তাঁর ভাই রাহুল গান্ধীর জন্য প্রচারে অংশ নিচ্ছেন। সভা-সমাবেশ ও র্যালিতে ঘাম ঝরাচ্ছেন।
বসে নেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। গতকাল রোববার পশ্চিমবঙ্গে তিনি তিনটি সভা করেছেন। এর মধ্যে প্রথম দুটি সভা হয় পুরুলিয়া ও বিষ্ণুপুরে। তৃতীয় সভাটি করেন মেদিনীপুরে। সেখানে এবার দলের বিদায়ী সংসদ সদস্য দিলীপ ঘোষের পরিবর্তে অগ্নিমিত্রা পালকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। এসব সভায় তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ করে মোদি বলেন, হিন্দুদের আক্রমণ করছে তৃণমূল। তিনি বলেন, অনুপ্রবেশ বাংলার জন্য বড় বিপদ। অনুপ্রবেশকারীদের জন্য ভুয়া রেশন কার্ড, ভোটার কার্ড তৈরি করে তৃণমূল। তৃণমূলের বিরোধিতা সত্ত্বেও সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) চালু হবে বলে খড়্গপুরের সভা থেকে জানান মোদি।
ষষ্ঠ দফার ভোট প্রচারে পশ্চিমবঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির আজ সোমবারও কয়েকটি সভা করার কথা রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রকাশিত গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ভোট ঘোষণার পর থেকে একাধিকবার মোদি রাজ্যটিতে আসেন। প্রতিটি দফায় প্রচার চালাতে অন্তত একবার করে ঘুরে গেছেন।
উত্তর প্রদেশে বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের নেতা সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদব ও কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী র্যালি করেছেন। রোববার প্রয়াগরাজ এলাকায় ওই র্যালিতে বিপুল সংখ্যক মানুষের ঢল নামে। হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, পদদলিত হওয়ার ঝুঁকি সৃষ্টি হলে দুই নেতা র্যালি ত্যাগ করেন।