
লোকসভা নির্বাচন। প্রতীকী ছবি
বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতন্ত্রের দেশ ভারতের ‘লোকসভা’ নির্বাচনের ভোট শেষ। এখন ফলাফলের অপেক্ষায় দেশটির কোটি কোটি মানুষের পাশাপাশি গোটা বিশ্ব। সাত ধাপের নির্বাচন শেষে আগামীকাল মঙ্গলবার (৪ জুন) ঘোষণা করা হবে ভোটের ফল। জানা যাবে দিল্লির মসনদে বসতে যাচ্ছে কোন জোট।
ভারতে ১৯ এপ্রিল শুরু হয় প্রথম দফার ভোট আর ১ জুন সপ্তম দফা দিয়ে শেষ হয়েছে বিশাল এ কর্মযজ্ঞ। ফলাফল ঘোষণার আগেই বিজেপির বিজয় উদযাপনের প্রস্তুতির খবর পাওয়া গেছে। কারণ, দেশটির প্রায় সব ক’টি বুথ ফেরত জরিপে নরেন্দ্র মোদীর জোটকে নিরঙ্কুশ বিজয়ের পূর্বাভাস দিয়েছে।
শেষ দফার পরই বিভিন্ন গণমাধ্যম বুথ ফেরত জরিপ প্রকাশ করেছে। সেখানে ক্ষমতাসীন বিজেপির নেতৃত্ব এনডিএ জোটের এগিয়ে যাওয়ার আভাস দেয়া হয়েছে। আর দেশটির বিভিন্ন গণমাধ্যমে যেসব বুথফেরত জরিপ প্রকাশ করা হয়েছে, তাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে বিরোধী কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোট।
তারা এই জরিপকে ‘ভুয়া’ ও ‘প্রতারণামূলক’ বলে মন্তব্য করেছে। এসব জরিপের প্রায় প্রতিটিতেই বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদি তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হবেন এবং ক্ষমতাসীন এনডিএ জোট ৩৫০টির বেশি আসন পাবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। তবে ইন্ডিয়া জোট মনে করছে, এবার তারাই ক্ষমতায় যাচ্ছে।
লোকসভা নির্বাচনে ৬৪ কোটি ২০ লাখ মানুষ ভোট দিয়েছেন। ভারতের প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার জানান, ভোটদাতার সংখ্যার দিক থেকে এটা একটা বিশ্ব রেকর্ড। বিশ্বের কোনো দেশে কখনো এত বেশি মানুষ ভোট দেননি। আর মোট ভোটারের মধ্যে ৩১ কোটি ২০ লাখই নারী।
রাজীব কুমার বলেন, এবার পুনর্নির্বাচন বেশি হয়নি। মাত্র ৩৯টি জায়গায় পুনর্নির্বাচন হয়েছে। এর মধ্যে ২৫টি হয়েছে অরুণাচল ও মণিপুরে। বাকি দেশে ১৫টি জায়গায় পুনর্নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলে তিনি দাবি করে তিনি আরও বলেন, আশা করছি ভোটের ফল প্রকাশও নির্বিঘ্ন হবে।
কারচুপির সম্ভাবনা নাকচ ভারতের সিইসি
ভারতের সিইসি জানান, ভোটগণনার কাজেও সব ধরনের সতর্কতা নেয়া হয়েছে। রবিবার বেশ কয়েকটি দলের প্রতিনিধি কমিশনের সাথে দেখা করে কিছু দাবি জানিয়েছে, সবগুলো মেনে নেয়া হয়েছে। এবার নির্বাচনে দেড় কোটি নির্বাচন ও নিরাপত্তা কর্মী কাজ করেছেন। ১৩৫টি বিশেষ ট্রেন চালানো হয়েছে।
রাজীব কুমার জানান, ভোট-পরবর্তী সহিংসতার কথা মাথায় রেখে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি পশ্চিমবঙ্গ, অন্ধ্র, উত্তর প্রদেশের মতো কয়েকটি রাজ্যে ফলাফল ঘোষণার পরেও কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। তারা রাজ্য সরকারের অধীনে থাকবে। তারা সেখানে দরকার হলে নিশ্চতভাবেই সহিংসতা থামাবে।
তিনি বলেন, এবার ১০ লাখ ৫০ হাজারের বেশি বুথ রয়েছে। ৩০ থেকে ৩৫ লাখ পোলিং এজেন্ট সেখানে থাকবেন। নজরদারি রাখার জন্য দল থাকবে। যারা গণনা করবেন তারা থাকবেন। সিসিটিভি ক্যামেরা থাকবে। মানুষের ভুল হলেও হতে পারে, তবে ভোটগণনায় কারচুপির সম্ভাবনা বিন্দুমাত্র নেই।
৫৪৩ আসনের লোকসভায় ‘ম্যাজিক ফিগার’ হচ্ছে ২৭২। অর্থাৎ, যে দল ২৭২টি আসন পাবে, সে দলই দিল্লির সরকার গঠন করতে পারবে। ২০১৯ সালে বিজেপি একাই পেয়েছিল ৩০৩টি আসন। এনডিএ পেয়েছিলো ৩৩০ এর বেশি আসন। এবার সেই রেকর্ড ভাঙবে বলে বুথ ফেরত সমীক্ষার ইঙ্গিত মিলেছে।